রবিবার, ২২ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর | বরিশাল | বিভাগের খবর | মুক্তমত | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » স্বামী কর্তৃক নির্যাতন ও মিথ্যে অভিযোগের প্রতিবাদে লালমোহনে গৃহবধূর পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
স্বামী কর্তৃক নির্যাতন ও মিথ্যে অভিযোগের প্রতিবাদে লালমোহনে গৃহবধূর পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
লালমোহন প্রতিনিধি : ভোলার লালমোহনে কথিত স্বামী কর্তৃক নির্যাতন ও মিথ্যে অভিযোগ তোলার প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন তানজিলা নামের এক গৃহবধূ।
রবিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় লালমোহন প্রেসকাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ওই গৃহবধূ।
সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ তানজিলা বলেন, তাকে নির্যাতন ও মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানী করায় স্বামী রাজিবের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। মামলা থেকে জামিন পেয়েই বাবার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় তার স্বামী। সে ঘটনাকে আড়াল করতেই গতকাল (শনিবার) উল্টো তার বিরুদ্ধে এবং স্থানীয় মেম্বারকে জড়িয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে রাজিব।
ওই গৃহবধূ বলেন, মূলতঃ গত ২০১৮ সালের ১৪ জুন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জের ৮নং ওয়ার্ডের হানিফ মিয়ার ছেলে রাজিবের সাথে বিয়ে হয় তার। ওই সময় রাজিব নিজেকে পুলিশের দারোগা হিসেবে পরিচয় দিয়ে জানায় সে ঢাকাতে কর্মরত আছে। বিবাহের সময় রাজিবকে ১ভরি স্বর্ণের চেইন ও ১টি আংটিসহ যাবতীয় উপহার দেয় তার পরিবার। কিছুদিন পর পুলিশের কোয়াটারে রুম বরাদ্দ পেতে টাকার প্রয়োজন বলে শ্বশুর/শাশুরির কাছে দুই লক্ষ টাকা দাবি করে রাজিব। দাবি মেনে দুই লক্ষ টাকা ভুক্তভোগী গৃহবধূর পরিবার। পরে পুলিশ কোয়াটারে রুম নিয়ে উভয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন।
ওই গৃহবধূ আরো বলেন, ঢাকা গিয়ে জানতে পারি রাজিব পুলিশের দারোগা নয়, বরং পুলিশ কোয়াটারের বাবুর্চি। এমন প্রতারণার পরও সবকিছু মেনে নিয়ে তার সাথে সংসার করে সে । এবার ওই রুমের আসবাবপত্র লাগবে বলে পুনরায় টাকা দাবি করে রাজিব। এতে অপারগ হলে শুরু হয় গৃহবধূর উপর অমানবিক অত্যাচার। তুচ্ছ ঘটনায় মারধর নির্যাতনসহ এমন অসংখ্য ঘটনায় চরভূতা ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান টিটব ও ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসান রিমনসহ স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার মিমাংসা ও হয়।
সর্বপরি গত রমজান মাসে আসবাবাপত্র বাবদ টাকার জন্য জোরপূর্বক গৃহবধূর বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় কিন্তু টাকা দিতে না পারায় ওই বাড়িতে এসে তাকে মারধর করে। রাজিবের অন্যায় আচরণের সাথে তার পরিবারও সায় দেয়। পরিবারের কথা মত টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে তার বাবার বাড়ি ফেলে রাখে এবং কোন খরচাদি না দিয়ে তার সাথে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় স্বামী রাজিব।
তাই বাধ্য হয়ে গত ১১ জুলাই ২০১৯ সালে রাজিব, তার মা জাহানারা ও ভাই জিয়াকে আসামী করে ভোলা কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করেন তানজিলা।
ওই মামলায় গত ১৬মার্চ জামিন পেয়ে ওইদিন রাতেই রাজিব, জিয়া ও রাসেলসহ আরো কয়েকজন মিলে গৃহবধূর বাবার ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায় এবং গৃহবধূর মা শাহানুর বেগম ও বড় বোন মুক্তা কে মারধর করে নগদ টাকা ও স¦র্ণালংকার লুটে নেয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তিনি।
তানজিলা আরো বলেন, ঘটনার পরদিন ১৭ মার্চ লালমোহন থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে রাজিবদের প্রভাবে মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। হামলার ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় ঘটনাটিকে আড়াল করতে উল্টো তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে রাজিব।
ওই সম্মেলনে স্থানীয় মেম্বার কামাল মিঝিকে জড়িয়ে মিথ্যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করে তানজিলা বলেন, কারো প্ররোচণায় নয়, বরং স্থানীয় মিমাংসা না পেয়েই আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছেন তিনি।
বসতঘরে হামলা পরবর্তী রাজিবের অব্যাহত হুমকি থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী তানজিলা।