
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর | তজুমদ্দিন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার তজুমদ্দিনে নির্মাণের তিন মাসেই ভেঙে গেল ত্রাণের ব্রীজ! লালমোহন বিডিনিউজ
ভোলার তজুমদ্দিনে নির্মাণের তিন মাসেই ভেঙে গেল ত্রাণের ব্রীজ! লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, তজুমদ্দিন প্রতিনিধি: ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কতৃক ব্রীজ নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ৫৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪১৭ টাকা বরাদ্দের ব্রীজ ও ২০১৫-১৬ সালের ৩২ লাখ ৩৬ হাজার ১৬৮টাকার বরাদ্দের ব্রীজসহ মোট ৮৯ লাখ টাকার দু’টি ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ার অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও’র) অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে উপজেলায় ১১ ট ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। ৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রীজ গুলো নির্মাণে ব্যয় হয়। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৭টি ব্রীজের ১ কোটি ৯৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৩২ টাকার বরাদ্দের কাজ করা হয়েছে।
তজুমদ্দিন উপজেলার মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের নির্মাণকৃত ব্রীজ গুলো হল, নতুন সেলিম বাজারের দক্ষিণ পশ্চিম পাশের খালের ওপর ব্রীজের বরাদ্দ ৪০ লাখ ৯০ হাজার ৪০০ টাকা, চর জহির উদ্দিন ৩নং ফরেস্ট অফিসের পশ্চিম পাশে জহুরা আবাসনের খালের ওপর ব্রীজ ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৪৬১ টাকা, ৪নং ওয়ার্ড সোলেমান মেম্বার বাড়ী হইতে পূর্ব দিকে ফরাজী বাড়ী পর্যন্ত রাস্তায় সুলতানের বাড়ীর বাড়ীর পূর্ব পাশে খালের ওপর ব্রীজ ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৬৯ টাকা, চরজহির উদ্দিন রেডক্রিসেন্ট বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে খালের ওপর ব্রীজ ২৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৩৭ টাকা, চরমোজাম্মেল মুক্তিযোদ্ধা বাজারের পশ্চিম পাশে মাওলানা খালের ওপর ব্রীজ ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৭ টাকা, ২নং ওয়ার্ডের সিরাজ মিয়ার বাড়ীর নিকট মধকাটার খালের ওপর ব্রীজ ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৪৬১ টাকা, ১নং ওয়ার্ডের ইয়াছিন মিঝির বাড়ির দরজা জনতা খালের ওপর ব্রীজ ২৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৮ টাকা, চর কোড়ালমারা ৯নং ওয়ার্ডের মেহের জানের বাড়ীর পাশে বেতুয়া খালের ওপর ব্রীজ ৪০ লাখ ৯০ হাজার ৪০০ াকা, শম্ভুপুর ৯নং ওয়ার্ড কোড়ালমারা গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন খালের ওপর ব্রীজ ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৪৫২। শম্ভুপুর ইউনিয়নের দফাদার বাড়ীর নিকট বেতুয়া খালের ওপর ব্রীজ ৪০ লাখ ৯০ হাজার ৪০০ টাকা।
তার মধ্যে উপজেলার সর্বোচ্চ বড় কাজ হল ৬নং ওয়ার্ডের অজিউল্যা মাঝির কিল্লার খালের ওপর ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৪১৭ টাকার ব্রীজ। এই ব্রীজের ঠিকাদার রয়েছেন জিয়াউর রহমান ওরফে আবদুর রহমান। মেসার্স জিয়াউর রহমান নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ব্রীজটি ১৫দিন পূর্বে ভেঙ্গে যায়।
২০১৫-১৬ অর্থ বছরের চাঁদপুর চরমোজাম্মেল দুলাল বাজার আশ্রয়ন প্রকল্প সংযোগ সড়কের খালের ওপর নির্মিত ৩২ লাখ ৩৬ হাজার ১৬৮ টাকার ব্রীজটিও গত পরশু ২৪ সেপ্টেম্বর ভেঙ্গে গেছে। এই কাজের ঠিকাদার ছিলেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন দুলাল।
চাদঁপুর ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অজিউল্যাহ মাঝি জানান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন দুলাল করেছে দুলালবাজার ব্রীজ তা গত রবিবারে ২৪ শে সেপ্টেম্বর ভেঙ্গেছে। আর কিল্লার ওপর ব্রীজ ১৫দিন আগে ভেঙ্গেছে। খালের উপর ছোট একটি কালভার্ট ভেঙ্গে গেছে। এই সকল ব্রীজের খাম্মা দিয়ে না করায় ভেঙ্গে যায়।
নিয়ম রয়েছে ১০১৬-১৭ অর্থ বছরের কাজ ৩০ জুন/১৭ তারিখের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
এ ব্যপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদ খান বলেন, এনকল ব্রীজের বরাদ্দের মধ্যে কাজের বিল ৩০ ভাগ অর্থাৎ ১৫ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে। বাকী বিল দেয়া হয়নি। ব্রীজ ভেঙ্গে পড়েছে। তবে পূনঃরায় ব্রীজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নচেৎ বাকী বিল পাবেনা। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের ব্রীজ ভাঙ্গার বিষয়টি প্রকল্প কর্মকর্তা অস্বীকার করেছেন। তার বিষয়টি জানা নেই বলেও জানান।
এব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর জিয়াউর রহমান বলেন, নতুন মাটির কারণে নিচ থেকে মাটি সরে গিয়েছে এই জন্যে ব্রীজ ভেঙ্গে গেছে। ব্রীজ নতুন করে করতে হবে। এমন ঘটনা দৌলখান ও ভোলাতে হয়েছে। তারা বিল উত্তোলন করে নিয়ে গেছে। আমি পুরা বিল নিতে পারিনি। এটার খোঁজ খবর নিয়ে লাভ নেই। ব্রীজত নতুন করে করতে হবে। দুলাল বাজার ২০১৬-১৬ অর্থ বছরের নির্মাণকৃত (আরেক ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজের) ঠিকাদার তজুমদ্দিন সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন দুলালের মুঠোফোনে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এমন দুর্ণীতি ও অনিয়মে পূর্ণ ভাঙ্গা ব্রিজের ছবি তুলে ফেজবুকে দেয়ায় ঠিকাদার কতৃক হুমকির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন চর মোজাম্মেল এলাকার এক বাসিন্দা ।
অপরদিকে এমন দুর্ণীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভোলা ৩ লালমোহন তজুমদ্দিনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি’র দৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী ।