সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » লালমোহনে রোপা আমনে দেখা দিয়েছে শীষকাটা ও পচানি রোগ!
লালমোহনে রোপা আমনে দেখা দিয়েছে শীষকাটা ও পচানি রোগ!
লালমোহন (ভোলা) : ভোলার লালমোহন উপজেলায় রোপা আমন ধানে দেখা দিয়েছে পাতা মোড়ানো,পাঙ্গাশিয়া , মাজরা, শীষকাটা ও তলাপচানি রোগ। এসকল রোগের আক্রমণে দিনদিন পাতা শুকিয়ে বা বসে যাচ্ছে আমনের চারা । এতে ধানের ফলন নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। ধান রক্ষার উপায় খুঁজছেন কৃষক। প্রতি সপ্তাহে দু চারবার কীটনাশক ছিটাতে হচ্ছে এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন তারা। লালমোহন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ২৩ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৩ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। লক্ষমাত্রা অতিক্রম করছে আমন চাষ।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আর কয়েক সপ্তাহ পরে গাছে ধান আসার কথা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে রোগের আক্রমণ। ধানগাছ প্রথমে হলুদ ও পরে শুকিয়ে বাদামি রং ধারণ করছে এবং ধানের চারার ঢিগ কেটে ফেলছে শীষকাটা নামক পোকা । কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো ফল পাচ্ছে না কৃষকরা। ফসলের মাঠজুড়ে এখন শুধু রোগের আক্রমন। উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজারের লাইসেন্সবিহীন কীটনাশকের দোকান গুলোতে অনেক বে নাম্বারী কম্পানির কীটনাশক বিক্রি করা হচ্ছে দেদারছে গ্রামের সড়লমনা কৃষকদের কাছে । তা দিয়ে কোন প্রতিকার হচ্ছেনা। প্রতারিত হচ্ছে কৃষক। দেখার যেন কেউ নেই । বিভিন্ন রোগ বালাই ও পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় বাজারে পাওয়া কীটনাশক জমিতে ছিটিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। আমনের ফলন ও অতিরিক্ত খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। তাদের আশঙ্কা, সময় মতো রোগবালাই দুর করা ও পোকা দমন করতে না পারলে এবার রোপা আমন উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে । আবার একাধিক কৃষক বলেন তারা দোকান থেকে বীজ কিনে ও প্রতারিত হয়েছেন। আমনের বীজ কিনে চারা রোপনের কিছু দিনের মাথায় অপরিপক্ব ধান ক্ষেতের একই জমিতে কোথাও বিভিন্ন প্রকার ধান বের হতে দেখা গিয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
রমাগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্বচরউমেদ গ্রামের সাতদরুন বিলের কৃষক আবুল কালাম, মোঃ জামাল, আব্বাস উদ্দীন, লামসির বিলের মিজান বেপারী, মোশারেফ হোসেন, নুরুল ইসলাম জানান, তাদের সকলের প্রায় জমিতে ধানের বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন তাদের জমিতে (ধানের ছিট) কোন কোন স্থানে ধান বের হচ্ছে আবার ক্ষেতের কিছু অংশে রোপা আমনের চারা গাছ লক্ষ করা যাচ্ছে , আবার পোকা আক্রমণ করেছে। তারা জানান এ পর্যন্ত ৪/৫ বার কীটনাশক স্প্রে করেও আমন ক্ষেতের এ রোগ দমন করা যাচ্ছে না। আবার অনেকে একাধিক বার কীটনাশক স্প্রে করেছেন বলে জানান । প্রতিবার স্প্রে করতে শতাংশ প্রতি প্রায় সাত-আটশ’ টাকা করে খরচ হচ্ছে।
তার মতো একই গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম, রমাগঞ্জের ৭ নং ওয়ার্ডের কৃষক কা ন মিয়া, নুরনবী, ইসলাম, ধলীগৌরনগরের চরমোল্লাজী গ্রামের জসীম, মিলন, নুর ইসলাম, লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের প্যায়ারীমোহন গ্রামের নুরনবী, আঃ রব, আব্বাস, রফিজল ইসলাম সহ অনেকেই জানান তাদের জমিতে শীষকাটা ও তলপচার আক্রমণের কথা। তারা বলেন, সুদে ঋণ নিয়ে জমি লগ্নি করে এবার আমন ধান চাষ করেছেন অনেকে। ধান বের হতে না হতেই পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই পোকা ধান গাছের পাতা খেয়ে বিবর্ণ করে ফেলছে। নিচের দিকে বসে যাচ্ছে রোপা ধানের গাছ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান সুমন বলেন, ধানগাছের বিভিন্ন রোগবালাই আক্রমণ থেকে রক্ষায় কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ,অনেকে আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেনা । লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এফ এম শাহাবুদ্দীন বলেন, কৃষকরা আমাদের সাথে পরামর্শ নিয়ে কীটনাশক ছিটায়না এবং কীটনাশকের সঠিক ডোজের ব্যবহার সময় মতো না করার কারণে বার বার স্পে লাগছে । কীটনাশক ছিটানোর সময় বিলের সকল চাষাকে এক সাথে কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেন তিনি ।