শনিবার, ৪ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর | বিভাগের খবর | শিরোনাম | সর্বশেষ | সিলেট » কিশোরী বধূকে ফেলে পালিয়ে গেলেন ইউপি সদস্য।। লালমোহন বিডিনিউজ
কিশোরী বধূকে ফেলে পালিয়ে গেলেন ইউপি সদস্য।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এক কিশোরীকে (১৫) বিয়ে করেছেন ৪৮ বছরের ইউপি সদস্য। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালালে বাসর রাতেই কিশোরী বধূকে ফেলে পালিয়ে যান ওই ইউপি সদস্য।
ওই ইউপি সদস্যের নাম আব্দুর রহমান (৪৮)। তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তার আরও দুই স্ত্রী রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিবেশীরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শ্রীমঙ্গল শহরতলীর শাহীবাগের রেললাইন এলাকার ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে শুক্রবার বিয়ে করেন ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান। পরে ওই কিশোরীকে তার বাবার বাড়ির পাশের একটি ভাড়া বাড়িতে তোলেন তিনি। স্থানীয় লোকজন বাল্যবিয়ের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মহিলাবিষয়ক কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক সুদীপ দাশকে ঘটনাস্থল পাঠানো হয়। ওই কর্মকর্তার উপস্থিতির টের পেয়ে রাতেই নববধূকে ফেলে পালিয়ে যান ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শাহেদা আকতার বলেন, ইউপি সদস্যের বাল্যবিয়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় নারী নেত্রী ও এনজিওকর্মী ইফ্ফাত আরা নিপা বলেন, বাল্যবিয়ে দেশের আইনে অপরাধ। একটি নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে ৪৮ বছরের পুরুষের বিয়ে শারীরিক এবং মানসির দুইভাবেই মেয়েটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। একটি মেয়ের দৈহিক ঘটনের পূর্ণতা পায় না ১৮ বছরের আগে। এর আগে যদি বিয়ে হয় তাহলে শারীরিক গঠন পূর্ণতা পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে মেয়েটির জীবন নিশ্চিত ঝুঁকিতে পড়ে। ওই মেয়ের মা-বাবা, ইউপি সদস্য এবং কাজিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। বাল্যবিয়ের শাস্তি নিশ্চিত না করতে পারলে তা বন্ধ করা যাবে না। একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমনটি আমরা আশা করিনি।
এ ব্যাপারে রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিজয় কুমার বুনার্জি বলেন, ইউপি সদস্য হিসেবে আব্দুর রহমান যে কাজটি করেছেন সেটি ঠিক করেননি। বিষয়টি নিয়ে আমরা ইউনিয়ন পরিষদে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে আমি উপজেলা মহিলাবিষয়ক কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক সুদীপ দাশকে ঘটনাস্থলে পাঠালে বাল্যবিয়ের সত্যতা পাওয়া যায়। তবে আমাদের লোকজন ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান ও মেয়ের বাবা পালিয়ে যান। পরে আমরা এ ব্যাপারে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে একটি মামলা করেছি।
শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে মামলা রেকর্ড করে ব্যবস্থা নেব।