সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » জাতীয় | শিরোনাম | সর্বশেষ » মহান বিজয় দিবস আজ।। লালমোহন বিডিনিউজ
মহান বিজয় দিবস আজ।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, ডেস্ক : পরাধীনতার শেকল ছিন্ন করে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।
১৬ই ডিসেম্বর। আজ মহান বিজয় দিবস। এ দিনটি বাঙালির বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের দিন। পৃথবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পরাধীনতার শেকল ছিন্ন করে বাংলার আকশে ওঠে নতুন সূর্য।
১৯৭১ সালের এই দিনে পড়ন্ত বিকেলে ঢাকা ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। ঐ দিন থেকেই বাঙালি জাতির একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের ওপর।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার পুষ্পস্তবক অর্পণ করার পর বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এদিন সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরের জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমভিত্তিক যান্ত্রিক বহর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হবে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও সরকারি স্থাপনায় বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। সংবাদপত্র বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করবে, বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।
এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।
এছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। নৌ-বাহিনীর বেশ কিছু জাহাজ সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু হলে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি জাতি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকবাহিনীর জান্তারা যে অস্ত্র দিয়ে বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করে, সেই অস্ত্র পায়ের কাছে রেখে মাথা নিচু করে আত্মসমর্পণ করে এবং পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।