মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর | রাজধানী | রাজনীতি | শিরোনাম | সর্বশেষ » চারদিক থেকে ভয়াল দূর্ভিক্ষ ধেয়ে আসছে- রিজভী।। লালমোহন বিডিনিউজ
চারদিক থেকে ভয়াল দূর্ভিক্ষ ধেয়ে আসছে- রিজভী।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ: চারদিক থেকে ভয়াল দূর্ভিক্ষ ধেয়ে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, বর্তমানে দেশে খাদ্য সংকট চলছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংকের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। খাদ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রীরা যেভাবে মিথ্যাচার করছেন তাতে প্রকৃত ও প্রকট সংকট আড়াল করা যাবে না। ৭৪-এর মতো ভয়াল দূর্ভিক্ষ চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে। দেশ পরিচালনায় সরকারের লুটপাট নীতিই এর জন্য দায়ী। গতকাল নয়াপল্টন আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, বর্তমানে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে চালের দাম। চলতি সপ্তাহে এক লাফে প্রায় সব চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫টাকা। বর্তমানে মোটা চালের দাম ৫৫ টাকা। আর বিএনপির শাসনকালের শেষ দিনেও মোটা চালের দাম ছিল যোল টাকা। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ দিশেহারা ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। সরকারের তরফে মজুতদারি ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষনার পর গত দুদিনে আরও বেড়েছে চালের দাম। রিজভী বলেন, বানিজ্যমন্ত্রীর ঘোষনার পর দেশের বিভিন্নস্থানে যে অভিযান চলছে তা নিস্ফল অভিযানে পরিণত হয়েছে। কোথাও তারা অবৈধ চালের সন্ধান পায়নি। গণমাধ্যমের খবর হচ্ছেÑ সরকারি গোডাউন খালি, বেসরকারিভাবেও চালের তেমন মজুদ নেই। তারপরও প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন কোটি কোটি টন চালের মজুদ আছে। তাহলে চালের বাজারের অস্থিরতা কমছে না। আসলে সরকার প্রধান রাজনৈতিক টুর্নামেন্টে সকল দিকে হেরে এখন মিথ্যাচারের মাধ্যমে দেশবাসীর ক্ষুধা ও ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করেছে। রিজভী বলেন, বাংলাদেশে চালের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। সংস্থাটি বলেছে, গত তিন মাসে দেশে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের মানুষসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত হলেও বর্তমান শাসকগোষ্ঠী এখনও নির্বিকার। তারা শুধুমাত্র বিরোধী দল নিধনেই সদাতৎপর। আসল কথা হচ্ছে, চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই বলেই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। অবিলম্বে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে চালের সরবরাহ বাড়ানোর জোর দাবি জানাচ্ছি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়লেও সরকার এখন পর্যন্ত কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা খাবার ও পানির সংকটে ছটপট করছে। ক্যাম্পগুলোতে খাদ্য ও পানি নেই, চিকিৎসকার অভাবে আহত ও অসুস্থতরা প্রতিদিনই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাসহ বেসরকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বিএনপি রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে সেবা দিচ্ছে। কিন্তু সরকারী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয়ের নামে তাদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে অসহায় রোহিঙ্গাদের পূর্ণনিরাপত্তায় স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে আহবান জানাচ্ছি। রিজভী বলেণ, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে কক্সবাজারে কন্ট্রোল রুম (নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) গঠন করা হয়েছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ পর্যায়ক্রমে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। রিজভী বলেন, আসন্ন দুর্গাপুজাকে সামনে রেখে দেশব্যাপী আওয়ামী সন্ত্রাসী ও সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনীর তান্ডব এখন চরম মাত্রায় উপনীত হয়েছে। দুর্গাপুজার প্রাক্কালে দেশব্যাপী বিভিন্ন পুজা মন্ডপে প্রতিমা ভাঙ্গার উৎসবে মেতেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। মানিকগঞ্জে ১৫টি, নাটোরে ১৮টি এবং সাতক্ষীরা ও নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুজামন্ডপে ভাংচুর করেছে তারা। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ সময় তিনি দিনাজপুর জেলা বিএনপি নেতা বখতিয়ার আহমেদ কচি এবং কোতোয়ালী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেন।