
সোমবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » ভোলা | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলায় জেঁকে বসেছে শীত একটু গরমের জন্য খর কুটো দিয়ে আগুন পোহাচ্ছে বেড়ি বাঁধ এলাকার শিশুরা
ভোলায় জেঁকে বসেছে শীত একটু গরমের জন্য খর কুটো দিয়ে আগুন পোহাচ্ছে বেড়ি বাঁধ এলাকার শিশুরা
লালমোহন বিডিনিউজ ,মোঃ আলী আকবর ভোলা :ভোলায় জেঁকে বসেছে শীত। এই শীতকে মোকাবেলা করার জন্য ধনী গরীব সবাই যার যার মতো কিনে নিচ্ছে পছন্দের গরম পোশাক। কিন্তু এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে ভোলার বেড়ি বাঁধ এলাকা ও চরাঞ্চলের জেলে পরিবারে। মাছ শিকারের জন্য মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নদীতে গেলেও খালি হাতে ফিরছে জেলেরা। ৫/৮ জনের একটি মাছের ট্রলার নদীতে গিয়ে যে পরিমান মাছ পায় সেগুলো দিয়ে তেলের পয়সাও ওঠে না। নদীতে মাছ কম পড়ায় যেখানে দুবেলা দুমুঠো খেতে হিমশিম খাচ্ছে বেড়ি বাঁধ এলাকার হতদরিদ্র জেলে পরিবারগুলো, সেখানে শীত জেঁকে বসলেও অভাব অনটনের কারনে ছেলে মেয়েদেরকে শীতের গরম পোষাক কিনে দিতে পারছেন না তারা। শীতের তীব্রতা দিনদিন বেড়ে গেলেও বেড়ি বাঁধ এলাকার দরিদ্র শিশুদেরকে দেখা গেছে শীতবস্ত্রহীন। কেউ কেউ একটু গরমের জন্য খর কুটো দিয়ে আগুন পোহাচ্ছে। তবে শীত জেঁকে বসলেও এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারীভাবে কোন সহযোগীতা পায়নি তারা। তবে সমাজের বিত্তবানরা যদি এসব হতদরিদ্র মানুষের জন্য সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে একটু হলে স্বস্তি পেতো সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা। এমন চিত্র দেখ গেছে ভোলার তুলাতুলি, নাছির মাঝি, কাঠির মাথা, গুড়া মিয়ার হাট, শিবপুর বেড়ি বাঁধ এলাকায়। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভোলায় এবছর শুরুতেই শীতের তীব্রতা প্রকোট আকার ধারন করেছে। সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বাড়ায় অভাবগ্রস্থ মানুষজন কাহিল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে বেড়ি বাঁধ ও চরাঞ্চলের দরিদ্র লোকজনের জীবনযাপন শীতে দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অন্যান্য বছর পৌষমাস থেকে শীত শুরু হলেও এবছর শীত জেঁকে বসেছে অগ্রহায়ন মাসেই। সূর্যাস্তের পর শীত বাড়তে থাকায় সন্ধ্যার পরেই পথ ঘাট অনেকটা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ভোর ৪টার পর ঘনকুয়াশায় ঢাকা থাকে চারদিক। শীতের কারণে লোকজন সকাল ৯টার আগে মাঠে কাজে যেতে পারছেনা। নদী ভাঙ্গনের শিকার গরিব ও ছিন্নমুল মানুষগুলো টাকার অভাবে শীতের কাপড় কিনতে না পেরে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছে। মেঘনা বাঁধে আশ্রিত একাধীক পরিবারের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, “এবারে নদী ভাঙ্গনে সব চলি যাওয়ায়” বর্তমানে বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে অতি কষ্টে জীবন-যাপন করছি। এর উপর আবার নদীতে মাছ কম। টাকার অভাবে শীতের কাপড় কিনতে না পারায় রাতে ঠান্ডার জন্য ঘুমাতে পারছি না। ছেলে মেয়েদের শীতের গরম পোষাক কিনে দেওয়ার জন্য বলেছে। কিন্তু টাকার অভাবে দিতে পারছি না। তারা খুব কষ্টে শীত কাটাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারীভাবে এখনো কোন সাহায্য সহযোগীতা পায়নি। প্রতি বছর সরকারের পক্ষ থেকে শীত বস্ত্র দেওয়া হলেও আমরা সেগুলো পাইনা। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতো, তাহলে একটু হলে এ কষ্ট দূর হতো।এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম রেজা বলেন, বর্তমান সরকার দারিদ্র বঞ্চিত মানুষগুলোর জন্য বিভিন্ন ত্রাণের মাধ্যমে সাহায্য সহযোগীতা করে যাচ্ছে। বিগত দিনগুলোতে শীতবস্ত্র বিতরন করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতার্তদের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।