বুধবার, ১৩ মে ২০২০
প্রথম পাতা » জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | মুক্তমত | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » মানবিক এমপি শাওন : মানবতার টানে রাতদিন অসহায়ের দ্বারে ছুটে চলা ।। লালমোহন বিডিনিউজ
মানবিক এমপি শাওন : মানবতার টানে রাতদিন অসহায়ের দ্বারে ছুটে চলা ।। লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ, নিজস্ব প্রতিনিধি : মানুষ হয়ে মানবসেবার দায়িত্ব, কর্তব্য সকল মানুষের উপরই ন্যস্ত। তবে কজনা তার খোঁজ রাখে? যদি মানবতা তার মনুষত্বকে নাড়া না দেয়, তাড়া না করে তবে মানবসেবায় তার এগিয়ে চলার গতি হ্রাস পায়। সমাজে মানুষের প্রতি মানুষে ভালবাসা লোপ পায়।
কে সমাজের কত উঁচু স্থানে বসে আছেন সেটা ভাবার মত সময় থাকে না, যখন মানবসেবার প্রত্যয় হৃদয়ঙ্গম হয়ে মানবতা তাকে তাড়া করে বেড়ায়। আর তখনই নিজের জীবনের সার্বিক চিন্তা ভূলে অপরের সুখের জন্য দিনরাত ছুটে বেড়ায়। আর তাকেই সমাজের মানুষ মানবতার ফেরিওয়ালা বলে।
হ্যাঁ, আজ আমার দেখা এক মানবতার ফেরিওয়ালার কথা তুলে ধরতেই এ লেখা। দ্বীপজেলা ভোলার একসমেয়র অবহেলীত অঞ্চল লালমোহন-তজুমদ্দিনের হাল ধরে এ অঞ্চল ও অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যােন্নয়নে কাজ করে তাদের হৃদয়ে যিনি স্থান করে নিয়েছেন। পেয়েছেন দ্বীপবন্ধু উপাধি। তিনি ভোলা-৩ আসন থেকে পরপর তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
মানবতার ফেরিওয়ালা এমপি শাওন এ অঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে নিজেকে কতটা ধন্য করেন তা তাঁর নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুকে তুলে ধরেছেন তিনি। সকলের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো————
রাত ১১ ঘটিকা…..
জরুরী একটা মিটিংয়ে বসেছি নেতাকর্মীদের নিয়ে। হঠাৎ ফোনে ছবির মুরুব্বী কল করে অভিব্যক্তি প্রকাশ করল। বলল, আমরা খুব গরীব মানুষ স্যার। আমাদের বুঝি দেখার কেউ নেই! শুনি আপনি রাতে ঘুমান না। বিভিন্ন বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে সবার ভালমন্দ খবর নেন। যদি দয়া করে আমাদের বাড়ীতে আসতেন! বৃদ্ধের সাথে কথা শেষ হলে উপস্থিত আলোচনা সভা সমাপ্ত করে গন্তব্যস্থলে ছুটলাম। মনে মনে ভাবলাম, আমাকে দয়া করে আসতে হবে কেন! আমার দায়িত্ব-ই এটা। সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য একটি জনপদকে শান্তির নীড়ে রুপান্তর করে সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষেই জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এ অঞ্চলে পাঠিয়েছেন। বন্ধুর এ পথটি পাড়ি দিতে আমাকে অনেক শ্রম দিতে হয়েছে। প্রথমে এ অঞ্চলে পদার্পণ করার পর আমি খুবই থমকে গিয়েছি। কিভাবে এ মানুষগুলো এখনো বেঁচে আছে। মানুষের জানমালের ছিল না কোন নিশ্চয়তা। বিএনপি-জামাত জোট সরকার তথা মেজর হাফিজের দীর্ঘ ২৩ বছরের লালিত সন্ত্রাস বাহিনী কর্তৃক প্রতিটি মুহূর্তই মানুষ আতংক নিয়ে বসবাস করতো। গুম-খুন-ছিনতাই-লুটতরাজ ছিল নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। ওদের আতংকে মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ার সাহস পেত না। পাশের মা-বোন প্রসব বেদনায় ছটফট করে মারা যাচ্ছে তবুও হাসপাতালে যাওয়ার সাহসটুকু তাদের নেই। কারন একটাই, ওরা আওয়ামীলীগ করে। আমি ২০১০ সালে ১৭ এপ্রিল একটি উপনির্বাচনের মধ্যে নিয়ে এ অঞ্চলে নতুন করে পদার্পণ শুরু করি।
ষোড়শ শতাব্দীর কানাডার কোন এক প্রদেশের রাজা হার্ডিংক ক্ষমতার মসনদে বসার পর পূর্বের রাজা উইলিয়াম ভিনটেক এর শাসনামলের উজির থেকে শুরু করে ঝাড়ুদার পর্যন্ত ২৭৭ জন রাজদরবারের লোককে একসাথে রশি দিয়ে পেঁচিয়ে জলন্ত ড্রামের মধ্যে ঢুকিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। হেন কোন অপরাধ নেই যেটা তারা করেননি। অবস্থা বেগতিক দেখে রাজা আত্নহত্যার পথ বেছে নেয় পূর্বেই।
আমরা রাজা হার্ডিংক এর মত হতে পারিনি। পারিনি বলেই আমি নির্বাচিত হবার পর সকলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছি। আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনো প্রতিশোধ নিতে শিখেনি। অপরাধীদের বারবার ক্ষমা করে দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন ক্ষমা মহৎ গুন। ক্ষমার মধ্য দিয়েই মানুষের প্রকৃত ভালবাসা পাওয়া সম্ভব।
রাত ১১.৩০ঘটিকা…..
আমি দ্রুতই বুড়ো মানুষটির নিকটে পৌঁছালাম। খুবই খারাপ লাগলো। কিছু মানুষের জীবন কত দুর্বিসহ এখানে না আসলে অনুমান করতে পারতাম না। ঘরের সবার সাথে কথা বললাম। সকলকে খাবারের প্যাকেট ও কিছু নগদ অর্থ তুলে দিলাম। তারা মহাখুশি। বুড়ো মুরুব্বী বললেন, সাহায্য দূরের কথা, কখনো কোন এমপিকে চোখে দেখিনি। আজ আপনি আমার মনের স্বাধ মিটিয়ে দিলেন। আমি পরম মমতায় বাড়ীর সবাইকে আপন করে নিলাম। এখানেই আমার প্রশান্তি। ওদের চোখের পানিতে নিজেকে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। কষ্টের নয়, এটা ভালবাসার অশ্রু।
জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বির্ণিমানসহ আমার নির্বাচনী এলাকা লালমোহন-তজুমদ্দিনের প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফোঁটানোর লক্ষে আমি নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।