বুধবার, ১ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় | রাজনীতি | শিরোনাম | সর্বশেষ » খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের পাশে পেট্রোল বোমা হামলা, দুটি বাসে আগুন ।। লালমোহন বিডিনিউজ
খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের পাশে পেট্রোল বোমা হামলা, দুটি বাসে আগুন ।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ : রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে কক্সবাজার থেকে ঢাকা ফেরার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে খালেদা জিয়ার বহরের কাছে দুটি বাসে পেট্রোল বোমা মেরেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ফেনী সার্কিট হাউজের কাছে মহিপাল ফিলিং স্টেশনের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আগুনের ঘটনার পর পর রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেয়া সাধারণ মানুষ হামলাকারীদের ধাওয়া দেয়। তবে খালেদা জিয়ার গাড়ি নিরাপদে ওই এলাকা অতিক্রম করেছে।
ঘটনার পরপরই সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়ে যায় এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা পেট্রোল বোমা হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ফেনীর মহিপাল অতিক্রম করছিল। খালেদা জিয়ার গাড়িসহ বহরের ৩০-৩৫টি গাড়ি পেরিয়ে যাওয়ার পর সেখানে একটি পেট্রোল পাম্পের ৩০০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে বাস দুটিতে আগুন ধরে যায়। তবে ওই বাস দুটিতে কেউ ছিল না বলে জানা গেছে। বাস দুইটি নজির আহমদ সিএনজি স্ট্যান্ডের সামনে স্ট্যাণ্ড করা ছিল। এর একটি সুগন্ধ্যা পরিবহনের আরেকটি চৌদ্দগ্রাম ট্রান্সপোর্টের। গাড়ি দুইটির অংশ বিশেষ পুড়ে গেছে।
চৌদ্দগ্রাম ট্রান্সপোর্টের বাসটির চালক আবদুল মালেক জানান, কয়েকজন যুবক এসে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে চলে যায়।
ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফিরতি পথে খালেদা জিয়ার ফেনী সার্কিট হাউজে যাত্রাবিরতি করার কথা থাকলেও রওনা হতে দেরি হওয়ায় সেই পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়। তার বহর ফেনী পার হওয়ার সময় স্থানীয় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকশ নেতাকর্মী মোটর সাইকেল নিয়ে বিএনপিনেত্রীকে এগিয়ে দেয়। খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীদের গাড়িবহর ঢাকার পথে রয়েছে।
ফেনী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার কবীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দাঁড়িয়ে থাকা বাস দুটিতে কোনো যাত্রী না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ সদস্য বলেন, আমরা একটু পেছনে ছিলাম। ঘটনার কয়েক মিনিট পরেই আমরা স্পটে ছুটে যাই। বাস দুটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী জানান, কারা ঘটিয়েছে। তা তদন্ত করে বের করা হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হামলার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফেনী পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে। যাওয়ার পথে যারা হামলা চালিয়েছিল আজ তারাই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার বহরের পেছনের গাড়িতে থাকা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, চেয়ারপারসনের গাড়িবহর পার হওয়ার কিছুক্ষণ পর উল্টো পাশে দুটি বাসে আগুন জ্বলতে দেখি। এ সময় বহরে থাকা কিছু নেতাকর্মী দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা সিনিয়র নেতারা গাড়ি থেকে নেমে ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক পুরো রাস্তা অবরোধ করে ফেলি। এ সময় আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে নিরাপদেই ঢাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন বলেনও জানান বিএনপির এই নেতা।
চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ম্যাডামকে বহনকারী গাড়িটি মহিপাল ব্রিজ অতিক্রম করার পরই দু’টি বাসে আগুন লাগানো হয়েছে।