শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » জাতীয় | জেলার খবর | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » লালমোহনে ডাঃ শাহনাজ পারভীনের ভূল চিকিৎসায় নবজাতকের মায়ের মৃত্যু।।লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহনে ডাঃ শাহনাজ পারভীনের ভূল চিকিৎসায় নবজাতকের মায়ের মৃত্যু।।লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, সাত দিনের নবজাতক শিশু। চোখ মেলে ঠিকই পৃথিবী দেখেছে, কেবল দেখা হয়নি মাকে। সাত দিনের এই শিশুটি একদিন বড় হবে। এক সময় হয়তো সে পুরো পৃথিবী দেখবে। কেবল দেখা হবে না তাকে যিনি পৃথিবী দেখিয়েছেন সেই মমতাময়ীকে। কারণ তিনি আর নেই। সন্তান জন্মের পরেই পরপারে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ভোলার লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ফজলে দালাল বাড়ির মো. ইলিয়াছের নবজাতক ছেলে শিশুর সঙ্গে। শিশুটি এখন বেড়ে উঠছে ফুফু ইয়াসমিনের কোলে।
এ ঘটনার পেছনে রয়েছে এক চিকিৎসকের অসতর্কতা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহনাজ পারভীন।
গত ২৮শে ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হাসপাতাল গেট সংলগ্ন নিউ গ্রীন লাইফ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটালে শিশুর মাকে সিজার করান ডা. শাহনাজ পারভীন। সিজারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্তক্ষরণ থামাতে না পেরে শিল্পীকে ভোলায় পাঠানো হয়। ওই রাতেই সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিল্পী। শিল্পীর স্বামী ইলিয়াছ জানান, সকালে আমার স্ত্রীকে গ্রীন লাইফ হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করাই। এরপর বিকালে তার প্রসব বেদনা ওঠে। তখন ডা. শাহনাজ পারভীন কিছু পরীক্ষা করাতে বলেন। পরে ওইসব পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে ডাক্তার জানান, আমার স্ত্রীকে সিজার করাতে হবে। তবে তাকে নরমাল ডেলিভারি করাতে অনুরোধ করি। তখন ওই ডাক্তার বলেন, সিজারই করাতে হবে। সিজারের পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এজন্য আমাদের দ্রুত ভোলা যেতে বলা হয়। তখন জরুরিভাবে ভোলায় গিয়ে ফাতেমা মেমোরিয়াল নামে একটি বেসরকারি হসপিটালে আমার স্ত্রী শিল্পীকে ভর্তি করাই। সেখানে পরপর তাকে চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। তবে কোনোভাবেই রক্তক্ষরণ কমেনি। ওইদিন রাত ৪টায় আমার স্ত্রী মারা যায়। কোনো উপায় না পেয়ে আমার নবজাতক ছেলেকে বোনের কাছে দেই। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য ডাক্তার শাহনাজ পারভীনই দায়ী।
ফাতেমা মেমোরিয়াল হসপিটালের চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আহমেদ বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই তাকে আমাদের এখানে আনা হয়েছিল। এরপর তার শরীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে প্রেসার ও পালস্ পাওয়া যায়নি। এজন্য তাকে আমরা ভর্তিও করতে চাইনি। তবে ওই রোগীর স্বজনরা রিস্কবন্ডে স্বাক্ষর দিয়ে এখানে ভর্তি করান। তবে ওই রাতেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগীর মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহনাজ পারভীন জানান, সিজারের পর রোগী বেশকিছু সময় আমাদের পর্যবেক্ষণে ছিল। তবে কিছু সময় পরে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও জরায়ু সংকোচন না হওয়ায় তাকে আমরা ভোলায় রেফার্ড করি। সেখানে ৭- ৮ ঘণ্টার মতো চিকিৎসাধীন ছিল। রোগীর চিকিৎসায় আমাদের কোনো ত্রুটি ছিল না।