
মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলায় করোনার প্রাদূর্ভাবেও বেপরোয়া এনজিও: কিস্তির চাপে দিশেহারা গ্রাহকরা
ভোলায় করোনার প্রাদূর্ভাবেও বেপরোয়া এনজিও: কিস্তির চাপে দিশেহারা গ্রাহকরা
সালাম সেন্টু, ভোলা: করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব থেকে জনগণেক সচেতন করার লক্ষে গণজমায়েত রোধে ভোলা জেলার জেলার বিভিন্ন বাজারের সাপ্তাহিক হাট ও বাজারের ভাসমান দোকানগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর যাতে করে কোন প্রভাব না পড়ে সেজন্য বিভিন্ন এনজিও সংস্থাগুলোকে ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় জেলা প্রশাসক (ভোলা) মােহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক। গত ২৩ মার্চ জেলা প্রশাসক (ভোলা) মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে সিদ্ধান্ত কে সাধুবাদ জানায় সাধারণ মানুষ।
কিন্তু জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কিস্তির জন্য গ্রাহকদের চাপ সৃষ্টি করছেন এনজিও সংস্থাগুলো। এতে করে বিপাকে পড়ে যাচ্ছেন ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহিতারা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গ্রামীণ ব্যাংক লালমোহন শাখার কর্মীরা পৌর ওয়েষ্টার্ণ পাড়া এলাকার শফিক হাওলাদার, সুমন ও জাকিরসহ অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে চাপ সৃষ্টি করে ঋণের কিস্তি আদায় করেছেন। এদিকে কোষ্ট অফিস লালমোহন উপজেলার গজারিয়া বাজার ব্রাঞ্চের কর্মী অর্চণা দত্ত তার ব্রাঞ্চের ঋণ গ্রহিতা জুলেখা, জাহানারা, আরজু ও মমতাজসহ আরো কয়েকজন গ্রাহক কে দূর্ব্যবহার করে ঋণের কিস্তি পরিশােধে বাধ্য করেছেন বলেও অভিযোগ গ্রাহকদের।
অপরদিকে আশা লালমোহন ব্রাঞ্চের কর্মীরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীক ঋণের কিস্তির জন্য হানা দিচ্ছেন গ্রাহকদের কাছে। কিস্তি আদায় বন্ধে জেলা প্রশাসকের বরাত দিলে এনজিও কর্মীরা বলছেন, মাসিক কিস্তি বন্ধ রাখা হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আদেশ উপেক্ষা করে যারা কিস্তি আদায় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সর্বপরি কোন গ্রাহক কিস্তি প্রদানে অপারগ হলে তা মানতে নারাজ এনজিও কর্মীরা। যে কোন মূল্যে কিস্তি প্রদানে বাধ্য করা হচ্ছে গ্রাহকদের। সাপ্তাহিক কিস্তির গ্রাহকদের কাছে গিয়ে এনজিও কর্মীরা বলছেন, মাসিক কিস্তি বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে এবং সাপ্তাহিক কিস্তির গ্রাহকদের কাছে বলা হচ্ছে মাসিক কিস্তি বন্ধ করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার ছোট বড় হাট বাজারগুলো বন্ধ রাখায় প্রভাব পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবন যাপনে। এমন সময়েও এনজিও স্ংস্থাগুলোর কিস্তির চাপ ব্যবসায়ীদের কাছে “মরার উপর খারার ঘা” মনে হচ্ছে।
গত ২৩ মার্চ জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা প্রশাসক (ভোলা) মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞতিতে উল্লেখ করা হয় “ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আবেদন বিবেচনা ও গণজমায়েত এড়ানোর লক্ষে এ জেলার (ভোলা) এনজিও কর্তৃপক্ষ সমূহকে তাদের ঋণের কিস্তি আদায় সাময়িক সময়ের জন্য গৃহীত হয়। এমতাবস্থায় দেশের বৃহত্তর স্বার্থে উক্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে (এনজিও সংস্থাগুলোকে) অনুরোধ করা হলো”।
দূর্যোগ মূহুর্তে গৃহীত এমন সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এনজিও সংস্থাগুলোর অমানবিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আবারও জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহিতা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।