ভোলায় ব্যবসায়ী মুছা হত্যার ১৭ দিন পর প্রধান আসামি মহসিন গ্রেফতার

লালমোহন বিডিনিউজ,জুয়েল সাহা : ভোলা শহরের পদ্মা মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির হিসাব রক্ষক ও ব্যবসায়ী নেতা চাঞ্চল্যকর মুছা হত্যাকান্ডের ১৭ দিন পর মামলার প্রধান আসামি ও ওই মার্কেটের পার্সে তরকারি ব্যবসায়ী মহসিনকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ভোলার সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চরশিফলী গ্রামের আসামির বাড়ি থেকে তাকে  গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে  ভোলা পুলিশ সুপার  মোঃ মোকতার হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত ২৬ মার্চ রবিবার সারা দেশের মতো দ্বীপ জেলা ভোলায়ও যখন মহান স্বাধীনতা দিবস পালনে ব্যস্ত ছিল ঠিক সেদিন রাতে পদ্মা মার্কেটে কাঁচা বাজারের সমিতির কার্যালয়ে ঢুকে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির হিসাবে রক্ষক মুছাকে হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডর পর থেকেই হত্যাকারীকে চিহ্নিত করে তাকে গ্রেফতারের জন্য থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশের পর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ হত্যাকারীকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে। ‘হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে ডিজিটাল ও এনালগ পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়েছিল। হত্যাকান্ডের পর থেকে হত্যাকারী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর ও রাজশাহীতে অবস্থান করেন। পুলিশ যখন জানতে পারে মহসিন  ভোলায় এসেছে তখনই গ্রেফতারের ফাঁদ পাতা হয়। মহসিন পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের ঘটনা স্বীকার করেছেন। ‘তিনি বলেন, ‘হত্যাকারী মহসিন পুলিশের কাছে বলেছেন যে তিনি প্রতিনিয়তই জুয়া খেলতেন। জুয়া খেলে একপর্যায়ে জুয়ার টাকা শেষ হয়ে গেলে তিনি মুছাকে হত্যা করে তার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কারণ মহসিন নিজেও একজন তরকারি ব্যবসায়ী এবং কাঁচা বাজার সমিতির সদস্য। তার ধারণা ছিল ২৪ মার্চ  থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সরকারি ছুটি ছিল। তাই তার কাছে অনেক টাকা জমা হতে পারে। এই ভেবে বাজার থেকে ৬০ টাকা দিয়ে একটি ছুরি কিনে ওইদিন রাতে মুছার গলায় প্রথমে একটি কোপ দেন। মুছা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে দ্বিতীয় কোপ দিলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এরপর আলমারি খুলে দেখতে পান সেখানে কোনো টাকা নেই। পরে মুছার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। ভোলা সদর মডেল থানার ওসি মীর খায়রুল কবির জানান, গত ২৬ মার্চ রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্যবসায়ী মুছা বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সমিতির টাকা তুলে কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে বসে হিসাব করছিলেন। এ সময় কাঁচা বাজারের পদ্মা মার্কেটের দোতলায় সমিতির কার্যালয়ে ঢুকে মুছাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে করে হত্যা করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে টাকা লুট করা হয়। ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে মিজান বাদী হয়ে ২৮ মার্চ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।