শনিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর | শিরোনাম | সর্বশেষ » গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে দু-বোনকে ধর্ষণ।। লালমোহন বিডিনিউজ
গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে দু-বোনকে ধর্ষণ।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, নাটোর প্রতিনিধি : নাটোর জেলার বাগাতিপাড়ায় গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে এক ভণ্ড কবিরাজ । দুই বোনের মধ্যে একজনকে বিয়ের নাটক করে এবং অপর জনকে শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার নামে ধর্ষণ করে ওই কবিরাজ।
শনিবার ২৪ নভেম্বর সকালে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই কবিরাজ ও তার সহযোগীকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে।
ভণ্ড ওই কবিরাজ নাটোরের লালপুর উপজেলার বড়বড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ইয়ার উদ্দিন মোল্লার ছেলে নজরুল ইসলাম ওরফে নজরুল ফকির (৫০) ও তার সহযোগী একই উপজেলার আব্দুলপুর পশ্চিমপাড়ার আরশেদ আলীর ছেলে আব্দুস সালাম (৩৭)।
নির্যাতিত পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে কবিরাজের সহযোগী আব্দুস সালাম তার প্রতিবন্ধী ফুপাত বোনের শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করানোর জন্য প্রথম কবিরাজ নজরুলকে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড়ে ফুপুর বাড়িতে নিয়ে আসে।
সেসময় টোটকা চিকিৎসা দেয়ার ফাঁকে কবিরাজের কুদৃষ্টি পড়ে ওই প্রতিবন্ধীর মেয়ের মেজ বোনের ওপর। এরপরই গুপ্তধনের ফাঁদ পাতে নজরুল।
নজরুল প্রতিবন্ধী ওই নারীর পরিবারকে জানায়, তাদের ঘরের মেঝেতে মাটির নিচে দুইশ কোটি টাকা মূল্যের গুপ্তধন রয়েছে। ওই সম্পদ শুধুমাত্র সেই উদ্ধার করে দিতে পারবে। এরপর ওই মেঝেতে আসন তৈরি করে। সেখানে ধ্যানের ভান করে নিয়মিত নাটক চালিয়ে যেতে থাকে কবিরাজ নজরুল। ধ্যানের সময় গভীর রাতে জ্বালিয়ে রাখা হত আগরবাতি, মোমবাতি। আর প্রতিবন্ধী নারীর পুরো পরিবারের সদস্যদের বসিয়ে রাখা হতো আসনের সামনে। সেখানে তৈরি হতো তাবিজ। সেই তাবিজ দিয়েই চলত শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা। এভাবে চলে বছর খানেক।
সুযোগ বুঝে শর্ত আরোপ করে কবিরাজ। মেজ মেয়েকে তার সঙ্গে বিয়ে দিলেই কেবল পেতে পারে গুপ্তধন। এমন আরও কৌশল অবলম্বন করে বাবাহারা মেয়েকে বিয়ে করে সে।
কিন্তু বিয়ের মাস দুয়েক পর কবিরাজের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রতিবন্ধী মেয়েটির ওপরও। শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার নামে কবিরাজের সঙ্গে রাত যাপনে বাধ্য করে মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে। সকালে পরিবারের সবাই জানতে পারে তাকে উপর্যপুরি ধর্ষণের ভয়ানক ঘটনা।
এদিকে এসব ভণ্ডামির খবর লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে শনিবার সকালে চিকিৎসার নামে আসনে বসার খবর টের পেয়ে এলাকাবাসী বাড়িটি ঘিরে ফেলে।
এলাকাবাসী তাকে মাটি খুঁড়ে গুপ্তধন বের করতে বলে। এ সময় ভণ্ড কবিরাজ নজরুল নিজেই তার আসনের সামনে ঘরের মেঝেতে মাটি খুঁড়তে থাকে। কবর সমান মাটি খুঁড়েও কোনো গুপ্তধন না পেয়ে এলাকাবাসী তাকে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে আটকে রাখে।
জানতে পেরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইয়াসিন আলী পুলিশে খবর দেয়। পরে বাগাতিপাড়া মডেল থানা পুলিশ ভণ্ড নজরুল ফকির ও তার সহযোগী আব্দুস সালামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এখনও কেউ মামলা করেনি। মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।