শুক্রবার, ২১ আগস্ট ২০১৫
প্রথম পাতা » ভিডিও গ্যালারী | রাজনীতি | শিরোনাম | সর্বশেষ » আজই সেই ভয়াল ২১ আগস্ট ভিডিও সহ
আজই সেই ভয়াল ২১ আগস্ট ভিডিও সহ
লালমোহন বিডিনিউজ ডেস্ক :আজ শুক্রবার, ২১ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনার সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১১ বছর পূর্তি।
২০০৪ সালের এই তারিখে ভয়াবহ এই গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা।
নানা আয়োজনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ভয়াল ২১ আগস্ট স্মরণ করছে।
বিকাল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত সেদিনের ঘটনার স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা বেদীতে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নিবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই সময় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও অনুরূপ কর্মসূচিতে যোগ দিবেন।
এরপর একই স্থানে প্রধানমন্ত্রী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডসহ সব শাখার নেতাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে দিবসটি স্মরণ ও পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের হামলায় আইভি রহমানসহ নিহত হয়েছিলেন ২৪ জন। আহত হন শতাধিক। তদন্তে বেরিয়ে আসে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামি বাংলাদেশ (হুজি) নৃশংস এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।
হামলাকারীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। তাকে লক্ষ্য করেই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও এক কানের শ্রবণশক্তি হারান তিনি।
সে সময় বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের সরকার ক্ষমতায় ছিল। অভিযোগ রয়েছে, হত্যাযজ্ঞে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের গোপন ইন্ধন ছিল।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুনঃতদন্ত হয়। দাখিল করা হয় সম্পূরক অভিযোগপত্র। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নতুন করে আরো ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
পুরনো ঢাকার বকশী বাজারের বিশেষ আদালতে চলছে এই মামলার বিচারকার্য।
মামলার কার্যক্রমে ধীরগতি নিয়ে খোদ ক্ষমতাসীন দলেও হতাশা বিরাজ করছে। প্রশ্ন উঠেছে, ভয়াবহ এই গ্রেনেড হামলার ঘটনার বিচারের জন্য আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে।
সে দিন নিহত হন যারা
২১ আগস্টের সেই রক্তাক্ত ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। আর এ হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হওয়ার ৫৮ ঘণ্টা পর আইভি রহমান মারা যান।
আহত হওয়ার পর দেড় বছর পর মারা যান ঢাকা সিটির প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ।
হামলায় অন্য নিহতরা হলেন- মোশতাক আহম্মদ সেন্টু, শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), হাসিনা মমতাজ রীনা, রিজিয়া বেগম, রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, লিটন মুন্সী, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন সর্দার, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।
আহতদের মধ্যে ছিলেন- প্রয়াত রাষ্ট্রপতি (দলের তত্কালীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য) জিল্লুর রহমান, আমীর হোসেন আমু, প্রয়াত আবদুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, কাজী জাফরউল্যাহ, ওবায়দুল কাদের, মাহমুদুর রহমান মান্না, আবদুর রহমান, আখতারুজ্জামান, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, সাবের হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট রহমত আলী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌসী, সাহেদা তারেক দীপ্তিসহ পাঁচ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ।
অনেক দিন চিকিত্সা নিয়ে অনেকে কিছুটা সুস্থ হলেও পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে বহু মানুষকে। যারা আহত হয়েছিলেন, তাদের সারাজীবন শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার বহন করে চলতে হচ্ছে।