বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর চেহারা
লালমোহন বিডিনিউজ :পৃথিবীর উষ্ণতা দিনে দিনে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। ফলে বৈশ্বিক জলবায়ুর আশঙ্কাজনক পরিবর্তন ঘটেছে। গত ৫০ বছরে পৃথিবীর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। অন্যদিকে গত ১০০ বছরের ইতিহাসে ২০১৫ সাল পৃথিবীর সবচে উষ্ণতম বছর। ফলে হিমবাহগুলোর বরফ দ্রুত গলতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পুরো পৃথিবীর চেহারাই পাল্টে যাবে। তলিয়ে যাবে সমুদ্রতীরবর্তী অনেক অঞ্চল।
সম্প্রতি কানাডার টরোন্টোয় নতুন এক গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল বিজ্ঞানীদের আতঙ্কিত করেছে।বিজ্ঞানীরা সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পৃথিবীর জলবায়ূ পরিবর্তন কেবল সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অনিশ্চিত আবহাওয়া সৃষ্টি করেছে তা নয়, এটি গোটা পৃথিবীর চেহারা পাল্টে দিতে পারে।
জলবায়ু গবেষকেরা পেটাগোনিয়া এবং অ্যান্টার্কটিকার হিমবাহ নিয়ে ৫ বছর ধরে গবেষণা করেন। গবেষণায় তারা দেখতে পান পেটাগোনিয়ার হিমবাহগুলি অ্যান্টার্কটিকার হিমবাহগুলির তুলনায় দ্রুতগতিতে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে।
ব্রিটিশ কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাইকেল কোপস এ সম্পর্কে বলেন, ‘পেটাগোনিয়ার হিমবাহগুলি ১০০ থেকে ১ হাজার গুণ বেশি গতিতে ক্ষয়ে যাচ্ছে। অ্যান্টার্কটিকার তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। তাপমাত্রা বেড়ে চলায় এখানকার হিমবাহগুলি দ্রুতগতিতে স্থানান্তরিত হচ্ছে এবং ভয়াবহভাবে গলতে শুরু করেছে। ফলে, সাগরের বুকে তলানি বাড়ছে। এতে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতাও বাড়ছে।’
মেরু অঞ্চলে হিমবাহের এই ক্ষয়প্রাপ্তি জলবায়ু পরিবর্তনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এসব হিমবাহগুলো ভাটি অঞ্চলের অববাহিকা ও মহাদেশীয় বালুচরে আরও পলল জমা করেছে। ফলে মৎস্য খামার, বাঁধ এবং পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীদের পানীয় জলকে আক্রান্ত করেছে।
মেরু অঞ্চলের মহাদেশীয় সীমানাগুলো জীববৈচিত্রের প্রাণকেন্দ্র। হিমবাহগুলি এভাবে গলতে থাকলে এখানকার জলজ আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষের আবাসস্থল হিসেবে পৃথিবীও হারাবে তার চীর সবুজ চেহারা ।