
শনিবার, ৮ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন | জেলার খবর | বিভাগের খবর | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার শিশু ভারত কারাগারে বন্দি !
ভোলার শিশু ভারত কারাগারে বন্দি !
লালমোহন বিডিনিউজ,চরফ্যাশন প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশনের আমান ও আসাদ নামের দুটি শিশু অপহরণ হয় চট্রগ্রাম থেকে । অপহৃত একটি শিশু ( আসাদ) কে পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হলে ও অপর শিশু (আমান) কে আজো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অপহৃত দুটি শিশু একই মায়ের সন্তান । অপহৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তাদের একটি শিশু উদ্ধার হলে ও অপর শিশুটি ভারত কারাগারে বন্ধি রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সিকিউরিটি ব্যাঞ্চ শিশুদের নাম ঠিকানা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শিশুদের পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এসবির উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই)আবুল হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ গ্রামের হাছান আলীর পুত্রের সাথে একই ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের ইউসুফ আলী হাওলাদারের কন্যা সুরমা আক্তারের বিয়ে হয় । ৩ ছেলে ও ১ কন্যা নিয়ে ছিল তাদের পরিবার।
সংসার চালানো ও সন্তানের লেখা পড়ার সুবাধে পরের ঘরে ঝি’র কাজ করেন ।
চাঁদগাও আবাসিক ৭নং রোড শমশের পাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বাসবাস করছেন। দু-ছেলেকে চট্টগ্রাম ওদুদিয়া ফজলুল করিম ওয়াবি মাদ্রাসায় লেখা পড়া করতে দেন । ২০১৩ সালের ৩০ জুন হঠাৎ করে তার সন্তান দুটি আমান উল্যাহ আরমান (৯) ও আসাদুল্লাহ রহমান (৭) বাসায় ফিরেনি।
ছেলেরা ফিরে না অপহৃত হয়েছে বলে পরিবারটি ইউনুছ, হারুন ও সামছুদ্দিন নামের তিনজনকে সন্দেহ করে।
এ ব্যাপারে চাঁদগাও থানায় সাধারণ ডায়রী করা হলেও পুলিশ কোন তথ্য বের করতে পারেনি।
অবশেষে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে দু- সহোদরের একজন আসাদ কে পাওয়া যায়।
জনৈক সিএনজির ড্রাইভার হেলাল তাকে (চট্টগ্রামের সুনিয়া) মাদ্রাসার রেল সড়কের পাশে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আগ্রাবাদ শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেন ।
আহত শিশুর পরিচয় না পাওয়ায় ১ বছর পর্যন্ত হেলাল শিশুকে লালন পালন করে ।
অবশেষে শিশু আসাদ কে তার মাদ্রাসার শিক্ষক খুঁজে পেয়ে মা সুরমাকে সংবাদ দেয়া হয়।
আসাদের বাবা আ: আলী শিশুটির কাছে গেলে শিশুটি বলে, আমাকে আপনার বন্ধু ইউনুছ নিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে ইউনুছকে চাদঁগা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার তথ্য মোতাবেক সামছুদ্দিনকে আটক করে পুলিশ।
অবশেষে অজ্ঞাত কারণে পুলিশ অপহৃত আমান উদ্ধার না করে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
হতভাগ্য মা সুরমা আক্তার জানান, চলতি বছরের ১১জুন/১৭ তারিখে চট্টগ্রাম স্থনীয় সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মাহবুব আলম একটি মসজিদে বলেন, শিশু আমান ভারত কারাগারে বন্ধি। সংবাদের পেয়ে মা সুরমা কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করেন ।
পরবর্তীতে ডিভি পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক আবুল হোসেনের কাছে গিয়ে সন্তানের কাগজপত্র দেখানো হয়। ভারত সরকার বাংলাদশে সরকারের স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শিশু গুলোর নাম ঠিকানা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। ১ জুলাই/১৭ সুরমা আক্তার ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমির হোসেন একত্রিত হয়ে সকল কাগপত্রে সঠিক নাম ঠিকানা দিয়ে এসবির কাছে প্রেরণ করেন ।
২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে চট্টগ্রাম চাদঁগাও থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এস.আই) আরিফ ও শহিদুল ফোর্স নিয়ে অপহরণকারী ইউনুছকে আটক করেছে।
তার তথ্য মতে সামছুদ্দিনকে ও তার বাসা থেকে আটক করে এবং অজ্ঞাত কারণে তাদের কে ছেড়ে ও দেয় পুলিশ । ফিরে আসা শিশু আসাদ জানায়, আমাদেরকে তারা ধরে ঢাকায় নিয়ে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। আমি পালিয়ে আসলেও ভাই আর আসতে পারেনি।
সুরমা আক্তার জানায়, ডিবি স্যারে বলেছে বাংলাদেশের ৩৫টি শিশু ভারত কারাগারে রয়েছে। তার মধ্যে আমার সন্তান আমান ও রয়েছে। তাদের সঠিক নাম ঠিকানা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। সঠিক নাম ঠিকানা হলে তাদেরকে ফিরত দেয়া হবে বলে স্যার আমাদেরকে জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের শাখা ব্রঞ্চ চট্টগ্রামের এসবি’র উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এস আই) আবুল হোসেন বলেন, আমান ভারত কারাগারে রয়েছে। আমাদের কাছে নাম ঠিকানা সঠিক কিনা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। আমি তা যাচাই-বাছাই করে পাঠিয়ে দিয়েছি।
vs/ss