মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » মেঘ দেখলেই দুশ্চিন্তা বাড়ে ওদের।। লালমোহন বিডিনিউজ
মেঘ দেখলেই দুশ্চিন্তা বাড়ে ওদের।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আকাশে মেঘ দেখলেই দুশ্চিন্তা বাড়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার প্রায় প্রতিটি আবাসনের বাসিন্দাদের মনে। দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ ঘরগুলোতে বৃষ্টির পানি পরে নষ্ট হয় কষ্টার্জিত আসবাবপত্রগুলো। নির্ঘুম কাটাতে হয় সারারাত। জরাজীর্ণ ঘরের এ চিত্র উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে নির্মিত সরকারী (গুচ্ছগ্রাম) আবাসনের। দুর্ভোগের শেষ নেই এখানে বসবাসরত দরিদ্র পরিবারগুলোর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণবস্থায় রয়েছে উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ আবাসন, উত্তর লর্ডহার্ডিঞ্জ নজির মিয়া বাড়ী সংলগ্ন আবাসন, উত্তর প্যায়ারীমোহন (বটতলা সংলগ্ন) সোনালী আবাসন, ধলীগৌরনগরের চতলা বাজার সংলগ্ন আবাসন, উত্তর চতলা মহাজন আবাসনসহ রমাগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ রায়চাঁদ আবাসন।
এখানে বসবাসরত পরিবারগুলো দিনযাপন করছেন এ জরার্জীণ ঘরেই। কেউ কেউ ঘরের উপর পলিথিন দিয়ে ইট চাপা দিয়েছেন। তবে আকাশে মেঘ দেখলেই সারারাত জেগে থাকেন। যদি বৃষ্টির সাথে বাতাস হয় তবে ওই পলিথিনও উড়ে গিয়ে পানিতে ভিজে নষ্ট হবে কষ্টার্জিত আসবাবপত্র।
এছাড়াও এখানে বসবাসরতদের মধ্যে রয়েছে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিও। কারণ আবাসনবাসীর জন্য নেই স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা। ফলে চলমান করোনা মহামারীর এ সময়ে চরম স্বাস্থ্যঝুকির আশঙ্কাও করছেন অসহায় পরিবারগুলো। তাই এসকল সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন বসবাসরত পরিবারগুলো।
আবাসনের বাসিন্দা আবুল কালাম, আরিফ, হোসনেয়ারা, লাইজু, ইউসুফ ও জামাল জানান, অত্যন্ত কষ্ট করে আবাসনে থাকতে হয়। আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে যাই। নিজেরা দার-দেনা করে মোটামুটি মেরামত করে পরিবার নিয়ে থাকি।
রায়চাঁদ আবাসনের বাসিন্দা জামাল বলেন, কয়েকবার উপজেলা থেকে স্যারেরা এসে ঘরের ছবি তুলে নিয়েছে। কেনও নিয়েছে তা জানিনা, তবে আমাদের কোনও উপকার হয়নি।
জানা যায়, ২০০৪ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এসব আবাসনগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় জরাজীর্ণ ঘরগুলো মেরামতে কোনও উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কিছু কিছু মেরামত করা হলেও তা শুধু কাগজে কলমে, বাস্তবে নয়।
লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া জানান, আবাসনের কাজগুলো তদারকি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রকল্প কর্মকর্তা ও ভূমি অফিস। তবে লর্ডহার্ডিঞ্জের শাহাবাজপুর আবাসন ও সোনালী আবাসনে মেরামতের কাজ হয়েছিল বলে জানান তিনি।
রমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা মিয়া বলেন, আবাসনের ঘরগুলো ৪/৫ বছর ধরে কোন মেরামত হয়নি বসবাসরত বাসিন্দাদের সমস্যার বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
তবে আবাসনে বসবাসরতরা জানান, লোক দেখানো কাজ করা হয়েছিল। তাই যেমন ঘর তেমনই রয়ে গেছে, রয়ে গেছে ভোগান্তিও।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সোহাগ ঘোষ বলেন, জরাজীর্ণ ঘরগুলো মেরামতের কোন উদ্যোগ কর্তৃপক্ষ নিবে কিনা, তা জানা নেই। তবে সরকার জরাজীর্ণ ঘরগুলো মেরামত না করে সেখানে এক তলা পাকা বিল্ডিং করার পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রকল্প -২ এর আওতাধীন ৬ টি ঘরের তালিকা আমরা পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।