রবিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » শিক্ষা | শিরোনাম | সর্বশেষ » শিক্ষকদের গ্রেড-পেতে কমিটির অনুমোদন লাগবে
শিক্ষকদের গ্রেড-পেতে কমিটির অনুমোদন লাগবে
লালমোহন বিডিনিউজ , সোহেল ঢাকা : বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের গ্রেড-১ এবং গ্রেড-২-তে যেতে সরকারের করা কমিটির অনুমোদন লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি অনুমোদন দিলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় তা কার্যকর করতে পারবে।
অন্যদিকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের (সরকারি কলেজশিক্ষক) অধ্যাপকেরা গ্রেড ৩–এ যাওয়ার জন্য নিয়োগ ও পদোন্নতি বিধিমালা সংশোধন করতে হবে।
বেতনবৈষম্য দূরীকরণ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশের আলোকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ বিভাগ। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষাসচিবকে চিঠি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ১৫ ডিসেম্বর নতুন স্কেল ঘোষণার দিনেই এই চিঠি দেওয়া হয়। একই দিনে জাতীয় অধ্যাপকদের বেতন জ্যেষ্ঠ সচিবদের সমান করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়।
সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, যেভাবে বলা হচ্ছে তাতে অধ্যাপকদের গ্রেড ১–এ যাওয়ার সুযোগ অর্ধেক কমে যাবে। কারণ, বর্তমানে মোট অধ্যাপকদের ২৫ শতাংশ গ্রেড ১–এ যেতে পারেন। সেখানে এখন প্রথমে গ্রেড-২ ভুক্ত করে তাঁদের থেকে ২৫ শতাংশ অধ্যাপককে গ্রেড-১-এর কথা বলা হচ্ছে। শিক্ষক সমাজের কাছে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষকেরা যে পন্থা অবলম্বন করতে বলবেন, সেটাই করা হবে।
আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। তিনি জাতীয় অধ্যাপকদের জ্যেষ্ঠ সচিবদের সমান বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন।
অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা তৃতীয় গ্রেডভুক্ত। পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে তাঁরা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে গ্রেড-১-এর বেতন পান। জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫-এর সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বিলুপ্ত হওয়ায় নির্দিষ্ট মেনে গ্রেড-৩ ভুক্ত অধ্যাপকেরা গ্রেড-২ ও পরে গ্রেড-১-এর বেতন পাবেন। গ্রেড-১ ভুক্ত অধ্যাপকের সংখ্যা গ্রেড-২ ভুক্ত যত অধ্যাপক আছেন তাঁর ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। আর যেহেতু গ্রেড-২ ও গ্রেড-১-এ বেতনের বিষয়ের সঙ্গে সরকারের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আর্থিক সংশ্লেষ জড়িত, সে জন্য এই দুই গ্রেডে বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি কমিটির পূর্বানুমোদনক্রমে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় তা কার্যকর করতে পারবে।
বর্তমানে বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত অধ্যাপকেরা চতুর্থ গ্রেডভুক্ত। এঁদের মধ্যে ৫০ শতাংশ সিলেকশন গ্রেড পেয়ে গ্রেড-৩ ভুক্ত হন। কিন্তু সিলেকশন গ্রেড বাদ দেওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে নামেন।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, সরকারি কলেজের অধ্যাপকদেরও গ্রেড-৪ থেকে গ্রেড-৩ পদে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত নিয়োগ ও পদোন্নতি বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহল করতে পারে।
নতুন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা এখনো চিঠি হাতে পাননি। তবে শুনেছেন। চিঠি হাতে পাওয়ার পরপরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রকৃচি-২৬টি বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের আন্দোলন: নতুন বেতন স্কেলের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘সৃষ্ট বৈষম্যমূলক’ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক, ২৬টি ক্যাডারভুক্তসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রতিদিন এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করবেন। এ ছাড়া ২০ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর কালো ব্যাজ ধারণ, ২৩ ডিসেম্বর সারা দেশে মানববন্ধন ও ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।