
রবিবার, ৮ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর | তজুমদ্দিন | মুক্তমত | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » নাছরিন-১ ট্টাজেডির ১৫ বছর, আজও থামেনি স্বজনহারাদের আর্তনাদ।। লালমোহন বিডিনিউজ
নাছরিন-১ ট্টাজেডির ১৫ বছর, আজও থামেনি স্বজনহারাদের আর্তনাদ।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, এম আর পারভেজ : আজ ৮ জুলাই। এমভি নাসরিন ট্র্যাজেডির ১৫ বছর। দিনটি মনে পড়লেই হাহাকারে হৃদয়টা ক্ষত বিক্ষত হয় লালমোহনবাসীর।
২০০৩ সালের এই দিনে ঢাকা সদরঘাট থেকে লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া এমভি নাসরিন-১ লঞ্চ চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে ডুবে গিয়ে ৪০২ প্রাণের সলিল সমাধি হয়। দেশে নৌ দুর্ঘটনার ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা।
নাসরিন লঞ্চডুবির ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও আজো থামেনি নিহতদের পরিবারের কান্না। একই পরিবারের ২৬ জন বরযাত্রী হয়ে উঠে পড়েন লঞ্চে। তারমধ্যে ২৪ জনকেই হারান লালমোহন ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের মহেষখালী গ্রামের রিনা বেগম। রিনার সঙ্গে বেঁচে আসে তার ফুফাতো ভাই সোহেল। চিরদিনের মতো হারিয়ে ফেলে রিনার সাত বছরের মেয়ে হাফসা, বোন স্বপ্না, রুমা, তাদের স্বামী-সন্তান, মামা আ. কাদের, মামি সুফিয়া, খালা রাহিমা, খালাতো ভাই মিলন, মিজানসহ পুরো পরিবারের স্বজন। সেদিন রিনা ঢাকা থেকে ভাগ্নে কলেজ শিক্ষক মতিনের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য লালমোহনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। পরিবারের কোনো সদস্যেরই লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় স্বজন হারিয়েও একটু সুখের খোঁজে বিয়ের পিড়িতে বসেছিলেন কলেজ শিক্ষক মতিন। নববধূ কে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন ভয়াল মেঘনার পাড়ে। ফিরে এসে রাতের খাবার খেয়ে সেই যে ঘুমিয়েছেন আর জাগেননি মতিন। শুভাকাঙ্খি ও এলাকাবাসীর মতে ভয়াল মেঘনা দেখে স্বজন হারানোর বেদনায় অবশেষে নিজেও পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন।
নাসরিন লঞ্চে সেদিন এশার নামাজের ইমামতি করেছিলেন লালমোহন চরভূতা ইউনিয়নের মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মাকসুদুর রহমান। নিজে বেঁচে আসতে পারলেও সঙ্গে থাকা ভাগ্নে নোমানকে আর খুঁজে পাননি। নিজের স্বামীকে হারানোর কথা তুলে ধরেন শামসুননাহার। স্ত্রী ও মেয়েকে হারিয়ে বেঁচে ফিরে আসার কথা জানান লালমোহনের ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান। পূর্বচরউমেদ,গ্রামের আজাহার রোড এলাকার আনিচল হক তার স্ত্রী আমেনা বেগম, নাতনী জেসমিন আক্তার (কমেলা) ঐ লঞ্চে উঠে আর ফিরে আসেনি বাড়ীতে। তাদের সন্তান প্রতিবন্ধী
সিরাজ,কাঞ্চন মিয়া,ভূট্টো জানান,তারা তাদের মা বাবা ও
ভাগনীকে অনেক খোঁজ করেছেন, কিন্তু তাদের লাশগুলো
কোথা ও পায়নি।
প্রতিবছর এ দিনে তারা তাদের মা বাবার জন্য মসজিদে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন।
স্বজনহারাদের দায়ের করা মামলায় উচ্চ আদালত ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি আজো। এ রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চান নিহত/নিখোঁজ পরিবারের স্বজনরা।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ২০০৪ সালে ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের পক্ষে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা দায়ের করে।
ছবি সংগৃহীত