মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » বোরহানউদ্দিন | শিরোনাম | সর্বশেষ » বোরহানউদ্দিনে মধ্যযুগীয় কায়দায় কিশোরকে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে পুলিশে চালান
বোরহানউদ্দিনে মধ্যযুগীয় কায়দায় কিশোরকে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে পুলিশে চালান
লালমোহন বিডিনিউজ ,ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার বোরহানউদ্দিনে সোহরাব (১৬) নামের এক কিশোরকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে রাতভর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্র্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ফুল কাচিয়া গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সোহরাব স্থানীয় প্রাবাসী দেলওয়ারের ছোট ছেলে।
স্থানীয় ও সোহরাবের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার রাত অনুমানিক ১০ টায় স্থানীয় ইয়াছিন ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা সোহরাবকে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে পাশ্বর্তী মহিউদ্দিনের ঘরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে রাতভর নির্যাতন করে। সকালে সোহরাবের মামা শাজাহান খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে ভাগ্নের এ অবস্থা দেখে মহিউদ্দিনকে জিজ্ঞেস করলে সেখানে থাকা ইয়াসিন, জুয়েল চৌকিদার, কবির মিঝি, মহিউদ্দিন সহ কয়েকজন তাকে বলছেন সোহরাব মহিউদ্দিনের বাসায় নেশা করতে গেলে তারা তাকে আটক করে।
সোহরাবের বড় ভাই জাকির, মামি সালেহা ও মামা শাজাহান জানায়, চৌকিদার জুয়েলের দীর্ঘ দিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা ও জ্বীন সেজে মানুষের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চৌকিদার জুয়েল সদ্য গ্রাম পুলিশ হওয়ায় তার ব্যবসা আরো জমে উঠে। সোহরাব এসবের প্রতিবাদ করলে জুয়েল, ইয়াসিনের নেতৃত্বে ৭/৮ জন লোক মিলে রাতভর এমন কায়দায় সোহরাবের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায় যা জাহেলী যুগকে হার মানায়। এমনকি সোহরাব হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় তাদের কাছে পানি চাইলে তারা তাকে পানি না দিয়ে প্রশ্রাব পান করতে দেয়। রাতভর অমানুষিক নির্যাতনের ফলে সকাল বেলা সোহরাব দুর্বল হয়ে পরলে তার হাতে ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশকে খবর দিয়ে তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে পুলিশে সোপর্দ করে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমারা তাকে কোন মারধর করিনি সোহরাব আমাদের ঘরে এসে ঘরের দরজা ধাক্কা-ধাক্কি করে এবং আমাদেরকে মেরে ফেলার কথা বললে আমারা তাকে আটকিয়ে রাখি এবং ধ্বস্তা-ধ্বস্তি করলে আমরা তাকে বেঁধে রেখে চৌকিদারকে খবর দিলে চৌকিদার এসে তাকে মারধর করে। তবে স্থানীয় চৌকিদার জুয়েল মারধর, জ্বীন ও ইয়াবা ব্যবসার কথা অস্বীকার করেন।
এব্যাপারে স্থানীয় মহিলা মেম্বার সালেহা বেগম জানান, আমি খবর শুনে মহিউদ্দিনের বাড়িতে গেলে সোহরাবকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখে মহিউদ্দিনকে জিজ্ঞেস করলে তারা আমাকে অপমান করে সেখান থেকে চলে যেতে বলে তাই আমি সেখান থেকে চলে আসি।
এব্যাপারে বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন কৃষ্ণ রায় চৌধুরী জানায়, ঘটনার পর দিন সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহরাবের নিকট ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়ায় পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তার নামে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।