বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় | রাজধানী | রাজনীতি | শিরোনাম | সর্বশেষ » বিদেশে সম্পদ সংক্রান্ত বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে খালেদা জিয়ার উকিল নোটিশ ।। লালমোহন বিডিনিউজ
বিদেশে সম্পদ সংক্রান্ত বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে খালেদা জিয়ার উকিল নোটিশ ।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ : বিদেশে সম্পদ সংক্রান্ত বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
নোটিশে বলা হয়েছে, ওই বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং তা সংবাদমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ৩০ দিনের মধ্যে তা করা না হলে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাহবুবউদ্দিন খোকন মঙ্গলবার ডাক যোগে ওই উকিল নোটিশ পাঠিয়ে দিয়েছেন।
সম্প্রতি দেশের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে বিদেশি একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে একটি খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি মামলায় বিচারের মুখে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে সৌদি আরবে।
গত ৭ ডিসেম্বর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে ওই প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উকিল নোটিশটির বক্তব্য “লালমোহন বিডিনিউজ” পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সড়ক নং-৮৬, বাড়ি নং-০৬, গুলশান-০২, ঢাকা-১২১২ কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে আমরা এতদ্বারা আপনাকে নিম্নরূপভাবে জানাচ্ছি যে;
১. বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিন তিন বার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বিরোধী দলের নেতা হিসেবেও দুবার নির্বাচিত হন। তিনি দেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপারসন। তার প্রয়াত স্বামী শহীদ জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের একজন সেক্টর কমান্ডার। বাংলাদেশে স্বাধীনতাযুদ্ধে তার অবদান স্বীকৃতস্বরূপ তাকে ‘বীর উত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
২. গত ৭ ডিসেম্বর ২০১৭, গণভবনে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে আপনি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু মানহানিকর বিবৃতি দিয়েছেন, যা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সম্প্রচারিত হয়েছে এবং সকল দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন পত্রিকা এবং অনেক সামাজিক মিডিয়া আউটলেটে মুদ্রিত ও প্রচারিত হয়েছে।
৩. উক্ত মিডিয়া ব্রিফিংকালে আপনি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা এবং বিদ্বেষপরায়ণ বিবৃতি দিয়েছেন; আপনি বলেছেন, সৌদি আরবে বেগম খালেদা জিয়া একটি শপিংমলের মালিক এবং সেখানে তার বিপুল সম্পদ রয়েছে এবং তিনি মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গেও জড়িত। আপনি তার পুত্রদের সম্পর্কেও মিথ্যা উক্তি করেছেন।
৪. আপনি বেগম খালেদা জিয়া এবং তার পুত্রদের সম্পর্কে যে অভিযোগ এনেছেন তা সাজানো, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিদ্বেষমূলক। বাংলাদেশের নির্দোষ ও পরিষ্কার ভাবমূর্তি সম্পন্ন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার সুনাম বিনষ্ট করার হীন উদ্দেশ্য পরিকল্পিভাবে আপনি এসব অভিযোগ এনেছেন।
আপনার এই মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিদ্বেষপূর্ণ বিবৃতি বাংলাদেশের মানুষ ও বিশ্বজনের কাছে তার ভাবমূর্তিকে খাটো করা অভিসন্ধিতে তৈরি। বেগম খালেদা জিয়া এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আপনার এই মিথ্যা অভিযোগ তার প্রতি অবমাননা এবং ঘৃণার সৃষ্টি এবং তাকে হাস্যকর করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
৫. বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আপনার এই অপবাদমূলক দীর্ঘ বিবৃতি পরিকল্পিভাবে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য এবং আপনার নিজের রাজনৈতিক সুবিধা লাভের হীন উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়েছে।
আপনার এই বেপরোয়া বিদ্বেষমূলক কটূক্তি একাধারে পরনিন্দা, অপবাদ, গ্লানিপূর্ণ এবং মানহানিকর, যা বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ সুনাম, সম্মান, সততা এবং মর্যাদাকে বিনষ্ট করার এবং দেশ ও বিদেশে তাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে খাটো করার হীন উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। এই মানহানিকর বিবৃতির কারণে অপূরণীয় লোকসান ও ক্ষতি হয়েছে, যার জন্য আইনত আপনি দায়ী।
উপরোক্ত বর্ণিত পরিপ্রেক্ষিতে, অত্র আইনি নোটিশের মাধ্যমে, আমরা আপনাকে বেগম খালেদা জিয়ার নিকট নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং উক্ত ক্ষমা আইন নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সকল জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন সংবাদপত্র এবং সামাজিকমাধ্যমে আউটলেটে যথাযথভাবে প্রকাশ ও প্রচার করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় আপনার বিদ্বেষপূর্ণ এবং মানহানিকর এবং কপট ও কুটিল বিবৃতির কারণে আপনার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নিমিত্তে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য আমাদের ওপর নির্দেশ রয়েছে।’