শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » ভোলা | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলায় আলুর আবাদ বাড়লেও ফলন নিয়ে চিন্তিত চাষীরা
ভোলায় আলুর আবাদ বাড়লেও ফলন নিয়ে চিন্তিত চাষীরা
লালমোহন বিডিনিউজ, ভোলা সংবাদদাতা :ভোলায় গত মৌসুমে ভাল ফলন হওয়ায় এবার আলুর আবাদ প্রায় দেড় গুণ বেড়েছে। ভাল ফলন হওয়ায় আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে বীজ ভাল না হওয়ায় কোন কোন ক্ষেতে চারা গজায়নি। আবার কোথাও কোথাও ভাইরাসের আক্রমনে গাছের পাতা কুকড়ে গিয়ে মরে যাচ্ছে আলুগাছ। এসব কারণে আবাদ বেশি হলেও ফলন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। চাষীদের অভিযোগ নিজেদের পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সার, ওষুধ ও কিটনাশক প্রয়োগ করে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করলেও আলু ক্ষেত পরিদর্শন কিংবা পরামর্শে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা মাঠে আসছেন না। তার পরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর ভাল বাজার মূল্য পেলে দ্বিগুণ লাভবান হওয়ার আশা করছেন চাষীরা।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশের উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় গত মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী , গত বছর জেলায় ৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করে কৃষকরা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩৬০ মেট্রিকটন আলু ঘরে তুলে। বাজার মূল্য ভাল পাওয়ার সাথে সাথে ভোলায় গত বছর একটি কোল্ডস্টোর চালু হওয়ায় লাভও হয় কয়েক গুণ। এতে করে আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ে। কৃষি অফিসের মতে, এ বছর জেলায় ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ আশার করছে, এ বছর ২ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে। তবে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নে কৃষকের ক্ষেতে আলুর বীজ ভাল না হওয়ায় কোন কোন কৃষকের ক্ষেতে ঠিকমত চারা গজায়নি। অনেকে দ্বিতীয়বার বীজ রোপন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে গেছে তাদের। আবার অনেক ক্ষেতে ভাইরাসের আক্রমনে গাছের পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। গাছের বৃদ্ধি ব্যহত হচ্ছে। বেশীরভাগ ক্ষেত ছেনি পোকা, গুনগুন পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগে আক্রান্ত। সার,ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োগেও কোন কাজ হচ্ছেনা বলে অভিযোগ তাদের।
আলু চাষি আমজাদ হোসেন,আবদুল বারেক বলেন,গত বছর আলু চাষে লাভবান হয়েই এ মৌসুমে ব্যাংক ও এনজিও থেকে মোটা অংকের ঋন নিয়ে আলুর আবাদ করেছিলেন জেলার চাষীরা। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে ক্ষেতের এমন অবস্থায় উৎপান খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে ভাবছেন তারা।
কৃষক শরিফ হোসেন জুয়েলের অভিযোগ তাদের ক্ষেতে রোগের আক্রমন হলেও কোন কৃষি কর্মকর্তা তাদের কোন খোঁজ নেয় না। পাচ্ছেনা কোন পরামর্শ। এ বছর আলু উৎপাদন খরচ গতবারের চেয়ে বেশি। তবে ন্যয্য মূল্য পেলে তারা দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন। তবে বাজার মূল্য ভাল না হলে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইলিশা আলু ক্ষেত পরির্দশন করে ভোলা নাজিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের কৃষি বিভাগের প্রভাষক এ বি এম নুরুল হক বলেন, ভাইরাসের আক্রমন ব্যাপক আকারে না হলেও এখনই সতর্ক হতে হবে। তা না হলে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ আলু ক্ষেতে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। আলু ক্ষেতে কোন রোগ বালাই নেই। তারা যে কোন সমস্যায় কৃষকদের পাশে থেকে সার্বিক পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে থাকে।