রবিবার, ৬ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ঘূর্ণিঝড় নাডার প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও বাতাসে চরফ্যাসনে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় নাডার প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও বাতাসে চরফ্যাসনে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি
লালমোহন বিডিনিউজ ,কামরুজ্জমান শাহীন,চরফ্যাসন :চরফ্যাসনে গত চার দিন ধরে একটানা বৃষ্টি ও বাতাসের তোড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমন ধানের শীর্ষ ধুমড়ে মুচরে মাটি ও পানির সাথে মিশে দিয়েছে। এতে করে চিন্তিত হয়ে পরেছে সাধারন কৃষকরা। এবছর ধানের বাম্পার ফলনও হলে কিন্তু ফসল ঘরে উঠতে না উঠতেই প্রকৃতিক দুর্যোগে কৃষকের মুখের হাঁসি কেড়ে নিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে একটানা বৃষ্টি ও বাতাসের তোড়ে বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীর্ষ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টানা বৃষ্টি কৃষকের মুখের হাঁসি কেড়ে নিয়েছে।
চরফ্যাসন কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চরফ্যাসনে ৭৪ হাজার ২৫০ হেক্টর আবাদি জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা। চরফ্যাসনের বিভিন্ন ইউনিয়নে ও উপকূল এলাকার গ্রামের অধিকাংশ জমির ধানের শীর্ষ বের হওয়ার পর পরই বৃষ্টি ও বাতাসের প্রভাবে ধানের চারাগুলো মাটি ও পানির সাথে ধুমড়ে মুচরে পড়ে আছে। কিছু কিছু ধান গাছ দাড়িয়ে আছে। ধানের চারাগুলো পড়ে যাওয়ার কারনে পড়ে যাওয়া সকল জমির ধানের শীর্ষ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষকেরা তাদের কাঙ্খিত ধান পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছে। এতে কৃষকের ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে।
জানা যায়, কৃষকেরা বাড়ি ধান,কাজল সাইল জমি চাষ করার জন্য জমি লগ্নি,বীজ সংরক্ষণ,বীজ প্রস্তুত,জমি তৈরী,চারা রোপন,আগাছা পরিষ্কারসহ ধান কাটার আগ পর্যন্ত প্রতি একর জমিতে উৎপাদন খরচ হয়েছে ২০ হাজার ৪শত টাকা। ধান পড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা অর্ধেকের চেয়ে এখন কমে যাবে। এখন কৃষকের লোকসান গুণতে হবে। একই চিত্র পুরো উপজেলা বেশীর ভাগ ইউনিয়নের কৃষকদের।
চরফ্যাসনের শশীভূষণ গ্রামের কৃষক মোঃ মাকসুদ মৃধা ও এওয়াজপুর গ্রামের কৃষক মাষ্টার রফিক জানান, চাষ করার জন্য প্রতি একর জমি লগ্নি নগদ ১০ হাজার টাকা,জমি চাষ খরচ ২ হাজার ১শত টাকা,বীজতলা তৈরি খরচ ৩শত টাকা ,বীজধান ৪শত টাকা,ধানের চারা রোপন খরচ (১৮জন শ্রমিক চাউলসহ) ৫হাজার ৪শত টাকা,আগাছা পরিস্কার খরচ (৬জন শ্রমিক চাউলসহ) ৯শত টাকা,সার ৮শত পঞ্চাশ ও কীটনাশক ৫শত টাকা খরচ হয়েছে। সর্বমোট একর প্রতি ধানকাটার আগ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২০ হাজা ৪শত টাকা। প্রতি একর জমিতে গড়ে ধান উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ মন। যার বর্তমান মূল্য ২২ হাজার ৫শত টাকা(প্রতিমন ধান ৪শত ৫০ টাকা ধরে)। কিন্তু হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধান পড়ে যাওয়ায় উৎপাদন লক্ষ মাত্রা অর্ধেকের চেয়ে কমে আসবে। যা এখন কৃষকের লোকসানের হার আরও বেড়ে যাবে। দায় দেনা করে কৃষকেরা মাঠে ধান চাষ করছেন। কৃষকেরা কিভাবে এই লোকসান ফুসিয়ে আনবেন তার কোন পথ পাচ্ছেনা। কৃষকেরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়ছেন । সরকার কিভাবে কৃষকদের বাচাবেন সেই দিকে তাকিয়ে আছেন কৃষকেরা।
এব্যাপারে চরফ্যাসন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবু মনোতোশ সিকদার জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাতাস ও বৃষ্টির কারনে ধান পড়ে যাওয়ায় ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রকৃত ক্ষতির পরিমান উদ্ধর্তন কর্তপক্ষকে বিষযটি অবহিত করব। আমরা সরজমিনে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি।
এদিকে গত চার দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও বাতাসের তোড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমন ধানের শীর্ষ ধুমড়ে মুচরে মাটি ও পানির সাথে মিশে দিয়েছে। অধিকাংশ ধানের র্শীষ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে চিন্তিত হয়ে পরেছে সাধারন কৃষকরা।