বুধবার, ৪ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর | ভোলা | মুক্তমত | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলায় মাদক গডফাদাররা কেন ধরা ছোঁয়ার বাহিরে– সফিকুল ইসলাম।। লালমোহন বিডিনিউজ
ভোলায় মাদক গডফাদাররা কেন ধরা ছোঁয়ার বাহিরে– সফিকুল ইসলাম।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, ভোলা প্রতিনিধি : মাদকসেবী, বিক্রেতাসহ মাদকের গডফাদারদের মূল উৎপাটনে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে সংবাদকর্মীগণসহ সকল সচেতন নাগরিকদেরকেও।
বুধবার (৪জুলাই) ভোলায় এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ভোলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভোলা জেলা নাগরিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আ’লীগের ত্রান ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, ভোলা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সফিকুল ইসলাম
এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সংবাদকর্মীরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে কিন্তু সাংবাদিকদের বিপদে কেউ এগিয়ে আসে না, তাই সকল সাংবাদিক ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আর সাংবাদিকদের বিপদে প্রশাসনকে ও এগিয়ে আসতে হবে।
মাদকের চলমান অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোলার পুলিশ সুপার মাদকের বিরুদ্ধে একের পর এক সফল অভিযানের ফলে ভোলার মাদক ব্যাবসায়ীদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অভিযানে এখন পর্যন্ত অনেক মাদক সেবী ও মাদক পরিবহনকারী গ্রেফতার হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভোলার এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মোক্তার হোসেনকে অভিনন্দন জানিয়ে সফিকুল ইসলাম বলেন, ভোলায় পুলিশের চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে বাহক এবং মাদক সেবনকারী পর্যাপ্ত পরিমানে গ্রেফতার হলেও কেন একজনের বেশি চিহ্নিত গডফাদার কে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ?
তিনি পুলিশ সুপারের বিভিন্ন সূত্রকে দায়ী করে বলেন, ভোলার পুলিশ সুপার মাদককে সমূলে উৎপাটন করতে চাইলেও যারা পুলিশ সুপারের অধিনস্থ তদন্তকারী কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের সদিচ্ছা ও সঠিক তদন্তের অভাবে পার পেয়ে যাচ্ছে মাদকের মুল হোতারা।
পরিশেষে তিনি কলম্বিয়ার মাদক সম্রাট পাভলো স্কবারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে পুলিশ সুপাবের উদ্দেশ্যে বলেন, কলম্বিয়ার মত ভোলার পুলিশ সুপার ডিবি আনসার, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে একটি স্পেশাল টিম তৈরী করে তাদের সমন্বিত অভিযানই কেবল ভোলার মাদকের গডফাদারদের নির্মূল করতে সক্ষম হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও ১৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে একটি তালিকা প্রকাশ করে। এ তালিকায় ভোলায় হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও পেথিডিনসহ মাদক কারবারির সংখ্যা ১৫৪। তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং ডজনখানেক বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাদের মধ্যে ২৬ জন ফেনসিডিল, সাতজন হেরোইন এবং বাকিরা ইয়াবা ও গাঁজা কারবারে যুক্ত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় এসব কারবারিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কোনো না কোনো রাজনীতির মতাদর্শে বিশ্বাসী। তাদের মধ্যে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ছেলে, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল ও তরুণলীগের নেতারা রয়েছেন। জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের দিক দিয়ে চরফ্যাশন উপজেলায় মাদক কারবারির সংখ্যা বেশি। তবে মাদক কারবারির সংখ্যায় ভোলা সদর উপজেলা এগিয়ে। তালিকায় সদরে ৫৬, চরফ্যাশনে ২৮, মনপুরায় ২০, তজুমদ্দিনে ১০, লালমোহনে ১৮, দৌলতখানে পাঁচ ও বোরহানউদ্দীনে ১৭ জনের নাম রয়েছ।
ভোলার বর্তমান মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনাকারী আপোষহীন পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেনের চলমান এ অভিযানে ভোলার চিহ্নত এ ব্যবসায়ীরা বেঁচে গেলে ভয়ংকর বিপদে পরবে ভোলার প্রতিটি পরিবার। কারণ মাদক একটি পরিবারে কোনক্রমে ঢুকলে ওই পরিবার যতই সম্ভ্রান্ত ও অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী হোক না কেন ও তাদের ধ্বংশ হবার আশঙ্কাও জানিয়েছেন সফিকুল ইসলাম।