শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার চরফ্যাসন পৌর নির্বাচনে, ডজন খানেক সম্ভাব্য প্রার্থী
ভোলার চরফ্যাসন পৌর নির্বাচনে, ডজন খানেক সম্ভাব্য প্রার্থী
লালমোহন বিডিনিউজ, চরফ্যাশন সংবাদদাতা : ভোলার চরফ্যাশন পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা মাঠ দাবিয়ে বেড়ালেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা রাজনীতির মাঠ প্রতিকূল হাওয়া এবং হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন। তবে উভয় দলে রয়েছেন ডজন খানেক মনোনয়ন প্রত্যাশী। এদিকে জামায়াত এককভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ভাবছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াত প্রার্থীর মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
চরফ্যাশন পৌরসভার ২৫ বছরে তিনবার নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান হাওলাদার প্রথম মেয়র, বিএনপির আমিরুল ইসলাম মিন্টিজ দ্বিতীয় মেয়র এবং আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সালাম হাওলাদর তৃতীয় নির্বাচিত হন।
২০১১ সালে চরফ্যাশন পৌরসভা প্রথম শ্রেণির মর্যাদা অর্জন করেছে। প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার পর প্রথম মেয়র কে হবেন নির্বাচিত হবেন এ নিয়ে নানাজনের নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চলছে। রাজনৈতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আসন্ন নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি থাকলেও বিএনপিদলীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র লক্ষ করা গেছে।
জামায়াতের একমাত্র প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও দলীয় প্রার্থিতার বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। যদিও দুদলের প্রায় একডজন নেতা দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে ব্যস্ত রয়েছেন। দলীয় পরিচয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে শীর্ষ নেতাদের দ্বারে ভিড় করছেন।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪ জন, বিএনপির ৫ জন এবং জামায়াতের ১ জনের নাম আলোচনা হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক জামাল উদ্দিন মহাজন, পৌর সভাপতি বাদলকৃষ্ণ দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদ শুভ্র, আওয়ামী লীগ নেতা ও প্যানেল মেয়র এসএম মোর্শেদ ভোটের মাঠে বিচরণ করছেন।
বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা সরবে ভোটের মাঠে না থাকলেও নীরব-নিভৃতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক মেয়র আমিরুল ইসলাম মিন্টিজ, সহসভাপতি জাকির হোসেন বাবলু, বিএনপি নেতা কাজী মনজুর হোসেন, উপজেলা যুবদল সভাপতি আশরাফুর রহমান দীপু এবং জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমির কাজী হারুন-অর-রশিদ মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি জয়নাল আবেদীন আকন জানান, মেয়র পদে দলে একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। তফসিল ঘোষণার পর দলীয়ভাবে আলোচনা করে মেয়র পদে একজন প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই।
প্রার্থী চূড়ান্ত করার ব্যাপারে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদ শুভ্রসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা অভিন্ন সুরে বলেছেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন আলমগীর মালতিয়া জানান, আসন্ন পৌর নির্বাচন নিয়ে দলের হাইকমান্ড থেকে এখনো কোনো নিন্দেশনা পাওয়া যায়নি। দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত পেলে মেয়র পদে বিএনপি একক প্রার্থী দেবে।
উপজেলা জামায়াতের আমির কাজী হারুন-অর-রশিদ জানান, জামায়াতে ইসলাম এককভাবে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। দলীয় পরিচয় এবং প্রতীক নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা দেখা দিলে জামায়াত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে। জেলা জামায়াতরে সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে মেয়র পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নিন্দেশ দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ গত বছরের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী চরফ্যাশন পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৫২৪ জন। তৃতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হওয়ার পর পৌরসভার এলাকা বর্ধিত করা হয়েছে। বর্ধিত এলাকায় জিন্নাগড় ইউনিয়নের ১নং ও ২নং ওয়ার্ড সম্পূর্ণ এবং জিন্নাগড়ের ৩নং ওয়ার্ড ও আসলামপুর ইউনিয়নের ৬নং ও ৭নং ওয়ার্ডের অংশবিশেষ পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব ওয়ার্ডের ভোটার তালিকা বিন্যাসের কাজ চলছে।
ফলে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে পৌরসভার ভোটার সংখ্যা কত হবে তা উপজেলা নির্বাচন অফিস নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। তবে এ সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।