শুক্রবার, ২৫ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » ভোলা | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুই দিনে শতাধিক আহত
ভোলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুই দিনে শতাধিক আহত
লালমোহন বিডিনিউজ ,নিজস্ব সংবাদদাতা : ভোলায় নির্বাচন পরবর্তী গত দুই দিনে সহিংস হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত শতাধিক আহত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে গুরুতর রোগীদের হাসপাতালেও রোগীরা সিট পাচ্ছে না। গুরুতরদের বরিশাল হাসপাতালে প্রেরন করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে,ভোলার সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের পুর্ব বাপ্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ইউপি মেম্বার প্রার্থী মোঃ ফারুকের লোকজন প্রতিপক্ষ মেম্বার প্রার্থী নিরব হোসেনের সমর্থর্ক মোশারেফ হোসেনের বাড়িতে বুধবার গভির রাতে হামলা চালিয়ে ঘর ভাংচুর করে। এ সময় কয়েক দফায় মোশারেফ হোসেন ও তার ছেলে জাকির হোসেনকে মারধর করে। গুরুতর অবস্থায় এম্বুলেন্স যোগে হাসপাতালে নেয়ার সময় দ্বিতীয় দফা হামলা চালানো হয়। এসময় মোশারেফ হোসেনর অপর ছেলে মনির হোসেন (৩৫) কে এম্বুলেন্স থেকে অপহরন করে নিয়ে যায়। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে গেলে মনির হোসেনের স্ত্রী সুরমাকে লাঞ্চিত করা হয়। রাতভর এলাকার সাবেক মেম্বার জয়নালের বাসায় একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করে সকালে চৌদ্দঘর এলাকায় ফেলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে আহতরা এখন ভোলা সদর হাসাতালে চিকিৎসাধিন আছে।আহতরা জানান, সাবেক মেম্বার জয়নাল হোসেনের ভাতিজা রিপন শিকাদার, রাজু, কাঞ্চন ও সাজুসহ কয়েকজন কয়েক দফা মারধর করেছে।
এদিকে একই উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের চরকালী গ্রামে সাজিবাড়ির সামনে বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টায় পরাজিত সদস্য প্রার্থী মাইনুদ্দিন সাজি(মোরগ) ও মো. ইউসুফের সমর্থকদের মধ্যে (টিউবওয়েল) সংঘর্ষ বাঁধে। এতে ১০জন আহত হয়েছে। আহতরা ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন আছে।
বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় চরফ্যাশন উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মাদ্রাজ গ্রামে সদস্য প্রার্থী বিজয়ী ফারুক শিকদারের লোকজনের সংঙ্গে পরাজিত কামরুল ইসলামের লোকজনের সংঘর্ষে ১৫জন আহত হয়েছে। একই উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের হামিদপুরের বিজয়ী সদস্য আক্তার চৌকিদারকে ভোট না দেওয়ায় পরাজিত সদস্য প্রার্থী জাকির হোসেন মাঝির সমর্থকদের পিটিয়ে ২০জনকে জখম করেছে।
গত বুধবার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান সেলিম হাওলাদার ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
এদিকে ভোলা হাসপাতালে বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংস-সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত রোগী ভর্তি হচ্ছে। একই অবস্থা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
অন্যদিকে ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলা কাচিয়া ইউনিয়নের চকঢোষ ৯নং ওয়ার্ডের বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী মোঃ জসিম উদ্দিনের সমর্থকদের উপর নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরদিনে দফায় দফায় হামলা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে এ মেম্বার প্রার্থীর ৩০ জন সমর্থক আহত হয়েছে। এছাড়া দুই শিক্ষার্থীও এ হামলা শিকার হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েক জনকে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম ও জরুরী বিভাগের কর্তব্যরতরা সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা-সংঘর্ষে আহত গত দুদিনে (২৩ ও ২৪ মার্চ) ৮০জন চিকিৎসা নিয়েছে।
ভোলার পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, যেখানে সংঘাত-সংঘর্ষ চলছে সেখানেই পুলিশ যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। জেলায় র্যাব ও বিজিবি রয়েছে। নির্বাচনত্তোর সহিংস ঘটনা সামাল দেওয়ার জন্যে রাজনৈতিক নেতাদের বলা হচ্ছে।