
শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » দৌলতখান | রাজনীতি | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার দৌলতখানে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ
ভোলার দৌলতখানে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ
লালমোহন বিডিনিউজ, দৌলতখান সংবাদদাতা ভোলা :ভোলা: আসন্ন দৌলতখান পৌরসভা নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী ছাড়াও দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা নিয়ে চরম সিন্ধান্তহীনতায় ভুগছে আ’লীগ। এর ফলে পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে আ’লীগ মনোনিত প্রার্থীর জন্য।
তৃণমূলের ভোটের প্রার্থী ও বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদের ভাতিজা খায়রুল হাসান খোকন হাইকমান্ড থেকে মনোনয়ন পায়নি। আর এজন্য কেন্দ্র থেকে দলীয় মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র জাকির হোসেন তালুকদারের পক্ষে কাজ করতে মাঠে নামছে না আ’লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন গুলো। তবে ইতোমধ্যে দলের সিন্ধান্তের বাইরে গিয়ে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান প্যানেল মেয়র আলমগীর হোসেনকে জোড়ালো সমর্থন দিয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ। অপর বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন বাবু প্রচারণার জন্য মাঠে রয়েছেন। অপরদিকে দলে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় দলীয় ঐক্য ধরে রাখতে সুবিধাজনক অবস্থায় থেকে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মোস্তাফিজুর রহমানের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৪, কাউন্সিলর পদে ২৭ এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে হলফ নামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে কাউন্সিলর পদে ৭নং ওয়ার্ডের বিএনপি দলীয় প্রার্থী মাহাবুব মোর্শেদ কুট্রি ও ৯নং ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান রিপনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এদিকে সংরক্ষিত আসনে বিএনপি’র কোনো প্রার্থী না দেয়ায় সংরক্ষিত(মহিলা) কাউন্সিলর-৩ থেকে আ’লীগ দলীয় আমেনা বেগম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে যাচাই-বাছাই শেষে মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়া ২৫ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আ’লীগের মো. সিরাজ উদ্দিন এবং বিএনপির জাকির হোসেন বাবুল, ২নং ওয়ার্ডে আ’লীগের জোবায়ের হোসেন, জাকির হোসেন বাবুল এবং বিএনপির হারুন অর রশীদ, ৩নং ওয়ার্ডে আ’লীগের হাসান মাহামুদ, মো. আলাউদ্দিন এবং বিএনপির সিরাজ উদ্দিন, ৪নং ওয়ার্ডে আ’লীগের নুরুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন মাষ্টার, কিরন পাটওয়ারী এবং বিএনপির আ. হক, ৫নং ওয়ার্ডে আ’লীগের ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ, খালেদ মোশারফ মোরশেদ এবং বিএনপির মো. ফিরোজ, ৬নং ওয়ার্ডে আ’লীগের মাকসুদুর রহমান বাহার এবং বিএনপির ইব্রাহিম মোল্লা, ৭নং ওয়ার্ডে আ’লীগের মোসলেহ উদ্দিন। এই ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থী মাহাবুব মোরশেদ কুট্রির মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ৮নং ওয়ার্ডে আ’লীগের ওয়াজেদ কবীর, মেহেদী হাসান খোকন, নুরে আলম এবং বিএনপির আব্দুল কাদের, ৯নং ওয়ার্ডে আ’লীগের আব্দুল বারেক সওদাগর এবং বিএনপির আলমগীর হোসেন। এই ওয়ার্ডে মিজানুর রহমান রিপনের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭নং ওয়ার্ডের বিত্রনপি দলীয় প্রার্থী মাহাবুব মোর্শেদ কুট্রির মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাকি ৮টি ওয়ার্ডেই বিত্রনপি দলীয় একক প্রার্থী হওয়ায় বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, মেঘনা নদীর তীব্র ভাঙ্গনের শিকার দৌলতখান পৌরসভার আয়তন দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। নদী ভাঙ্গনের শিকার এ পৌরসভার জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় গিয়ে বসত ভিটা তৈরি করে বসতি স্থাপন করেছে। গত পৌরসভা নির্বাচনের চেয়ে ভোটার সংখ্যা ও কমেছে।
ভোলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বর্তমানে এ পৌরসভায় ১০ হাজার ৬শ ৬৫ জন ভোটার রয়েছে। ভোটার সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।