বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভিক্ষায় জীবিকা চলে রোকসানার! ।।লালমোহন বিডিনিউজ
ভিক্ষায় জীবিকা চলে রোকসানার! ।।লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, লালমোহন প্রতিনিধি : রোকসানা বেগম, দুই সন্তানের জননী। বয়স আনুমানিক ২০/২২ হতে পারে। তবে অর্ধাহারে অনাহারে কঙ্কালসার রোকসানাকে মনে হয় যেন, ষষ্টোর্ধ বৃদ্ধা। লালমোহন বাজারের বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষে করেই চলছে তার জীবন।
রোকসানা বোরহানউদ্দিনের হাসাননগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মির্জাকালু এলাকার ডাক্তার বাড়ির মৃত নাছির মেস্তরির মেয়ে। প্রায় ৭/৮ বছর আগে একই উপজেলার দালাল বাজার এলাকার মৃত আতরজমার ছেলে সিরাজের সাথে বিয়ে হয় তার।
সিরাজের পিতার মৃত্যুর পর তাকে যিনি দত্তক নিয়েছিলেন, বিয়ের পর সেই বাড়িতেই থাকতেন রোকসানা। তাদের ঘরে হাবিবা (৪) ও তাসপিয়া (৩ মাস) নামের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাসপিায়ার জন্মের আগেই রোকসানা কে ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় স্বামী সিরাজ। পরে শশুর বাড়িতে ও ঠাঁই হয়নি তার। তাই জীবিকার তাগিদে ভিক্ষার পথ বেছে নিয়েছে সে।
রোকসানা জানায়, প্রায় তিন বছর আগে তার মায়ের মৃত্যু হয়, এর বছখানেক পর বাবা নাছির মেস্তরি ও চলে যান পরপারে। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে সে ছোট। ৭/৮ বছর আগে সিরাজের সাথে বিয়ে হয়েছিল তার। দিনমজুর সিরাজের রোজগারের চলতো তাদের সংসার।
প্রায় ৫/৬ মাস আগে হঠাৎই নিরুদ্দেশ হয়ে যায় তার স্বামী। পরে স্বামীর বাড়ি থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। তাই দুই সন্তান ও নিজের জীবন বাঁচানোর তাগিদে ভিক্ষে করছেন তিনি। ভিক্ষের টাকায় ৫শ টাকা ঘর ভাড়া দেন তিনি। করোনার মধ্যেও পাননি সরকারি বেসরকারি কোনও সাহায্য সহযোগিতা। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে সরকারি একটি ঘরের জন্য বারবার গিয়েও কোনও ঘর পাননি ।
হাসাননগর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ সাফায়েত ভূইয়া বলেন, আমার কাছে এ নামের কেউ আসেনি, তবে আসলে যতটুকু সম্ভব সাহায্য সহযোগিতার ব্যবস্থা করবো।
হাসাননগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মানিক হাওলাদার বলেন, রোকসানা নামের কেউ আমার কাছে আসেনি। তবে আমার এলাকার কেউ ভিক্ষাবৃত্তি করুক, এটা আমিও চাইনা। সে যদি আমার কাছে আসে, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
একটুখানি সাহায্য সহযোগিতার অভাবে আমাদের সমাজে অনেক রোকসানারাই ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিয়েছে। সরকারি বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহ ও মাথা গোজার ঠাঁই পাবে রোকসানা/ রোকাসানারা, বন্ধ হবে ভিক্ষাবৃত্তি, এমনটাই চাওয়া সচেতনমহলের।