অতিরিক্ত ঘুমে মৃত্যুর ঝুঁকি
লালমোহন বিডিনিউজ ডেস্ক: নিদ্রাহীনতা যে কারো জন্য নানা সমস্যা ডেকে আনতে পারে। ঠিকমতো ঘুম না হলে মুটিয়ে যাওয়া, ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি, রক্তচাপ বৃদ্ধি, হজমে সমস্যা, চেহারায় বয়সের ছাপ পড়াসহ স্বাস্থ্যগত নানা ত্রুটি দেখা দিতে পারে। তাই প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। সচেতন না থাকলে ঘুমের সময়সীমা প্রয়োজনীয়তা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত হয়ে যেতে পারে। আর তখনই সেই ঘুম নিরবে আপনার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুম যেমন ক্ষতিকর তেমনি অতিরিক্তি ঘুমও ক্ষতিকর। গবেষকদের মতে, দিনে ৬ ঘণ্টার কম বা ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুম-দুটোই মানুষের আগাম মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঘুমের কারণে আগাম মৃত্যুর ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়। সেজন্য প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ৮ ঘণ্টার কাছাকাছি ঘুমকে আদর্শ বলে ধরা হয়।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের কার্ডিওভাস্কুলার মেডিসিন ও এপিডেমিলজি বিভাগের অধ্যাপক ফ্রাঙ্কো কাপুচ্চি এ সংক্রান্ত ১৬টি গবেষণা বিশ্লেষণ করেছেন। দশ বছর ধরে চালানো এসব গবেষণায় ১০ লাখের বেশি মানুষের জীবন বৃত্তান্ত অনুসন্ধান করা হয়েছে। অধ্যাপক কাপুচ্চি দিনে ৬ ঘণ্টার কম, ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা এবং ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো এই তিনটি ভাগে লোকদের রেখে গবেষণা চালান।
বিশ্লেষণে কাপুচ্চি দেখেন, ৬ ঘণ্টার কম ঘুমান এমন লোকদের ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো লোকের চেয়ে আগাম মৃত্যুর হার ১২ শতাংশ বেশি। অপরদিকে ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো লোকদের মধ্যে এ হার ৩০ শতাংশ বেশি। আগাম মৃত্যুর এ ঝুঁকি দিনে কয়েকবার অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে মৃত্যু ঝুঁকির প্রায় সমান। শিশু, তরুণ ও প্রাপ্ত বয়স্কদের ঘুমের সময় ও ধরন আলাদা হওয়ায় কাপুচ্চির গবেষণার বিপরীতে নানা মত আছে। তাই ঠিক কতটা সময় ঘুমালে তাকে অতিরিক্ত ঘুম বলা যাবে সে বিষয়েও রয়েছে বিতর্ক। তবে সব বিতর্কের পরও বিশেষজ্ঞরা একটি বিষয়ে একমত, আর তা হলো- ঘুম যতক্ষণই হোক না কেন বয়সের তুলনায় তা বেশি হলে অবশ্যই ক্ষতিকর।