শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » বিবিধ | শিরোনাম | সর্বশেষ » ত্রাণ বিতরণে বিশৃঙ্খলা, কেউ একাধিকবার পাচ্ছে কেউ একবারও পাচ্ছে না।।লালমোহন বিডিনিউজ
ত্রাণ বিতরণে বিশৃঙ্খলা, কেউ একাধিকবার পাচ্ছে কেউ একবারও পাচ্ছে না।।লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, নুরুল ইসলাম রাহাদ কক্সবাজার: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা অভুক্ত রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যার্থে নিয়ে আসা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। কেউ একাধিকবার পাচ্ছে আর কেউ একবারও পাচ্ছে না। সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে ত্রাণ বিতরণ করার কারনে হাজার হাজার রোহিঙ্গা দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এর ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গাড়ি চাপা পড়ে বালুখালী পান বাজার এলাকায় ২ শিশু ও ১ নারীর মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়াও সড়ক যত্রতত্র ত্রাণ বিতরণের কারনে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দীর্ঘ ৮৪ কিলোমিটার জুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়ে থাকে প্রতিনিয়ত। এতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রী সহ দুরপাল্লার যাত্রীরা চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
স্থানীয় পথচারীদের দাবি, প্রশাসন যদি তড়িৎ কোন পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে উখিয়া-টেকনাফ এলাকার ছাত্র/ছাত্রী, পথচারীরা ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার উখিয়ার কুতুপালং নতুন বস্তি এলাকা টিভি রিলে কেন্দ্রের পার্শ্বে দেখা যায়, স্থানীয় একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে কিছু যুবক ট্রাকে করে গার্মেন্টস এর কাপড় দিচ্ছে। এসময় হাজার হাজার রোহিঙ্গা দিকবেদিক ছোটাছুটি করছে।
বালূখালী এলাকার আকবর আহমদ জানান, সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ত্রাণ করার কারনে দুর্ঘটনা ঘটছে।
কথা হয় মিয়ানমারের মংডু তমবাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুশুক্কুর (৪৫)এর সাথে। তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন, দমনপীড়ন, গুলি করে নারী, পুরুষ, শিশু হত্যার কারনে জীবন বাঁচাতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে স্বপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে আসি। সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দীর্ঘ ৭দিন অবস্থান করার পর গত ২সেপ্টেম্বর পালংখালী আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করি। তিনি আরো বলেন, গত ১৯দিনে মাত্র ১ বেলা খাবার খেয়েছে তাঁর পরিবার। বিতরণকৃত ত্রাণ গুলো কেউ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছেনা বলে জানান তিনি।
কুতুপালং রাস্তার পাশে আশ্রয় নেওয়া বয়োবৃদ্ধ রোহিঙ্গা খুইল্যা মিয়া (৭৯) জানান, তার আশপাশে যারা আছে তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মালামাল পেয়ে থাকলেও আমি এই পর্যন্ত কিছুই পাইনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ১০ বছরের ২জন রোহিঙ্গা শিশু এবং শুক্রবার সকালে ২সন্তানের এক জননী মারা গেছে ত্রাণ নিতে গিয়ে। তবে তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। এভাবে সড়ক যানজট সৃষ্টি করে ত্রাণ বিতরণ বন্ধের দাবি জানান আরো অনেকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, যত্রতত্র ত্রাণ বিতরণের কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। আর অনেকে ত্রাণ বঞ্চিত হয়ে থাকে। ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে দেওয়া ত্রাণগুলো সুষ্ঠভাবে বিতরণের জন্য কুতুপালংয়ে কন্ট্রো রুম খোলা হয়েছে।