সোমবার, ১৩ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » লালমোহনে জনশুমারির কাজে সরকারি চাকুরিজীবীরা, বঞ্চিত বেকাররা || লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহনে জনশুমারির কাজে সরকারি চাকুরিজীবীরা, বঞ্চিত বেকাররা || লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, লালমোহন প্রতিনিধি ॥ ভোলার লালমোহনে জনশুমারির কাজে গণনাকর্মী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারিভাবে এ কাজে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেকারদের সুযোগ দেয়ার কথা থাকলেও সে নির্দেশনা অমান্য করেন পরিসংখ্যান অফিসের উপজেলা সেন্সাস কো-অর্ডিনেটর আরিফুর রহমান খন্দকার। তার যোগসাজসে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, ফলে বঞ্চিত হয়েছেন উপজেলা প্রকৃত বেকাররা।
পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫-২১ জুন সারাদেশের সাথে একযোগে লালমোহন পৌরসভাসহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে জনশুমারীর কাজ শুরু হবে। এ উপজেলায় ১২৩ জন সুপারভাইজার, ৬৬৭ জন গণনাকারী ও ৭জন জোনাল অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য গত ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপজেলায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী বেকার যুবক/যুব মহিলা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে দরখাস্ত আহবান করা হচ্ছে। এতে সুপারভাইজার পদের জন্য নুন্যতম স্নাতক বা সমমান পাস শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং গণনাকারীদের জন্য নূন্যতম এইচএসসি বা সমমান পাস এবং বয়স ২৩ থেকে ৪০ ও ১৮ থেকে ৩৫ বছর হতে হবে।
কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের সুপারভাইজার নিয়োগ পেয়েছেন মাদরাসা সুপার ইব্রাহিম খলিল এবং গণনাকারী হিসেবে মাদরাসার শিক্ষক মোস্তফা কামাল, মাও: নাজিম উদ্দিন, মো: গিয়াস উদ্দিন, মাওলানা মফিজ, ঝিল্লুর রহমান, কুন্ডের হাওলা মাদরাসার তালেব, পারভেজ ও অফিস সহকারী আবুল কাশেম । এই ইউনিয়নের আরেক সুপারভাইজার তানিয়া আক্তার যিনি নিয়োগ পরীক্ষা দেননি, নেই স্নাতক পাসও।
মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে রয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জিব দত্ত, সহকারী শিক্ষক মো. মামুনুর রশীদ, সফিকুল ইসলাম, মো. হুমায়ুন কবীর, মো. হাসনাইন আহমেদসহ বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ।
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েও জনশুমারির কাজে সুযোগ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার বেকার যুবক-যুবতী ও ছাত্র-ছাত্রীরা।
উপজেলার সাবেক পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম জানান, তিনি ৯৬ জনকে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। সেসময় নিয়োগ পাওয়া সালমা আক্তার বুলু বলেন, তিনি নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে যাচাই বাছাই শেষে তালিকাভুক্ত হয়ে দায়িত্বও পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেখেন তার নাম নেই। একই অভিযোগ করলেন পারভীন আক্তারও।
এদিকে উপজেলা পরিসংখ্যানের বর্তমান কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সুযোগে তারই অফিসের সেন্সাস কো-অর্ডিনেটর আরিফুর রহমান খন্দকার কোন পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেছেন বলে অভিযোগ তালিকা থেকে বাদ পড়াদের। যদিও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মদন মোহন মন্ডল ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতার হোসেনসহ আরো ৩ কর্মকতাও জনশুমারী কার্যক্রম তদারকির সাথে জড়িত। তারা জানান, সকল নিয়োগ পরিসংখ্যান অফিস থেকে করে তাদের দেওয়া হয়েছে।
আরিফুর রহমান খন্দকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের উপর দোষ চাপিয়ে তাদের সুপারীশে স্কুল, মাদরাসার শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করেন। অথচ রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, কেউ কোন সুপারীশ করেননি। যা করেছেন তা পরিসংখ্যান অফিসের আরিফই করেছেন।