শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » তজুমদ্দিন | শিরোনাম | সর্বশেষ » তজুমদ্দিনে ভারতীয় সিরিয়াল গুলো তরুন প্রজন্মের মাঝে ব্যাপক হারে বিস্তৃত
তজুমদ্দিনে ভারতীয় সিরিয়াল গুলো তরুন প্রজন্মের মাঝে ব্যাপক হারে বিস্তৃত
লালমোহন বিডিনিউজ ,সাদির হোসেন রাহিম, তজুমদ্দিন : সারাদেশ ব্যাপি ভারতীয় সিরিয়াল সংক্রান্ত বিষয়াবলি কেন্দ্র করে প্রতিদিন ঘটে চলেছে জানা-অজানা অসংখ্য ঘটনা। এই সিরিয়াল সংগত কারনে আত্মহত্যা, নির্যাতন, জুলুম সহ পরিবারের মধ্যে আত্ম কলহ সৃষ্টি সহ সম্পর্ক বিনষ্টের খবর আলোকিত হচ্ছে প্রায়। এই ভারতীয় সিরিয়াল গুলো বৃদ্ধ বয়সের পাশাপাশি কোমলমতি শিশু সমাজ বর্তমানে অশ্লিলতার পথে অগ্রগামী হতে কোন অংশে পিছিয়ে নেই। এখানকার নারী সমাজ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর ভারতীয় সিরিয়াল গুলো ব্যাপক হারে বিস্তৃতি বিরাজমান হয়ে চলেছে।
এমনটাই দেখা মিলে সকাল সাড়ে নয়টায় এখানকার দক্ষিন খাসের হাট বাজারের ভিবিন্ন চায়ের দোকান সম্মুখে অসংখ্য তরুন তরুনিদের টিভি দেখার ঢল। এরকম ঘটনা গুলো শুধু এ বাজারেই সীমাবদ্ধ নয়, ঘুরে দেখা যায় ভিবিন্ন জায়গায় গড়ে উঠা দোকান গুলোতে টিভি সেটের সামনে সব বয়সি লোকদের পাশাপাশি তরুন প্রজন্মের ব্যাপক সমাগম খুবই লক্ষনীয়। যেখানে অসংখ্য প্রাথমিক স্তরের কোমলমতি শিক্ষাথীদের ভারতীয় সিরিয়াল কিরনমালা দেখতে জমজমাট ভিড়ের কোলাহল বিরাজমান করছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এ ব্যাপারে অভিবাবকরা অভিযোগ করে বলেন , সকাল সাড়ে আট টায় বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে চলে যায় স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। তাদের কে যদি বলি স্কুলের ক্লাস দশটায়, তখন ছেলে মেয়েরা বলে তাদের শিক্ষকরা তাদেরকে তাড়াতাড়ি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে বলেছে। এ ভাবেই তাদের অভিবাবকদের ভিবিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ছুটে আসে টিভি সেট থাকা কোনো এক দোকানের সামনে। এসে দাড়িয়ে নিষ্পঃলক ভাবে রাস্তা জুড়ে টিভির দিকে তাকিয়ে থাকে। ভিবিন্ন পথচারি ও যানবাহন চালকেরা জানান, অল্প বয়সী এই তরুন শিক্ষার্থীরা রাস্তার মাঝে ভিড় জমিয়ে টিভির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। টিভি চলাকালিন সময়ে রাস্তা দিয়ে চলাচলের অসুবিধা হয়। এ সময় তাদের পিছন থেকে যানবাহন আসে কিনা সে বিষয়ে তাদের মোটেই বোধগম্য থাকেনা।
যার কারনে ভিবিন্ন সময়ে অনেক দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভারতীয় সিরিয়াল গুলো তাদের কাছে খুবই প্রিয় এ কারনে তারা একটি পর্ব ও মিস করতে চায় না। তারা প্রয়োজনে বাড়ি থেকে ভিবিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চলে আসে। যদি কোন সময় বিদ্যুৎ ঘাটতির কারনে রাতে পর্ব দেখা না হয়, সে পর্ব গুলো তারা সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দেখে নেয়। সিরিয়াল দেখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গোলকপুর পোষ্ট ই সেন্টারের কম্পিউটার ট্রেইনার যুবরাজ মজুমদার জানান, বাড়িতে অন্যান্যদের পাশাপাশি মহিলারা ভারতীয় সিরিয়াল দেখতে আসক্ত হওয়ার কারনে, আমরা বাসাতে ভিবিন্ন সময়ে খবর দেখতে পারিনা। বাংলাদেশি কোনো শিক্ষনীয় অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারিনা। এছাড়া এখানকার সুশিল সমাজের ব্যাক্তিবর্গরা জানান, ভারতীয় সিরিয়াল গুলো আমাদের সমাজের সকল বয়সী মানুষদের ব্যাপক ভাবে আকৃষ্ট করে ফেলেছে।
সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে বসলে তাদের ভাবনা থাকে কখন শুরু হবে তাদের প্রিয় কিরনমালা সহ অন্যান্য সিরিয়াল গুলো। অন্যদিকে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের খাতা-কলম, পোশাক, কসমেটিকস, খাবার দ্রব্যাদি সহ নিত্য প্রোয়োজনীয় সকল জিনিষ ভারতীয় সিরিয়াল গুলোর নামে নাম করন করা হয়েছে। তাই তারা অধিকতর আসক্ত হয়ে সিরিয়ালের কাহিনী গুলো পাঠ্যবইয়ের তুলনায় বেশি মুখস্ত রাখে।
শুধু তাই নয়,এই সিরিয়াল গুলোর কারনে দেশের ঘটমান শিক্ষামূলক সংবাদ গুলো অজানা থেকে যাচ্ছে তরুন প্রজন্মের মাঝে। এভাবেই সারা দেশের ন্যায় তজুমদ্দিনের ৫টি ইউনিয়নের কোমলমতি শিক্ষার্থী সহ গৃহবধুরা আজ পর্যায়ক্রমে ধ্বংসের পথ পাড়ি দিতে চলেছে।