
শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » মনপুরা | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার মনপুরায় বাবা মায়ের চক্রান্তে স্বামীর টাকা আত্মসাদ ডিভোর্স পেতে স্বামীকে চাপ প্রয়োগ
ভোলার মনপুরায় বাবা মায়ের চক্রান্তে স্বামীর টাকা আত্মসাদ ডিভোর্স পেতে স্বামীকে চাপ প্রয়োগ
লালমোহন বিডিনিউজ ,ভোলা দ: সংবাদদাতা : ভোলার মনপুরায় বাবা মায়ের চক্রান্তে স্বামীর টাকা আত্মসাদ করে উল্টো স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স পেতে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লালমোহন পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত মো: মহিউদ্দিন মিয়ার ছেলে মো: লোকমান হোসেন (৩২) এর সাথে বিগত ১৪/১১/২০১২ তারিখে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড বান্দের বাজার এলাকার মাতবর বাড়ীর শফিউল্লাহ মাঝির মেয়ে মোসা: আকলিমা বেগমের সাথে বিবাহ হয় ।
লোকমান একটি আর্ট কোম্পানীতে চাকরি করতো বলে প্রায়ই এলাকার বাইরে থাকতে হত । এবং বাড়ীতে আসলে লোকমানের রোজগার করা অর্থ দেখে তা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দ্যেশ্যে স্ত্রী আকলিমা তার লোভাতুর আসল রুপ দেখাতে থাকে । নিজের পিতা মাতার সাথে যোগসাজস করে স্বামীর জমাকৃত টাকা লোপাটের উদ্দেশ্যে নিজের বাবার কাছ থেকে জমি ক্রয় করার কথা বলে বিভিন্ন সময় অশান্তির সৃষ্টি করতো । শশুরের কাছ থেকে জমি ক্রয়ে রাজী না হওয়ায় বিভিন্ন ভাবে নাজেহাল করতো বলে জানান মো: লোকমান হোসেন ।
সাংসারিক ঝামেলা মুক্ত থাকার জন্য একসময় লোকমান হোসেন শশুরের কাছ থেকে জমি ক্রয়ে রাজী হয়ে জমির মূল্য বাবদ শশুর কে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা প্রদান করেন ।
টাকা পাওয়ার পরপরই স্ত্রী ও শশুরের তালবাহানা আরো বেড়ে যায় ।
ঘটনাটি লোকমান বুঝতে পেরে শশুরকে জমির দলিল রেজি: করে দিতে বললে শশুর জমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে লোকমান তার শশুরকে জমির টাকা ফেরত দিতে বলেন ।
তখনি শশুরের আসল চেহারা উম্মোচন হয়ে যায় । শশুর শফিউল্লাহ মাঝি টাকার কথা ছাপ অস্বীকার করেন এবং তার মেয়েকে ( লোকমানের স্ত্রী ) বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে ও বলেন বলে জানান লোকমান ।
শশুরের কথা মত স্ত্রী ও লোকমানের কাছ থেকে তালাক নিতে লোকমান কে চাপ প্রয়োগ করা সহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের দিয়ে বিয়েতে কাবিননামায় উল্লেখিত মোহরানা সহ যাবতীয় খরচ বাবদ দুই লক্ষ টাকা দাবী করতে থাকে ।
এ ঘটনায় লোকমান হোসেন শশূরের এলাকা হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান দীপক চৌধুরী কে জানান ।
কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান তার এলাকার পক্ষপাত করে লোকমানকে দুই লক্ষ টাকা প্রদান করতে বলেন নচেৎ নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দেয়ার হুমকি প্রদান করে বলে অভিযোগ করেন লোকমান হোসেন ।
এ ব্যাপারে হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান দীপক চৌধুরীর মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, লোকমান তার স্ত্রীকে রেখে দুরে থাকার ফলে তাদের উভয়ের মধ্যে দুরত্বের সৃষ্টি হয়েছে বলে মেয়েটি লোকমানের ঘর করতে চায়না । তাই আমি লোকমান কে বলেছি কাবিননামায় উল্লেখিত মোহরানা সহ যাবতীয় খরচ প্রদান করে বিষয়টি মিমাংসা করে ফেলতে ।
অপরদিকে লোকমান হোসেন দিশেহারা হয়ে এ বিষয়টি উপজেলার ৩নং উত্তর সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো: জাকির মিয়া ও ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো: আবু তাহের কে জানান ।
এ ব্যাপারে উত্তর সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো: জাকির মিয়ার মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, লোকমান আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি ও হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান দীপক চৌধুরী একটি ফয়সালার উদ্দ্যেশ্যে মেয়ের এলাকা হাজিরহাট ইউপি পরিষদে বসেছিলাম । কিন্তু মেয়ে পক্ষ উপস্থিত না হওয়ায় আমরা মিমাংসা করতে পারিনি ।
ইউপি সদস্য মো: আবু তাহের ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, বিয়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত মেয়েটি শুধুমাত্র দুই দিন লোকমানের ঘরে ছিল এবং এরপর থেকে বাবার বাড়ী অবস্থান করছে । লোকমান আমাদের কে বিষয়টি জানানোর পর আমরা কয়েকবার মিমাংসা করার উদ্দ্যেশ্যে শফিউল্লাহ মাঝি কে নিয়ে বসেছিলাম কিন্তু মেয়ে পক্ষ কোন ফয়সালা মানতে রাজী নয় তাই মিমাংসা করা সম্ভব হয়নি ।
অপরদিকে লোকমান হোসন আরো অভিযোগ করে বলেন, আমার শফিউল্লাহ মাঝি তার মেয়েকে তালাক দেয়া ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা মানতে নারাজ ।
পরবর্তীতে এই অপকর্মের সূ-বিচার পেতে মো: লোকমান হোসেন বাদী হয়ে বিগত ২/৯/১৫ তারিখে ভোলা সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন । যার মামলা নং-৩১ ।