বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | ভোলা | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার মেঘনায় ট্রলার ডুবির ৩০ ঘন্টা পর জেলেদের জীবিত উদ্ধার ॥ লালমোহন বিডিনিউজ
ভোলার মেঘনায় ট্রলার ডুবির ৩০ ঘন্টা পর জেলেদের জীবিত উদ্ধার ॥ লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, ভোলা : ইলিশের শেষ মৌসুমে পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। আর এ ইলিশ শিকারে গিয়ে বঙ্গপোসাগরে একটি ট্রলার ডুবে ১৮জন মাঝি মাল্লা ও জেলে নিখোঁজ হয়।
গত মঙ্গলবার (২৮সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর সংলগ্ন ভাসানচর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্বে বঙ্গপোসাগরে এফবি মা জননী-২ নামের একটি ট্রলারের সম্মুখ অংশের (আহ্নি) তলা ফেটে ডুবে যায় বলে জানান হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মাইনুদ্দিন মৎস্যঘাটের জেলেরা।
ট্রলারটি উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মাইনুদ্দিন মৎস্যঘাটের মহিউদ্দিন মাঝির। এর আগে ওই ট্রলারটি গত শুক্রবার বিকেলে হাজারীগঞ্জ ৮নং ওয়ার্ডের ১৬ জন ও পাশ্ববর্তী জাহানপুর ইউনিয়নের ১জন এবং দৌলতখান উপজেলার ১জন জেলে নিয়ে সাগরে মৎস্য শিকারে যায়।
৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মালেক মিয়া জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় ওই ট্রলারটি ভাসানচরের প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে সাগরে জাল ফেলে।
আবহাওয়া খারাপ হলে জাল নিয়ে ফিরে আসার সময় ট্রলারটির তলা ফেটে গিয়েছে বলে ট্রলার মালিক মহিউদ্দিন তাঁর বড়ো ভাই খলিলকে ফোন করে জানিয়ে ভাসানচরের পূর্ব দিকে একটি ট্রলার নিয়ে তাঁদেরকে উদ্ধারের জন্য ফোন দিয়ে জানান।
তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে মহিউদ্দিন মাঝির বড়ো ভাই খলিল উদ্দিন বৃষ্টি ও ঝড়োবাতাসের মধ্যে ২টি ট্রলার নিয়ে ওই জেলেদের উদ্ধার করতে যায়। এমন ঘটনায় জেলেদের সন্ধান না পাওয়ায় জেলে পল্লীতে দিনভর চলে শোকের মাতম।
অবশেষে ৩০ঘন্টা পর গত বুধবার (২৯সেপ্টেম্বর) দুপুরে মনপুরা কলাতলীর চরের একটি ছোট ট্রলার তাঁদের উদ্ধার করে। মহিউদ্দিন মাঝিসহ নিখোঁজ ১৮ জন জেলেকে ওই ট্রলারটি ঢালচরে নিয়ে পৌছে দেন বলে ফিরে আসা জেলেরা জানান।
উদ্ধার হওয়া জেলে ওবায়েদ উল্লাহ (৪৯) হাবিব উল্লাহ মিঝি (৪৮) ও মোসলেহ উদ্দিন (৩৫) বলেন, সাগরে বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল ঢেউ দেখা দিলে আমরা ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই।
পথিমধ্যে ঢেউয়ের আঘাতে ট্রলারটির সামনের অংশের তলা ফেটে যায় এবং পিছনের পাখার পাতা ভেঙ্গে গিয়ে ট্রলারে ধিরে ধিরে পানি প্রবেশ করে।
এসময় আমরা ১৮ জেলে দ্রুত সকল বয়া ও প্লুট এবং কন্টেইনার ড্রাম একসাথে বাধিঁ। পরে সকল জেলেকে একসাথে শরীরে বেধেঁ সাগরে ঝাপিয়ে পড়ি।
হাবিবুল্লাহ বলেন, আমাদের অনেকগুলো ট্রলার দেখেও উদ্ধার করেনি। দিনরাত সাগরে ভেসে বেড়িয়েছি। পরদিন দুপুরে একটি ট্রলার আমাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমাদের পৌছে দেয়।
ট্রলার মালিক মহিউদ্দিন মাঝি বলেন, আমার এ ট্রলারটি তৈরী করতে প্রায় ১কোটি ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ট্রলারটি নতুন নামিয়ে মাত্র ৩টি ট্রিপ মাছ পেয়েছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম হাওলাদার বলেন, ট্রলারটি পাওয়া যায়নি তবে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার করা হয়েছে এবং জেলেরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে।
উদ্ধারকৃত জেলেরা হলেন, মহিউদ্দিন মাঝি (৩২) দুলাল (৩৩) সাজাহান মুন্সি (৩৫) আবদুল মুনাফ (৩৭) মোসলেহ উদ্দিন (৩০) ওবায়দুল্লাহ (৪৯) নুরনবী (৪) হাবিবুল্লাহ মিঝি (৪৮) আজাদ (২০) রুবেল (২০) আলমগীর (৩৫) জাকির (২৫) সাজাহান (৬০) ফরিদ (৬০) জুয়েল (৩০) জাহানপুরের বাসিন্দা জসিম (২৫) ও দৌলাতখান উপজেলার মঞ্জু (৪০)।