সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » শিরোনাম | সর্বশেষ » আরো কত বয়স হলে এদের ভাগ্যে জুটবে বয়স্কভাতার কার্ড
আরো কত বয়স হলে এদের ভাগ্যে জুটবে বয়স্কভাতার কার্ড
লালমোহন বিডিনিউজ ,কামরুজ্জমান শাহীন,ভোলা : বয়স কত হলে এদের ভাগ্যে জুটবে একটি বয়স্কভাতার কার্ড?’ এমন প্রশ্নই করেন ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার জিন্নাগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বৃদ্ধা নুরজাহান বেগম ও রসুলপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বৃদ্ধ আঃ মালেক রাড়ী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের জিন্নাগর গ্রামের হতদরিদ্র অন্ধ নুরজাহান বেগমের বয়স বর্তমানে প্রায় ৯৫ বছর। উপজেলার শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের শশীভূষন গ্রামের আঃ মালেক রাড়ীর বয়স প্রায় ৮০ বছর। এ বয়সেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি একটি বয়স্কভাতার কার্ড। নুরজাহান বেগমের নিজস্ব তেমন কোন সম্পদ নেই ভিটে বাড়ী ছাড়া। একই অবস্থা বৃদ্ধ আঃ মালেক রাড়ীর।
নুরজাহান বেগম তিন ছেলে সন্তানের মা।ছেলেরা বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছেন। এমতবস্থায় বৃদ্ধা তার বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে নিজ বাড়ীতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অপরদিকে আট সন্তানের জনক বৃদ্ধ আঃ মালেক অতিকষ্টে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এখনো তার সংসারে একটি মেয়ে আছে। চাঁর ছেলে বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছেন। বৃদ্ধ আঃ মালেক রাড়ী এমতবস্থায় তার বৃদ্ধা স্ত্রী মানিকজানকে নিয়ে কোন রকম জীবনযাপন করছেন।
জানা যায়, বৃদ্ধা নুরজাহান বেগম ৭-৮ বছর ধরে সদর ইউনিয়নের মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে একটি বয়স্কভাতার কার্ডের জন্য ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু সামনে বার দেব, দেব বলে আজও মেলেনি সেই কার্ড। হতদরিদ্র এ বৃদ্ধা জানান, আমি এক সময় ভাল কাজ করতে পারতাম,এখন আমি চোখেও দেখিনা। তাই কোন কাজও করতে পারিনা। আমি আজ জীবন যুদ্ধে পরাজিত।
এদিকে বৃদ্ধ আঃ মালেক রাড়ী জানান, ৪-৫ বছর ধরে এলাকার মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে অনেক বার গিয়েছি একটি বয়স্কভাতার কার্ডের জন্য। শুধু দেবে বলেই বিদায় করে দিয়েছে।আজও হলোনা সেই কার্ড। সরেজমিনে দেখা যায়, বৃদ্ধা নুরজাহান দুই চোখে ঠিকমত দেখতে পান না। তা সত্ত্বেও পেটের খাবারের জন্য কারো না কারো কাছে হাত পাততে হয়। বৃদ্ধ আঃ মালেক রাড়ীর ছেলেরা যা দেয় তা দিয়েও মোটামুটি সংসার চলে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রশ্ন আর কত বয়স হলে তারা বয়স্কভাতা কার্ড পাবে?’নুরজাহান বেগম ও আঃ মালেক রাড়ী চরফ্যাসন-মনপুরার সংসদ সদস্য ও বন ও পরিবেশ উপ-মন্ত্রীর কাছে তাদের এই দুর্দিনে একটি বয়স্কভাতার কার্ড পাওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
এব্যাপারে চরফ্যাসন প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক মনির আহম্মেদ শুভ্রু বলেন, এদের এই বয়সে একটি বয়স্কভাতার কার্ডসহ পূনর্বাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এগিয়ে আসার আহবান জানাই।