মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ছেড়ে দে মা লুটে পুটে খাই বদরপুর কলেজ
ছেড়ে দে মা লুটে পুটে খাই বদরপুর কলেজ
লালমোহন বিডিনিউজ : ২০১০ সালে ভোলা জেলার মধ্যমনি লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের দেবিরচর গ্রামের বগিরচর মৌজায় লালমোহন উপজেলা এবং বোরহানউদ্দিন উপজেলার চারটি ইউনিয়ন (বদরপুর, কালমা, দেউলা, সাচরা) এর অবহেলিত কৃষিপ্রধান তৃণমূল মানুষের দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত শিক্ষাস্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (তৎকালীন বদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান) বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে সাথে নিয়ে নিজ নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন- নুরুন্নবী চৌধুরী কলেজ। প্রায় ৪ একর জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ শুরু থেকে এ পর্যন্ত সব কয়টি উচ্চ মধ্যমিক পরীক্ষায় গৌরবজনক রেজাল্ট করে সমগ্র দক্ষিণ বাংলায় সারা ফেলেছে। যে কলেজের প্রভাষক তালিকায় রয়েছেন জাতীয়ভাবে খ্যাত একজন কবি সাংবাদিক সংগঠক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিষয়ভিত্তিক দক্ষ প্রভাষকমন্ডলি। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত এইচ.এস.সি পরীক্ষায় যুগ্মভাবে লালমোহন উপজেলায় প্রথম হয়েছে এই কলেজ। পাশের হার প্রায় ৮০%। ২০১৩ সালের প্রথম পরীক্ষাতেই এ+ অর্জন করে তাক লাগিয়েছে। বর্তমানে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি অত্যাধুনিক সাইক্লোন শেল্টার কাম একাডেমিক ভবন, একটি নান্দনিক মসজিদ কমপ্লেক্স, ৬টি ক্লাস রুম নিয়ে টিনসেডের বর্ধিত ভবন আর কলেজ শিক্ষকদের বহুমাত্রিক আন্তরিকতায় এগিয়ে চলছে বদরপুর নুরুন্নবী চৌধুরী কলেজ। মানবিক এবং বাণিজ্য বিভাগের পাশাপাশি এবছর বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়েছে। বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক শাখা যথারীতি চালু রয়েছে। উম্মুক্ত শাখায় এ পর্যন্ত দুটি ব্যাচ পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু বদরপুর কলেজের সব সফলতা এবং সব অর্জন ধুলায় মিশাতে বসেছে কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর দুই কেরানী এবং তাদের স্বেচ্ছাচারি আচরণ। প্রভাষকদের সাথে দুর্ব্যবহার, ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন কর্মযজ্ঞে নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত ফি আদায়, পরীক্ষা কমিটির হিসাবের আগেই অর্থ-আটকানো, ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণ সহ নানান অপকর্মে জামাল-ফকরুল জুটি অব্যহত। প্রসংগত উল্লেখ্য এই দুই কর্মচারীর বাড়ি কলেজ সংলগ্ন। বাড়ির দরজার প্রতিষ্ঠান বলে তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করছে না।
সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে তিন দফা কলেজের আইসিটি প্রদর্শক মাইনুদ্দিনের সাথে অসৌজন্যমূূলক আচরণ করেছে জামাল-ফকরুল কেরানী জুটি যা ভাষায় ব্যক্ত করার মত নয়। কলেজের সমাজ বিজ্ঞান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম এবং হিসাব বিজ্ঞান প্রভাষক মো. হারুন তাদের মুখে একাধিকবার নাকাল হয়েছেন। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত, কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মনির হোসেন, কলেজের টিনসেড ভবনে আবাসিক আস্তানা গারার পর জামাল-ফকরুলের উৎপাত এবং অসদাচরণ তিন গুণ বেড়েছে। কলেজের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের একাধিক ছাত্রছাত্রী দুই কেরানী কর্তৃক অপদস্ত হওয়ার নানান অভিযোগ উত্থাপন করেছে। সবচেয়ে বড় অভিযোগ খুব নিম্মমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী কেরানী জামাল-ফকরুল তাদেরকে স্যার বলে সম্ভোধন না করলে বেজার হন! বিশ্বস্ত সূত্র আরো জানিয়েছে মোবাইলের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা প্রদান চালু হলে তারা উপবৃত্তির একটা বিশাল অংশ হাতিয়ে নিয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ বর্তমান লালমোহন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যস্ত থাকায় জামাল- ফকরুল তাদের অনৈতিক কর্মকান্ড অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে। একান্ত আলাপচারিতায় এক প্রশ্নের জবাবে কলেজ অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন- “এদেরকে আমি কলেজে চাকুরী না দিলে এরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিনতাই- চাঁদাবাজি করতো….।” কলেজের সদ্য এইচএসসি পাশ করা এক ছাত্রী মুঠোফোনে এই জানিয়েছে-কেরানী জামাল তাকে র্টান্সক্রিপ্ট সরবরাহ করতে গিয়ে সরাসরি বন্ধের দিন আসতে বলে কু-প্রস্তাব দিয়েছে। খালেদা আক্তার নামের অন্য এক ছাত্রী সরেজমিন অভিযোগ করেছে- জামাল র্টান্সক্রিপ্ট দিতে গিয়ে নানান তালবাহানা করে তিন দিন তার মুঠোফোন আটকিয়ে রেখেছে। শিল্পী নামের আরেক ছাত্রী নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত ফি না দেয়ায় তার এসএসসি এবং এইচএসসির মূল কাগজপত্র কয়েক দিন আটকিয়ে রেখে পরে ফেরত দিয়েছে। কলেজের ছাত্রছাত্রীএবং প্রভাষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এই জামাল-ফকরুল কেরানী হওয়া সত্ত্বেও বারবার অধ্যক্ষের নির্দেশ উপেক্ষা করে টিচার্স কাউন্সিলের চেয়ারগুলোতে প্রায় সবসময় পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকে। বিভিন্ন গাইড বই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা কলেজের অফিসে যোগাযোগ করলে জামাল-ফকরুল নিজেদেরকে কখনো রসায়ন কখনো ইসলামের ইতিহাস কখনো উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিষয়ের প্রভাষক বলে পরিচয় দিয়ে ঐ সমস্ত প্রতিনিধিদের শিক্ষক ফর্দে নিজেদের নাম অন্তর্ভূক্ত করে নানান সুযোগ সুবিধা হাতিয়ে নেয়। কলেজের প্রভাষক মহলে জামাল-ফকরুলের চেয়ারে বসা এবং প্রভাষক সাজা বিষয়টি রীতিমতো ছাত্র শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক মনোকষ্টের সৃষ্টি করছে। এভাবে আর কতো ? কলেজের ভূক্তভোগী অসংখ্য ছাত্রীর প্রতিনিধি আফসানা, খালেদা এবং শিল্পীর দাবী ফকরুলের চেয়ে জামালের উৎপাত কয়েকশো গুন বেশী। আফসানাকে সরাসরি কু-প্রস্তাব দিয়েছে কেরানী জামালউদ্দিন। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি নানানরকম অপ্রীতিকর আচরণে কলেজ সংলগ্ন বাসিন্দা কেরানী জামালউদ্দিন চ্যাম্পিয়ান !! দুশ্চরিত্র ইভটিজার দুর্ব্যবহারকারী কেরানী জামালকে অবিলম্বে অপসারন করে বদরপুর নূরুন্নবী চৌধুরী কলেজের ধারাবাহিক শিক্ষাশোভন পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক - দাবী এলাকাবাসীসহ বদরপুর কলেজের সকল ছাত্রছাত্রীর। (চলবে…