শনিবার, ২৩ মে ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | বোরহানউদ্দিন | শিরোনাম | সর্বশেষ » নামের যাচাই না করেই নিরপরাধকে জেলে পাঠানোর অভিযোগ বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।।লালমোহন বিডিনিউজ
নামের যাচাই না করেই নিরপরাধকে জেলে পাঠানোর অভিযোগ বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।।লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, নিজস্ব প্রতিনিধি : ভোলার বোরহানউদ্দিনে আইয়ুব আলী নামের আসামী খুঁজতে গিয়ে নামের যাচাই না করে নুরুল ইসলাম নামের আরেকজনকে আসামী সাজিয় জেলে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
গত ৯ মে (শনিবার) উপজেলার টগবী ৫নং ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড রোকুমুদ্দি বাড়ির মৃত আ: খালেকের ছেলে নুরুল ইসলাম। পেশায় ড্রাইভার নুর ইসলাম ঢাকায় প্রাইভেট কার চালিয়ে একটি প্রতিবন্ধি সন্তানসহ দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে জীবনযাপন করছেন। গত ৩মে (রবিবার) জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নুরুল ইসলামের বড় ভাই নুর সোলেমান বাদি হয়ে তার অপর ভাই প্রবাসী আইয়ুব আলী ওরপে ছোট’কে আসামী করে বোরহানউদ্দিন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার আসামী হিসেবে গত ৯ মে (শনিবার) রাতে নুরুল ইসলামকে আসামী আইয়ুব আলী সাজিয়ে গ্রেফতার করে বোরহানউদ্দিন থানার এসআই হেমায়েত। এ সময় নুরুল ইসলামসহ স্থানীয় মেম্বার, চৌকিদার ও স্থানীয় লোকজন তার নাম আইয়ুব আলী নয় বলে জানালেও তাকে ছাড়েনি পুলিশ।
নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, গত ৯মে (শনিবার) গভীর রাতে বোরহানউদ্দিন থানার এসআই হেমায়েত মামলার আসামী আইয়ুব আলীর বদলে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় নিজেকে নুরুল ইসলাম হিসেবে দাবি করলেও তার কথায় কোন কর্ণপাত করেনি পুলিশ। পরে তাকে আটকপূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ৩ দিন জেল খাটার পর নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পায় সে।
বাদি পক্ষের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে তাকে আসামী বানিয়ে জেলে পাঠিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন নুরুল ইসলাম।
এদিকে গত ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে বোরহানউদ্দিন থানার এএসআই (নিরস্ত্র) মো: সরোয়ার আলম এমপি মামলা নং১৭৮/১৯(বোর), ধারা-৪০৬/৪১৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ পেনাল কোড এর ১নং আসামী মো: আইয়ুব আলীসহ মোট ১২জনে নাম ঠিকানা পিস/পিআর যাচাই করিয়া এসসিডি এর মাধ্যমে জানানোর জন্য ডিবি, ভোলা এর ইএস মতে বোরহানউদ্দিন থানার ওসির হাওলা মতে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, দফাদার, চৌকিদার ও বাড়ীর লোকজনসহ গন্যমান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ অনুযায়ী প্রাপ্ত তদন্তে উল্লেখ্য করেন- “মো: আইয়ুব আলী (৫০) এর জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, তাহার এবং তাহার ছেলে, মেয়ের বিবাহের কাবিন নামাসহ সকল কাগজ পত্রে নুর ইসলাম নাম উল্লেখ্য আছে। ওই নাম ব্যবহার করিয়া বর্তমানে সে বিদেশে আছে। কিন্তু এলাকায় সকলে তাকে মো: আইয়ুব আলী নামে চিনে ও জানে। তবে নুরুল ইসলাম নামে তার আপন ছোট ভাই আছে। নুরুল ইসলাম ও আইয়ুব আলীর পিতার দেয়া জমির দলিলকে কেন্দ্র করে কাগজপত্রে তাদের নামের পরিবর্তন হয়েছে।
কিন্তু ফেব্রুয়ারী থেকে মে মাত্র চার মাস পরেই একই থানার এসআই হেমায়েত নুরুল ইসলামকে আসামী আইয়ুব আলী হিসেবে গ্রেফতার করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বোরহানউদ্দিন থানার এসআই হেমায়েত বলেন, সে নুরুল ইসলাম না আইয়ুব আলী, সেটা আদালতের দেখার বিষয়। তার আপন বড় ভাইয়েরাই বলেছে ওর নাম আইয়ুব আলী। তারা যে দলিদাদি এবং বিয়ের কাবিননামা দেখিয়েছে তাতে আইয়ুব আলী লেখা ছিল। ২০১৯ সালে সে নুরুল ইসলাম নামে ভোটার আইডি কার্ড করিয়েছে বলেও জানান এসআই হেমায়েত।
এদিকে প্রশাসনের এমন ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ্য করে এর সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা।