রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন | জেলার খবর | তজুমদ্দিন | দক্ষিণ আইচা | দৌলতখান | বরিশাল | বিভাগের খবর | বোরহানউদ্দিন | ভোলা | মনপুরা | লালমোহন | শশীভূষণ | শিরোনাম | সর্বশেষ » নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগ || লালমোহন বিডিনিউজ
নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগ || লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, ডেস্ক : নৌ শ্রমিকদের ধর্মঘটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বরিশালের যাত্রীরা। শত শত যাত্রী বরিশাল লঞ্চঘাটে এসে এই দুর্ভোগে পড়েছেন। গত শনিবার দিবাগত রাত ১২ টা থেকে এ ধর্মঘট ডাক দেয় নৌযান শ্রমিকরা। ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক প্রদানসহ ১০ দফা দাবিতে বরিশালে সকল ধরণের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এমনকি লঞ্চগুলো ঘাট থেকে সরিয়ে বিভিন্ন স্থানে রাখা হয়েছে। যার ফলে রোববার ভোর থেকে বরিশাল নদী বন্দরসহ দক্ষিনাঞ্চলের সকল নদী বন্দর ও লঞ্চঘাট থেকে অভ্যন্তরীন ও দুরপাল্লার যাত্রীবাহি লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। আর এতে করে বিপাকে পরেছেন নৌ-যাত্রীরা। অনেক যাত্রীই ঘাটে এসে লঞ্চ চলাচল বন্ধ দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন। পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি গুলো হল, নৌ যান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনি¤œ মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের উপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের লান্ডিং পাস প্রদানসহ ভারতীয় সীমানায় সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ ভাগ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল এবং নৌ-পরিবহন অধিদফতরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।
ভোলা সদরের বাপ্তা ইউনিয়নের বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, শনিবার সকালে মায়ের চিকিৎসার জন্য বরিশালে আসেন। সারা দিন চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরিক্ষা করে রাতে লঞ্চঘাটে গিয়েছিলেন। তিনি রাতে লঞ্চে থাকবেন ও ভোরে লঞ্চ ছাড়বে এটা ছিল তার ইচ্ছে। কিন্তু রাত ১২ টা থেকে লঞ্চ ধর্মঘট হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন তারা। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করে হোটেলে থাকতে হয়েছে তাদের। সকালে কীর্তনখোলা নদী পাড় হয়ে চর কাউয়া থেকে বাসে করে লাহারহাট যেতে হয়েছে। সেখান থেকে ফেরিতে করে ভেদুরিয়া ও পরে বাসে বাড়িতে গিয়ে পৌছেছি। এ ছিল চরম দুর্ভোগের। লঞ্চ যাত্রী নাসির উদ্দিন জানান, ভোলায় যাওয়ার জন্য লঞ্চঘাটে এসেছি, কিন্তু লঞ্চ চলাচল তো বন্ধ। এখন অপেক্ষা করছি। যদি দুপুরের মধ্যে না ছাড়ে তা হলে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ট্রলারে করে যেতে হবে। শুধু আশিকুর রহমান বা নাসির উদ্দিনই নয়, এভাবে শত শত যাত্রী বরিশাল লঞ্চঘাটে এসে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এ্যাসোসিয়েশনের বরিশাল শাখার সভাপতি মাস্টার আবুল হাসেম বলেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে সারাদেশে কর্মবিরতি করছে নৌযান শ্রমিকরা। যার কারণে সারাদেশের সাথে বরিশাল বিভাগে সকল ধরনের পণ্যবাহি ও যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে বলে জানান মাস্টার আবুল হাসেম।
এ ব্যাপারে বিআইডবিøউটিএ বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবদুর রাজ্জাক বলেন, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে বরিশাল ঘাট থেকে সকাল থেকে কোন লঞ্চ চলাচল করেনি। যাত্রীরা এসে এসে ফিরে যাচ্ছে।