বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর | ভোলা | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » অবশেষে বদলী হলেন লালমোহন থানার ওসি হুমায়ুন, ঘুষ দুর্ণীতি নির্যাতন যার বড় গুণ॥লালমোহন বিডিনিউজ
অবশেষে বদলী হলেন লালমোহন থানার ওসি হুমায়ুন, ঘুষ দুর্ণীতি নির্যাতন যার বড় গুণ॥লালমোহন বিডিনিউজ
বিডিনিউজ, লালমোহন প্রতিনিধি : অবশেষে লালমোহন থানার ঘুষ, দুর্ণীতি, নির্যাতন নিয়ে বহুল আলোচিত ও ‘স্বঘোষিত শ্রেষ্ঠ ওসি’ হুমায়ুন কবীরকে বদলী করা হয়েছে। তার বদলী সংবাদে লালমোহনের সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বদলীর পূর্বে লালমোহন থানার কয়েক লক্ষ টাকার গাছ বিনা টেন্ডারে কেটে নিজের জন্য ফার্ণিচার বানান ওসি হুমায়ুন। তৈরিকৃত অনেক ফার্ণিচার কয়েকদফায় নিজের বাড়িতে পাঠিয়েছেন।
বুধবার বদলীর আদেশ শুনে ট্রাক ভরে বাকী ফার্ণিচার রাতেই পার করার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।
থানার গাছ লুট ছাড়া ও বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে দুর্ব্যবহার, অকারণে ধরে এনে নির্যাতন নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় সহ নানান হয়রানী করার অভিযোগ ও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি ৯৫ জন ওসি বিএনপি-জামায়াতের আমলে নিয়োগ পান এবং এখনো তাদের সাথে সখ্যতা রয়েছে বলে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সূত্র দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই তালিকায় লালমোহন থানার ওসি হুমায়ুন কবীরের নামও রয়েছে। চট্টগ্রামে থাকার সময় বিএনপির এক শীর্ষ নেতার সুপারীশে ওসি হুমায়ুনের চাকরী হয় বলেও সূত্র থেকে জানা গেছে।
শুধু লালমোহনের সাধারণ মানুষের সাথেই নয়, সাংবাদিকদের সাথে ও সবসময় দুবব্যবহার, নিজের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করলে বিনা অভিযোগে থানায় ধরে নিয়ে আটক রাখাসহ নানান অভিযোগে অভিযুক্ত ওসি হুমায়ুন কবীর ।
২০১৬ সালে লালমোহন থানায় বদলী হয়ে আসার পুর্বে তজুমদ্দিন থানায় থেকে এক পরিবারকে মিথ্যা মামলায় হয়রানী করার অভিযোগে ক্লোজ হয়ে ভোলা পুলিশ লাইনে যায় ওসি হুমায়ুন।
লালমোহন থানায় আসার পর তার ঘুষ গ্রহণ, সাধারণ মানুষকে থানার মধ্যে আটক রেখে নির্যাতন, টাকার বিনিময়ে আসামী ছেড়ে দেয়া নিয়ে টিভি চ্যানেল ও কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করা হলে ও অদৃশ্য কারণে তার সেসব অপকর্মের কোন তদন্ত হয়নি কখনো।
নিরীহ লোকদের ধরে এনে ঘুষ আদায়, অনাদায়ে মাদকদ্রব্য দিয়ে মিথ্যে মামলায় জেল হাজতে প্রেরণের অসংখ্য অভিযোগ থাকলে ও তার মিথ্যে মামলায় জড়ানোর ভয়ে প্রকাশ্যে আসতে চায়না অনেক ভুক্তভোগী।
লালমোহনবাসী তার জুলুম ও অত্যাচারে অতিষ্ট থাকলে ও সবসময় নিজেকে দেশের শ্রেষ্ঠ ১০ জন ওসির মধ্যে একজন দাবী করতেন তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে লালমোহন ছেড়ে যাবেন না বলে ও দাম্ভিকতার সাথে ঘোষণা দেন ওসি হুমায়ুন কবির।
অবশেষে বুধবার তাকে বরগুনা পুলিশ লাইনে বদলী করা হয়েছে বলে পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বদলি হওয়ার পর রাতে ট্রাক ভরে ফার্ণিচার ও মালামাল উঠাতে দেখা গেছে। এসব ফার্ণিচার চট্টগ্রামে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এর আগেও তার বদলীর আদেশ হলে তা ঠেকিয়েছেন বলে একটি সূত্র জানায়।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক লালমোহন থানার একাধিক অফিসার জানান, তার কথা মতো কাজ না করায় এ পর্যন্ত প্রায় ১০/১২ জন অফিসার ও একাধিক কনস্টেবলকে অন্যত্র বদলী করা হয়েছে। তাদের বদলী করে নিজের এলাকা পটুয়াখালী ও বাউফলের এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলদের এনে নিজের স্বার্থ হাসিল করতেন তিনি। তাদের দিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করান ওসি হুমায়ুন কবীর। তার প্রধান সঙ্গী এসআই রেজাউলও ওসির এলাকার বলে জানা গেছে। এসআই রেজাউল লালমোহন থানায় প্রায় ৩ বছর থাকার পর বোরহানউদ্দিন থানায় বদলী হয়। সেখান থেকে মাত্র ২ মাসের মাথায় আবারো তাকে লালমোহন থানায় তদবীর করে নিয়ে আসে ওসি হুমায়ুন। এছাড়া তার এলাকার এএসআই জাহের, কিবরিয়াসহ বেশ কয়েকজনকে থানার গাছ ভাগ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ওসির বক্তব্য নিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, থানার কোন গাছ কাটেননি। বদলীর বিষয়টিও তিনি জানেননা বলে জানান।
লালমোহন সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম মিজানুর রহমান এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।