বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ | চরফ্যাশন | জেলার খবর | দক্ষিণ আইচা | বরিশাল | বিভাগের খবর | শিরোনাম | সর্বশেষ » ভোলার শশীভূষণ বাজারে ঘরভিটা জবর দখলকে কেন্দ্র করে হামলা ভাংচুর লুট ॥ রক্তক্ষয়ী সহিংসতার আশংকা
ভোলার শশীভূষণ বাজারে ঘরভিটা জবর দখলকে কেন্দ্র করে হামলা ভাংচুর লুট ॥ রক্তক্ষয়ী সহিংসতার আশংকা
নিজস্ব প্রতিনিধি : ভোলার চরফ্যাসনের শশীভূষণ থানা সদর বাজারে কোটি টাকা দামের ২০ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জমির প্রায় ৭৫ বছরের দখলীয় মালিকদের উচ্ছেদের জন্য হামলা ভাংচুর এবং লুটের ঘটনা ঘটেছে। নুরুল ইসলাম বাচ্চু ওরফে আদম বাচ্চুর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে এই হামলা ও লুটপাট চালায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানা সদরের এই বাজারে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময়ে রক্তক্ষয়ী সহিংসতার আশংকা করা হচ্ছে। যদিও দখল ও উচ্ছেদের এই উতপ্ত পরিস্থিতিতে শশীভূষণ থানা পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছে বলে আক্রান্ত পরিবারগুলোর তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ভাংচুর ও জবর দখলের প্রতিবাদে শশীভূষণ বাজারের ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেছে।
সরেজমিনে জানাগেছে, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মৃত ছিদ্দিক উল্যাহর ছেলে নুরুল ইসলাম বাচ্চু ওরফে আদম বাচ্চুর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছেলামত উল্যাহ মাষ্টার এবং দিল মোহাম্মদ সওদাগরের মালিকানাধীন একটি ট্যানারী আড়ৎ এবং ১টি ক্রোকারিজ সামগ্রীর দোকানে হামলা ভাংচুর ও লুট করে। অস্ত্রের মুখে হুমকী ধামকী ও মারধর করে দোকানের ব্যবসায়ী ও মালিকপক্ষকে তাড়িয়ে মালামাল লুটের পর দোকানটি ভেঙ্গে সেখানে নতুন করে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। থানা সদর বাজারে এমন তান্ডবের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মালিক মৃত ছেলামত উল্যাহ মাষ্টারের ছেলে বাবুল মাষ্টার অভিযোগ করেন, নুরুল ইসলাম বাচ্চু ওরফে আদম বাচ্চু একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে ভাড়ায় এনে হামলা ভাংচুর ও লুট করে বাজারের ভিটা দখল করছে। এখন ভিটার উপর পাকাভবন নির্মাণ কাজ শুরু করছে। আদম বাচ্চুর পালিত সন্ত্রাসী আঃ রাজ্জাক,বেল্লাল ও মোতালেব গংরা শশীভূষণ বাজারে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে। প্রকাশ্য অস্ত্রের মহড়ায় বাজার ব্যবসায়ীরা আতংকে আছে। থানা সদরের এমন অস্ত্রবাজি ও দখলবাজির ঘটনায় পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকায় আছে।
আদম বাচ্চু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর জবর দখলের হুমকীর মুখে থাকা দোকানঘর মালিকরা জানান, এস এ ৪৯০/১ ও ৪৯১/১ দাগের ৮০ শতাংশ জমি ক্রয় করে মালিক হন ছিদ্দিক উল্যাহ, আতফাফ হোসেন, বেলায়েত হোসেন ও আজিজ হাজারী। প্রত্যেকে ২০ শতাংশ করে ক্রয়মূত্রে মালিক। কিন্ত বিপত্তিঘটে ১৯৭৪-১৯৭৫ সনের দিয়ারা জরিপে। এই জরিপে ছিদ্দিক উল্যাহ ও আলতাফ হোসেনের নামে ২০ শতাংশের স্থলে ৩০ শতাংশ করে দিয়ারা রেকর্ড করা হয়। দু’জনের নামে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ জমি রেকর্ড করা হয় এসএ ৫৫৮ দাগে। দিয়ারা রেকর্ড উম্মুক্ত করা হলে বিষয়টি জানাজানি হয় এবং নব্বইর দশকের শেষ দিনে ৫৫৮ দাগের মালিকরা দিয়ারা রেকর্ড সংশোধনের জন্য নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটির রায়ের পর ক্ষতিগ্রস্তরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপীল করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালত নিম্ন আদালতের আদেশ স্থগিত করে মামলাটি পুনঃ বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠান। তারপর ছিদ্দিক উল্যাহ ও আলতাফ হোসেন মামলাটি হাইকোর্টে নিয়ে যান। হাইকোর্ট স্থিতিতাবস্থার আদেশসহ মামলাটি বিচারাধীন আছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম ওরফে আদম বাচ্চু বলেছেন, আমি কারো জমি জবর দখল করিনি। আমার জমি অন্যরা ১৯৭৫ সন থেকে দখল করে আছে। আমি জবর দখলে থাকা জমি উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ প্রসেঙ্গ শশীভূষণ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।