বুধবার, ১৫ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » জাতীয় | শিরোনাম | সর্বশেষ » রাজধানী ছেড়ে ঈদে গ্রামের বাড়ি যেতে হবে৷ এ যেন এক ধরাবাঁধা নিয়ম৷ সড়কপথে বাড়তি চাপ, বাড়ছে দুর্ভোগ
রাজধানী ছেড়ে ঈদে গ্রামের বাড়ি যেতে হবে৷ এ যেন এক ধরাবাঁধা নিয়ম৷ সড়কপথে বাড়তি চাপ, বাড়ছে দুর্ভোগ
লালমোহন বিডিনিউজ,সাইফ বাবলু ঢাকা: রাজধানী ছেড়ে ঈদে গ্রামের বাড়ি যেতেই হবে৷ এ যেন এক ধরাবাঁধা নিয়ম৷ আর প্রতি ঈদে সড়কপথে বাড়িফেরা বাড়তি মানুষের চাপ সামলাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি সব গণপরিবহণ। সেইসঙ্গে বাড়ছে দুর্ভোগ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদ উপলক্ষে গড়ে ৭৫ থেকে ৮০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়েন। এর সিংহভাগই ঈদের দু-তিনদিন আগে ঢাকা ত্যাগ করেন। অপরদিকে ছুটি শেষে ৮০ লাখ মানুষ আবার ঢাকায় ফিরে আসেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, যানবাহনগুলোতে দিনে সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ লাখ যাত্রী ধারণক্ষমতা আছে। এর মধ্যে বাসে সাড়ে ৪ লাখ, লঞ্চে ২ লাখ এবং ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিটসহ দেড় লাখ যাত্রী পরিবহণ সম্ভব। এর বাইরে অতিরিক্ত প্রায় ২ লাখ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে ভ্রমণ করেন। একই অবস্থা হয় ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার সময়।
অথচ একসঙ্গে এ বিপুল সংখ্যক যাত্রী বহণে রয়েছে মাত্র ৮ হাজার বাস, শতাধিক লঞ্চ এবং ৯৬টি ট্রেন। এবার ঈদে প্রতিদিন বিআরটিসির ৯০০ বাস চলাচল করছে। এর বাইরে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসে ঘরমুখো মানুষের একটি অংশ যাতায়াত করছেন। হিসেব অনুযায়ী, ঈদের আগের ৩ দিন প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫ লাখ করে মানুষ ঢাকা ত্যাগ করে।
নৌপরিবহণমন্ত্রী ও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান বলেন, যাত্রীচাপে ঈদে সড়ক ও নৌপথে অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়। ওই সময়ে এত বেশি যাত্রী চলাচল করেন, যার ধারণ ক্ষমতা সড়কের নেই। নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক বাস ও লঞ্চ। এ অবস্থায় যাত্রীদের কিছুটা কষ্ট মেনে নিতেই হবে।
ঈদে যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো এবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গার্মেন্টগুলোতে আগেভাগে ছুটি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মালিকরা। এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমে আসবে বলে জানান তিনি ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঈদে বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলানোর মত যানবাহন এবং অবকাঠমো দেশে নেই৷ একই সময়ে বাড়তি চাপের কারণে দুর্ঘটনা আর জনদুর্ভোগ বাড়ছে৷ যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহণের সংখ্যায় ঘাটতি, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য, পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের বাড়তি আয়ের প্রবণতা, সমস্যা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সক্ষমতা ও স্বদিচ্ছার অভাবেই মূলত সরকারের কোনো উদ্যোগ কাজে আসে না।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুর রহীম জানান, ঈদের সময়ে বাসের সংখ্যা বাড়িয়েও কোন লাভ হয় না। কারণ রাস্তাতো আর বাড়ে না৷ তাই জনদুর্ভোগ বাড়ে, বাড়ে দুর্ঘটনা৷ তিনি বলেন, রেল ও নৌ যোগাযোগকে সবচেয়ে নিরাপদ ভাবা হয়৷ কিন্তু বাংলাদেশে সড়ক পথে যাত্রী চলাচল করে সবচেয়ে বেশি, ৭৫ ভাগ৷ আর রেল ও নৌপথে যথাক্রমে ১২ ও ১৩ ভাগ৷ সমস্যা সমাধানে তাই রেল ও নৌপথকে গুরুত্ব দিতে হবে৷
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জানান, ঈদ উপলক্ষে কয়েকদিনের জন্য যাত্রী কয়েকগুণ বেড়ে যায়, কিন্তু গাড়িতো আর বাড়ানো সম্ভব নয়৷ তাই তারা বাসের ট্রিপ বাড়িয়ে দেন৷ এতে গাড়ি, চালক আর রাস্তার ওপর চাপ পড়ে৷