রবিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » রাজধানী | রাজনীতি | শিরোনাম | সর্বশেষ » মতিয়া চৌধুরীর পাশাপশি বসে রাজনীতি করা আমার পক্ষে সম্ভব না- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।। লালমোহন বিডিনিউজ
মতিয়া চৌধুরীর পাশাপশি বসে রাজনীতি করা আমার পক্ষে সম্ভব না- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, ঢাকা : কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, এখন রাতদিন আওয়ামী লীগে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হচ্ছে। আমি কিভাবে যাব? যে মতিয়া চৌধুরী আমার নেতার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল তার পাশাপাশি বসে রাজনীতি করব? আমার পক্ষে তা সম্ভব না।
রবিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ৭৫- এ বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিরোধ যুদ্ধে জাতীয় মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের মিলন মেলায় এ কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী নিজেই।
দীর্ঘ ১৯ বছর পর সহোদর সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে একই মঞ্চে বসেন তিনি। এ সময় তিনি ভাইয়ের পক্ষেও কথা বলেন। আওয়ামী লীগে তার অবদানের কথাও তুলে ধরেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজ প্রায় ১৯ বছর আমরা দু’ভাই পাশাপাশি কোন জনসভায় বসিনি। খুব সম্ভবত: একবার জানাজায় আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। তিনি বলেন, ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় আমরা প্রতিরোধ গড়েছিলাম।
কিন্তু সরকারিভাবে আমাদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। আমি বলব, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের মাধ্যমে যদি জাতির কলঙ্ক মোচন করা হয়ে থাকে, তাহলে আমরা শুধু সরকারের স্বীকৃতি নয়, জাতীয় স্বীকৃতি চাই। যদি স্বীকৃতি না দেয়া হয় তাহলে আজ ঘোষণা করা হোক আমরা সেদিন প্রতিবাদ করে ভুল করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করা হোক।
তিনি বলেন, যদি স্বীকৃতি না দেয়া হয়, তাহলে মুখ বুজে বসে থাকব না। আমি মনে করি এই স্বীকৃতি আদায় হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। একই সঙ্গে বলতে চাই- কোন মানুষ যদি পিতৃ পরিচয় হারিয়ে ফেলে, কেউ যদি পিতৃ পরিচয় অস্বীকার করে, তাহলে তার আর কিছু থাকে না। তাকে কিন্তু সামাল দেয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। এটা মনে রাখতে হবে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু জেল থকে বের হলে আমরা তার সঙ্গে তখন কথা বলতে পেরেছি। আমার বাবা কথা বলতে পেরেছে। কিন্তু এই প্রথম ১৯ বছর পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য, দেখা করার জন্যে তিন তিনবার চেষ্টা করেছি। তার পিএসদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে কোন সাড়া পায়নি। তাকে না পেয়ে শেষে চিঠি দিয়েছি। যেন এই অনুষ্ঠানে সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু কোন সহযোগিতা পায়নি।
বরং আজকের এই মিলন মেলায় যেন না আসতে পারে কেউ তার জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা ইয়াহিয়ার জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু দেশের ভেতর এমন শত্রুতা আগে কখনো দেখিনি।
তিনি বলেন, আজকে সরকারের জয়জয়কার। যেদিকে তাকাই সেদিকে আওয়ামী লীগ। সেদিকে শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা কোথায় গিয়ে দাড়াবো জানি না। আল্লাহ কখন কার জন্য কি লিখে রাখেন আমরা কেউ জানি না। তিনি বলেন, আজকে রাজনীতির জন্য এই সভা আহ্বান করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলা এটা। রাজনীতি যারা করে তারা শুধু ক্ষমতা দেখে। অনেকের মধ্যে কোন কৃতজ্ঞতাবোধ নেই।
নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন একদিকে শ্রমিক নেতা অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রী। তিনি আজকে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়েছেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর স্যান্ডেল যারা টেনেছে তারা আজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী। যে আওয়ামী লীগের জন্ম দিয়েছে লতিফ সিদ্দিকী। তাকেই বহিষ্কার করা হয়েছে আওয়ামী লীগ থেকে। এখন রাতদিন আওয়ামী লীগে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হচ্ছে। আমি কিভাবে যাব। যে মতিয়া চৌধুরী আমার নেতার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল তার পাশাপাশি বসে রাজনীতি করব? আমার পক্ষে তা সম্ভব না।