বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১
প্রথম পাতা » জেলার খবর | তজুমদ্দিন | বরিশাল | বিভাগের খবর | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » লালমোহনে ঈদের আমেজ নেই তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের মাঝেঃ ওদের খোঁজ নেয়না কেউ!! লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহনে ঈদের আমেজ নেই তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের মাঝেঃ ওদের খোঁজ নেয়না কেউ!! লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, সালাম সেন্টু, : ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুঁশি। তবে মহামারি করোনার এ সময়ে ঈদের আমেজ নেই লালমোহনের তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায়ের মধ্যে। করোনা বা ঈদ উপলক্ষে এখানকার হিজড়ারা উপজেলা প্রশাসন বা অন্য কোনও সংস্থা থেকে এখনও কোন সাহায্য সহয়োগিতা। তবে তাদেরও আছে পেটের ক্ষুধা, যেটা তাড়না করে তাদেরকেও।
লালমোহনের হিজড়া সম্প্রদায়ের গুরু (নেতা) পায়েল “লালমোহন বিডিনিউজ ডটকম” কে জানান, তার ১৮জন শিষ্য রয়েছেন, যারা সকলেই ঘর ভাড়া করে থাকেন। মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্য চেয়ে যা পান, তা দিয়েই চলে তাদের জীবন জীবিকা। তবে মহামারি করোনার প্রকোপরোধে সরকার কর্তৃক ঘোষিত লকডাউনের কারণে সাধারণ মানুষ নিজেরাই যেখানে কর্মহীন ও অসহায়, সেখানে হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াবে কে? তাই অর্ধাহারে অনাহারে কোনমতে দিন পার করছেন তারা।
পায়েল আরও জানান, তার ১৮জন শিষ্যের মধ্যে মাত্র ৭জন মাসিক ৬শ টাকা করে সরকারি ভাতা পান। বাকি ১১ জন এখনও কোন সহযোগিতার আওতায় আসেনি।
ভাতার আওতায় থাকা পায়েল ছাড়াও কথা, সুরভী, অপু, মেঘলা, রুপালী, রুহুল আমীন ও মম হিজড়া “লালমোহন বিডিনিউজ ডটকম” কে জানান, মাস শেষে ৬শ টাকা করে যে ভাতা পাচ্ছেন তারা, তা উত্তোলণ করতে গিয়ে যাতায়াত খরচও এর চেয়ে বেশি হয়। সেখানে বর্তমান উর্ধ্বগতির দ্রব্যমূল্যের বাজারে মাত্র ৬শ টাকায় একটি মানুষের মাসব্যাপী জীবিকা চালানো কষ্টসাধ্য ও অসম্ভব। তার উপর আবার দুই আড়াই হাজার টাকা ঘর ভাড়া।
তারা জানান, মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পাততে চান না তারা। সরকার কর্তৃক বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের কে কর্ম করার উপযোগি করে তৈরি করতেন এবং কর্ম করার জন্য আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করা হতো, তাহলে কর্ম করেই নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করবেন তারা। তাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হিজড়া সম্প্রদায়কে যোগ্য করে তোলার দাবি জানান তারা।
এদিকে স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন প্রতিবারের ন্যায় এবার ঈদেও হিজড়া সম্প্রদায়ের মাঝে সাড়ে ৯হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন। তাই এমপি শাওনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এখানকার তৃতীয় লিঙ্গের এ মানুষেরা।
“লালমোহন বিডিনিউজ ডটকম” এর সাথে আলাপকালে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মামুন হোসেন জানান, গত বছর ২০জন হিজড়ার তথ্য দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। লালমোহনে বর্তমানে ৮জন হিজড়া মাসিক ভাতা পাচ্ছেন। মহামারি করোনাকালীন সময়ে গত বছরের মত এবারও তাদের সহযোগিতা করার লক্ষে “বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ” থেকে একটি বরাদ্দ আসার কথা ছিল, তবে সেটা এখনও আসে পৌঁছেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আল নোমান জানান, হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্য আপাতত কোন ব্যবস্থা নেই। তবে করোনাকালীন সময়ে দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে সরকারি যে নির্দেশনা, আমরা তা মেনেই ত্রাণ বিতরণ করেছি।