শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
প্রথম পাতা » জাতীয় | ঢাকা | বিভাগের খবর | রাজধানী | শিরোনাম | সর্বশেষ » ’মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখতে মুজিবনগরে ভারত-বাংলাদেশ ‘স্বাধীনতা সড়ক’ ||
’মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখতে মুজিবনগরে ভারত-বাংলাদেশ ‘স্বাধীনতা সড়ক’ ||
লালমোহন বিডিনিউজ, ডেস্ক : ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের ভারতের কৃষ্ণনগর, চাপড়া এ হৃদয়পুর হয়ে মুজিবনগরে আসেন ভারতীয় সাংবাদিকরা।
স্মৃতি বিজড়িত সেই সীমান্তবর্তী এলাকাকে স্মরণীয় করে রাখতে সেখানে দুই দেশের নতুন এন্ট্রি-এগজ়িট পয়েন্ট তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়েছে ঢাকা ও দিল্লি।
গেল বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- চাপড়া থেকে মুজিবনগর পর্যন্ত ওই ঐতিহাসিক রাস্তার নামকরণ করা হবে ‘স্বাধীনতা সড়ক’। তবে ভিসা ইমিগ্রেশনের বন্দোবস্ত না-থাকায় পয়েন্টটি দিয়ে মানুষের যাতায়াত এখনো শুরু হয়নি।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, চলতি বছর শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফরে স্বাধীনতা সড়ক বরাবর নতুন ইমিগ্রেশন পয়েন্ট ঘোষণার জন্য কাজ শুরু করেছে দুই দেশের সরকার। সেখানে এগজ়িট এবং এন্ট্রির জন্য ছশো মিটার রাস্তা পাকা করতে এরইমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
একাত্তরের সেই এতিহাসিক ক্ষণে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে কলকাতার কিছু সাংবাদিককে বলে রাখা হয়েছিল, ১৭ এপ্রিল ভোরে প্রেস ক্লাবে উপস্থিত থাকতে। ভারতের কৃষ্ণনগর, চাপড়া, হৃদয়পুর হয়ে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় সীমান্ত পেরিয়ে আমবাগান ঘেরা বৈদ্যনাথ তলায়। সেখানে তাজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার (মুজিবনগর সরকার)। সংবাদ সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয় সেখানে। এর পরে ওই পথেই কলকাতায় ফেরেন সেখানকার সাংবাদিকরা।
সেই স্মৃতি বিজড়িত সীমান্ত এলাকা বৈদ্যনাথ তলার নাম সেই দিনই দেওয়া হয় মুজিবনগর। এই সীমান্তবর্তী এলাকাকে স্মরণীয় করে রাখতে সেখানে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতে দু’দেশের এন্ট্রি-এগজ়িট পয়েন্ট তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়েছে দিল্লি ও ঢাকা। নরেন্দ্র মোদির গত বছরের ঢাকা সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, চাপড়া থেকে হৃদয়পুর হয়ে মুজিবনগর পর্যন্ত ওই ঐতিহাসিক রাস্তাটির নামকরণ করা হবে ‘স্বাধীনতা সড়ক’।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাধীনতা সড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নামে ‘স্বাধীনতা সড়ক’ হলেও সেখানে ভিসা ইমিগ্রেশনের বন্দোবস্ত না-থাকায় মানুষের যাতায়াত ছিল না। শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফরে যাতে স্বাধীনতা সড়ক বরাবর নতুন ইমিগ্রেশন পয়েন্ট ঘোষণা করা যায়, সে জন্য উঠে পড়ে লেগেছে দুই সরকার। সেখানে এগজ়িট এবং এন্ট্রির জন্য ৬০০ মিটার রাস্তা পাকা করতে হবে এবং সেটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হতে কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গকে বলেছে ভারতের কেন্দ্র সরকার। সেখানে ভিসা ইমিগ্রেশন পয়েন্ট খোলা হলে দুদেশেরই দু’প্রান্তেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহম্মদ ইমরান সম্প্রতি নদিয়ার হৃদয়পুর সীমান্ত ঘুরে দেখেছেন। সেখানে দুদেশের সীমান্তরক্ষীদের পোস্ট রয়েছে। বাংলাদেশের দিকে কাস্টমস আর ভিসা ইমিগ্রশন পয়েন্ট তৈরির জন্য পরিকাঠামো গড়ার কাজ প্রায় শেষ। ভারতের দিকে পরিকাঠামো যাতে হয়, সে ব্যাপারে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আশ্বাস পাওয়া গেছে। এর পর রাস্তা পাকা করার কাজ বাকি থাকবে। গত বছর নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘মুজিবনগর থেকে নদিয়া পর্যন্ত ঐতিহাসিক রাস্তাকে ‘স্বাধীনতা সড়ক’ নাম দিতে ঢাকার প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।’
অন্য দিকে বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিটির (জেসিসি) বৈঠক দিল্লিতে হবে ৩০মে। বৈঠকে যোগ দিতে নয়াদিল্লি যাবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি দিল্লি যাওয়ার আগে ২৮-২৯ মে গুয়াহাটিতে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী গোষ্ঠী আয়োজিত নদী সম্মেলনে যোগ দিয়ে দিল্লি আসবেন। সূত্রের খবর, গুয়াহাটির অনুষ্ঠানে ভারতে নিযুক্ত দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু দেশের রাষ্ট্রদূত গেলেও, আমন্ত্রণ পেয়ে না-ও যেতে পারেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেওয়া নিয়ে মিয়ানমারের গড়িমসি মনোভাব এই সিদ্ধান্তের কারণ কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে।