রবিবার, ৭ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন | শিরোনাম | সর্বশেষ » চরফ্যাসনে মাদকের বিষাক্ত আগ্রাসনে বিপথগামী যুবসমাজ
চরফ্যাসনে মাদকের বিষাক্ত আগ্রাসনে বিপথগামী যুবসমাজ
লালমোহন বিডিনিউজ,চরফ্যাসন প্রতিনিধি:চরফ্যাসনে মাদকবিরোধী সভা-সেমিনার ও বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য আটক ও এলাকার মসজিদ-মন্দির-গির্জায় মাদক সেবনের কুফল, অপব্যবহার ও মাদক পাচাররোধে জনসাধারণকে সচেতন করার পরও কোনোক্রমেই রোধ করা যাচ্ছে না মাদক সেবন ও বিক্রয়। বরং নিত্যনতুনভাবে মাদকের থাবায় লীন হচ্ছে স্কুলপড়ুয়া ছাত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এতে মেয়েরাও পিছিয়ে নেই। এখনই শক্ত হাতে এর লাগাম টেনে না ধরলে ধ্বংস হয়ে যাবে যুবসমাজ। তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে সভা-সেমিনারে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন সমাজ। মাদকের বিষাক্ত ছোবলে নাকাল উপজেলার বিরাট একটি অংশ। মাদকসামগ্রীর এমন কোনো উপাদান নেই যা এ উপজেলায় পাওয়া যায় না। হেরোইন, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, ইয়াবা কি নেই? হাত বাড়ালেই সব পাওয়া যায়। সহজলভ্য এসব উপাদান সরবরাহে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। প্রকাশ্য এবং গোপনীয় এমন কিছু স্থান আছে যেখানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকের বিরাট একটা চালান এসে মজুদ হয়। গত কিছুদিন আগে দেশের প্রথম সারির একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, দেশের ৫১টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অবাধে মাদক ঢুকছে। ছড়িয়ে পড়ছে তা রাজধানীসহ দেশের সবকটি জেলা ও উপজেলা শহরে। সেখান থেকে এ মাদক যাচ্ছে পাড়া-মহল্লা আর গ্রাম-গঞ্জে। দেশজুড়ে মাদক সিন্ডিকেটের ছড়িয়ে থাকা শক্তিশালী জালের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে মাদক। তারই ধারাবাহিকতায় চরফ্যাসন উপজেলা শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবাধে অনুপ্রবেশ ঘটছে মাদক উপাদানের। আর এসব মাদক উপাদান নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা বেশ প্রভাবশালী। কথিত এই প্রভাবশালী রথি-মহারথিরা সবসময় থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশি অভিযানে যারা ধরা পড়ে তারা নেহায়েৎ বহনকারী মাত্র। আর ধৃত ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিতে কথিত বড় ভাইয়েরা পর্দার আড়ালে থেকে দেন-দরবার শুরু করেন। আজ থেকে প্রায় ১৫/২০ বছর আগে শুধু চোলাই মদ আর গাঁজা পাওয়া যেতো। কিন্তু কালের বিবর্তনের ছোঁয়ায় এখানকার মদ্যপায়ীরা এখনো সনাতনী স্বাদ নেবে কেন? কারণ এখন নিত্যনতুন সব মাদকই তো হাতের নাগালে। বর্তমানে যুবসমাজের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে ইয়াবার নীল থাবা। দিন দিন কাবু হয়ে যাচ্ছে এই উপজেলার ছাত্র ও যুবসমাজ।
চরফ্যাশন-মনপুরার সংসদ সদস্য পরিবেশ ও বন উপ-মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব মাদকের বিরুদ্ধে কাঠোর অবস্থানের কথা জানালেও দলীয় কিছু নেতাকর্মীরা জড়িত থাকায় স্থানীয় প্রশাসন শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থায় রয়েছে। এছারাও উপজেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রায় প্রতিটি সভা-সমাবেশে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে থাকেন। এদিকে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সভা-সেমিনারেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন তাদের কার্যক্রম। প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় না আনার ফলে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে ইয়াবা ব্যবসার সিন্ডিকেট। উপজেলার সচেতন মহল দেশের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে যুবসমাজকে রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষে দ্রুত মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালানোর জোর দাবি জানিয়েছেন। এক অনুসন্ধানে দেখা যায় চরফ্যাসনসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বর্তমানে মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে।