বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি | শিরোনাম | সর্বশেষ » ৫শ’ প্রার্থী চূড়ান্ত ,দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বহিস্কার করবে আওয়ামী লীগ
৫শ’ প্রার্থী চূড়ান্ত ,দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বহিস্কার করবে আওয়ামী লীগ
লালমোহন বিডিনিউজ :আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বহিস্কার করবে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কেউ কাজ করলে সে যত বড় নেতাই হোক তাকেও ছাড় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরো আড়ইশ’ একক চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এ নিয়ে গত দুই দিনে হলো।
দলের বৃহত্তর স্বার্থে এসব প্রার্থীর পক্ষে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে মনোনীত প্রার্থীদের অনুকূলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত প্রতীক বরদ্দের চিঠি বিতরণ শুরু হবে। বিকাল ৩টায় ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে উল্লিখিত ৫শ’ প্রার্থীর নাম ঘোষণার পাশাপাশি তাদের মাঝে নৌকা প্রতীক বরাদ্দের চিঠি বিতরণ করা হবে।
প্রথম দফার নির্বাচনে বাকি ২৩৯ একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বৈঠক চলে।
বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, দল করতে হলে নেতাকর্মীদের অবশ্যই দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন দলের হাইকমান্ড। জানা গেছে, গতকাল ৭৩৯টিতেই একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার টার্গেট ছিল। কিন্তু তৃণমূলের প্রস্তাবে একাধিক প্রার্থী থাকায় প্রার্থী বাছাইয়ে বিলম্ব হয়। তবে আজ সবটিতে একক প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। প্রসঙ্গত, দলীয় পরিচয় ও প্রতীকে প্রথম দফায় আগামী ২২ মার্চ ৭৩৯ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন হবে।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে তাদের এ দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। এক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে আসা অভিযোগগুলো বিশ্লেষণে দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপকে সহযোগিতা করবেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও আমিনুল ইসলাম আমিন। আর সারাদেশ থেকে আসা মাঠ জরিপগুলো তদারকি করবেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের আরেক সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম।
জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে গত দুই সপ্তাহ ধরে সরাসরি ফ্যাক্স ও ই-মেইলের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগ বিচার-বিশ্লেষণের পর দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হবে। অধিকাংশ অভিযোগ সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া জেলা নেতারা বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে আসা প্রার্থী তালিকায় রদবদল করেছেন বলেও অভিযোগে উঠে এসেছে।
জানা গেছে, তৃণমূলের পাঠানো প্রস্তাবে সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ জোড়ালোভাবে ওঠায় একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তিন স্তরের জরিপ রিপোর্টকে মিলিয়ে দেখা হয়েছে। তবে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছয় জন নেতার স্বাক্ষর করা প্রস্তাবে একক প্রার্থীর নাম আসলে সেখানে তাকেই বহাল রাখা হয়। আর একাধিক প্রার্থীর নাম আসার ক্ষেত্রে জরিপ রিপোর্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি প্রচারণা কৌশল নির্ধারণ করা হয় বৈঠকে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৫ দিনের মধ্যে একক ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকা কেন্দ্রে পাঠাতে তৃণমূলকে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। দলের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এই ছয় জনকে নিয়ে মনোনয়ন বোর্ড গঠন করার পর বর্ধিত সভার মাধ্যমে একক প্রার্থীর তালিকা পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়। তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতারা ভোট-সমঝোতার মাধ্যমে একক প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া গ্রহণ করেন। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্যদের পরোক্ষ পস্তক্ষেপসহ নানা প্রতিকূলতার কারণে তিন শতাধিক স্থানে একক প্রার্থী পাঠাতে পারেনি তৃণমূল আওয়ামী লীগ।
জানা গেছে, ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে নিবিড় জরিপ চালিয়েছেন। দলের প্রার্থী মনোনয়নের বেলায় প্রধানমন্ত্রীর এই জরিপ রিপোর্টই ছিল মূল ভিত্তি। তৃণমূল থেকে একক প্রার্থীর নাম পাঠানো হলেও তা জরিপ রিপোর্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। যেখানে অমিল ছিল সেখানে জরিপ রিপোর্টে যার নাম ছিল, তাকেই দলের মনোনয়ন দেয়া হয়। আবার কোনো ইউনিয়নের জন্য একাধিক প্রার্থীর নাম পাঠানো হলে প্রধানমন্ত্রীর জরিপ রিপোর্টে যার নাম ছিল, তিনিই পান দলীয় মনোনয়ন।