বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০১৫
প্রথম পাতা » বিবিধ | শিরোনাম | সর্বশেষ » পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় মাদারীপুরে গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন
পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় মাদারীপুরে গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন
মাদারীপুর সংবাদদাতা : পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার পান্তাপাড়া গ্রামে রেশমা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে তার স্বামী।
তার হাত-পা বেঁধে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় তিনি যাতে চিৎকার করতে না পারে সেজন্য তার মুখ সুপার-গ্লু দিয়ে আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে।
নির্যাতিতা গৃহবধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রেশমা গোপালপুর ইউনিয়নের ধুয়াসার গ্রামের আলাউদ্দিন মাতুব্বরের মেয়ে।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে ডাসার থানার বালিগ্রাম ইউনিয়নের পান্তাপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ তালুকদারের ছেলে আকাশ ওরফে তারা তালুকদারে সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শান্তিতেই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। এরই মধ্যে রেশমার গর্ভে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে জন্ম নেয়।
আকাশ গত তিন বছর আগে লাকি নামে একটি মেয়ের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে । সংসারে শুরু হয় অশান্তি। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে রেশমার স্বামী আকাশ তালুকদার তার হাত-পা বেঁধে, মুখ সুপার-গ্লু দিয়ে বন্ধ করে গোপন অঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনার পর থেকে স্বামী আকাশ তালুকদার পলাতক রয়েছে।
নির্যাতিতা গৃহবধূ রেশমা আক্তার জানান, তিন বছর আগে লাকি নামে একটি মেয়ের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে আকাশ। সে ওই মেয়েকে বিভিন্ন সময় বাড়িতে নিয়ে এসে সময় কাটায়। আমি তাকে বাধা দিলে প্রায়ই আমাকে মারধর করত। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে আমার মাথাব্যথা শুরু হয়। এসময় ও (আকাশ) আমাকে তিনটি ট্যাবলেট খেতে দিয়ে বলে খেলে মাথাব্যথা কমে যাবে। আমি ট্যাবলেটগুলো খাওয়ার পরে ঘুমিয়ে পড়ি। এরপর আমার মুখ সুপার-গ্লু দিয়ে বন্ধ করে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাকা দেয়।
নির্যাতিতা গৃহবধূর মা তাসলিমা বেগম বলেন, আমরা এই বর্বরটার (আকাশের) বিচার চাই। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ, মেয়ের চিকিৎসা খরচের টাকা জোগাড় করতে পারছিনা, মামলা মোকদ্দমা করতে তো অনেক টাকা লাগবে।
ডাসার থানার ওসি এমদাদুল হক জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই । যদি নির্যাতিতা গৃহবধূর পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়া হয় তাহলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করলে দেখি বিভিন্ন অঙ্গে নির্যাতনের ক্ষত। সিগারেটের ছ্যাকার দাগ। ওর মুখ সুপার-গ্লু দিয়ে বন্ধ করা ছিল।’