রবিবার, ৪ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর | তজুমদ্দিন | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার চর মোজাম্মেলে হেলাল বাহিনীর রাজত্ব, আতংকে চরবাসী।। লালমোহন বিডিনিউজ
ভোলার চর মোজাম্মেলে হেলাল বাহিনীর রাজত্ব, আতংকে চরবাসী।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার তজুমদ্দিনের চর মোজাম্মেল চরবাসীর জন্য আতংক আর উৎকন্ঠার এ জনপদের নাম চর মোজাম্মেল। দস্যুদের অত্যাচারে ঠিকমত বসবাস করতে পারছেন না চরের মানুষ। একের পর এক চাঁদাবাজি, দস্যুতা, অপহরণ আর নির্যাতন ভয়ে চর ছেড়ে চলে যাচ্ছে অনেকে। বিশেষ করে একযোগে ৯ জন কৃষককে অপহরণ এবং মারধরের ঘটনায় চরবাসী আরো বেশী শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
কয়েকদিন আগেও যে চরে কৃষক চাষাবাদ করতেন, রাখালরা গরু চড়াতের এবং জেলেরা নিরাপদে মাছ শিকার করতেন। সেই চর এখন আতংক আর উৎকন্ঠার জনপদে পরিণত হয়েছে। জলদস্যু ও ভুমিদস্যু বাহিনীর উপদ্রপে চরের মানুষ এখন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
তজুমদ্দিনে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মেঘনার উপকূলের একটি অংশ চর মোজাম্মেল। ৮ হাজার মানুষের বসতির এ চরে নতুন আতংক হেলাল দর্জি বাহিনী। এ বাহিনীর সদস্য একের পর এক ত্রাস সৃষ্টি করে চর দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
ভুমদস্যু ও জলদস্যু বাহিনীর প্রধান হেলালকে গ্রেপ্তার ও চরে শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবীতে শনিবার (৩ মার্চ) বিকালে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে চর মোজাম্মেলবাসী। এ সময় চর রক্ষায় তারা প্রশানের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
দস্যু হেলাল বাহিনীর হাতে নির্যাতন এবং বন্ধি দশা থেকে মুক্তি পেয়ে এখনো আঁতকে উঠেন নিরব, সাহাবুদ্দিন, মনির, আনোয়ার, দুলাল, হোসেন, নুরুল হক ও শরীফসহ ৯ কৃষক। এদের মধ্যে সাহাবুদ্দিনের কান কেটে দেয় হেলাল বাহিনী।
কান্না জড়িত কন্ঠে সাহাবুদ্দিন বলেন, দস্যুরা আমাদের চর মোজাম্মেল থেকে অপহরন করে নিয়ে যায়, সেখানে ১২ ঘন্টা আটকে রেখে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেধরক মারধর করে। এক পর্যায়ে কান কেটে দেয়।
দস্যুদের হামলায় তজমুদ্দিন হাসপাতালে বেডে আহত মনির পাটোয়াররী অবস্থায়ও শংকাজনক। সে জানায়, চর থাকতে হলে চাঁদা দিতে হবে অন্য থায় চর ছেড়ে যেতে হবে বলে হুমকি দেয় হেলাল বাহিনী।
চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় বাম হাতে পেরেক ঠুকিয়ে নির্মম নির্যাতন করে সাধারন কৃষক ফরিদকে।
সে জানায়, চরে দস্যুতা ও চাদাবাজি করছে হেলাল বাহিনী। চরের বাসিন্দা আ: রবের স্ত্রী বিবি মরিয়ম জানান, দস্যুতের আত্যাচারে রাতে ঘুমাতে পারিনা। নারী ও পুরুষরা রাতে জেগে থাকি।
চরের বাসিন্দা দুলাল ও আ: রব জানান, ৫ বছর ধরে চরে কৃষি কাজ করে আসছি, কিন্তু কখনো এমন অন্যায় হয়নি। এখন হেলাল বাহিনীর অত্যাচারে কেউ শান্তিতে বসবাস করতে পারছেনা, আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি, যেন খুব দ্রুত চরে শান্তি ফিরে আসে।
চাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফকরুল আলম জাহাঙ্গির বলেন, পুরো চরে হেলাল দস্যুতা সৃষ্টি করে ত্রাস সৃষ্টি করে চলছে, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, এর আগেও পুলিশের ক্রোস ফায়ারের তালিকায় ছিলো জলদস্যু হেলাল। চরের মানুষের শান্তি নষ্ট করছে এ বাহিনীর সদস্যরা। তাই তাকে গ্রেপ্তারের দাবী জানাচ্ছি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে হেলাল দর্জি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, আমি এর সাথে জড়িত নই, তবে আমাকে চর থেকে উচ্ছেদ করতে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আমাদের লোকজনকে পিটিয়ে আহত করেছে।
এব্যাপারে তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন জানান, হেলালসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে তজুমদ্দিন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, পুলিশ এ ঘটনায় এখণ পর্যন্ত ৯ জনকে আটক করেছে, পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে, খুব শিগ্রই হেলালকে গ্রেপ্তার করা হবে।