সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » মনপুরা | শিরোনাম | সর্বশেষ » মনপুরা হাসপাতালে বেহাল দশা থেকে মুক্তির আশা লক্ষাধিক মানুষের
মনপুরা হাসপাতালে বেহাল দশা থেকে মুক্তির আশা লক্ষাধিক মানুষের
লালমোহন বিডিনিউজ,ভোলা প্রতিনিধি :ভোলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরা হাসপাতালটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায়। কর্মকর্তা আসেন আবার কর্মকর্তা চলে যান। কিন্তু কোন কর্মকর্তাই এই সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটির দিকে নজর দেননি।
বতমানে নতুন কর্মকর্তা যোগদানের পরই হাসপাতালের চেহারা এবং সেবার মান পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। এভাবে চলতে থাকলে মনপুরা হাসপাতালে এসে রোগীরা মনের মত সেবা পাবেন এবং হাসপাতালের বেহাল দশা থেকে মুক্তির আশা করছেন লক্ষাধিক মানুষ।
উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের জন্য স্থাপিত হাসপাতালটি দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল দশায় চলছিল। হাসপাতালটি ৫১ সয্যায় উন্নীত করা হলেও এখনও চলছে ৩১ সয্যায় ।
৯ জন ডাক্তারের স্থলে বেশীর ভাগ সময়ে কাজ করেন ১জন। মাঝে মাঝে ২/৩ জনও থাকতে দেখা যায়। এক সাথে সকল ডাক্তারের কার্যক্রম মনপুরা হাসপাতালের রোগীরা দেখেনি কোনদিন। ৯জন নার্সের স্থলে দীর্ঘদিন ধরে ২ জন নার্স পালাক্রমে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া হাসপাতালের মোট ৮০টি পদে কোন জনবল নেই। এক্সরে মেশিনের কোন ব্যবস্থা নেই। প্যাথলজির কোন সুবিধাই পাচ্ছেননা এখানের রোগীরা। অক্সিজেনের সিলিন্ডার বেশীরভাগ সময়ে না থাকার কথাই শোনা যায়। এম্বুলেন্সও নানান কারনে বিকল-অচল থাকে বেশীর ভাগ সময়ে। দ্বিতীয় তলায় ভর্তিকৃত রোগীরা মানবেতরভাবে সেবা নিতে হয়। এখানের লকারগুলো ভাঙা-চোরা, ফ্যানের ব্যবস্থা নেই।
এছাড়া অফিস আওয়ারে ফিস দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। এভাবেই যখন মনপুরা হাসপাতালটি চলছিল ঠিক সেই সময়ে ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি নিয়ে আসেন ডা. মাহমুদুর রশীদ। এসেই তিনি উদ্যোগ নিলেন মনপুরা হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধির এবং নানাবিদ সমস্যা থেকে উত্তোরনের। প্রথমে বসলেন মনপুরা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে। এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি মিসেস সেলিনা আক্তার চৌধূরী এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ হোসেন খাঁন ও মনপুরা স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন কমিটির। হাসপাতাল স্থাপনের পর থেকে এই প্রথম বারের মত এই কমিটি মিটিং করলেন। উভয় সভায় হাসপাতালের নানাবিদ সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি সকলের সর্বাত্মক সহযোগীতা কামনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ হোসেন খাঁন বলেন, হাসপাতালের যাবতীয় সমস্যা দেখে তা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন কমিটি রয়েছে। তারা এবিষয়ে এগিয়ে আসলে ভালো হয়। তাছাড়া যেসব এনজিও স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কাজ করেন তাদের সহযোগীতাও নেওয়া যেতে পারে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশীদ বলেন, মনপুরা হাসপাতালের অনেক সমস্যা রয়েছে। আমরা সকল সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও সমাধানের উদ্যোগ নিতে দোষ নেই। গর্ভবতী মায়েদের কথা চিন্তা করে একাট জারী গান রচনা করে স্বকন্ঠে ধারনও করা হয়েছে। এজারী গান নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে জারী গান পরিবেশনের মাধ্যমে সকলকে সচেতন করার চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি মিসেস সেলিনা আক্তার চৌধূরী বলেন, মনপুরা হাসপাতালের সমস্যা রয়েছে, এটা সকলেই জানেন। তবে যে সমস্যা রয়েছে তা থেকে বের হয়ে আসা কোন কঠিন কাজ নয়। যখন যেভাবে প্রয়োজন , তখনই সার্বিক সহযোগীতা করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন।