রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » জেলার খবর | তজুমদ্দিন | ভোলা | লালমোহন | শিরোনাম | সর্বশেষ » তজুমদ্দিনে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের কবলে জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত।।লালমোহন বিডিনিউজ
তজুমদ্দিনে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের কবলে জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত।।লালমোহন বিডিনিউজ
লালমোহন বিডিনিউজ,সাদির হোসেন রাহিম, তজুমদ্দিন : দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ মৎস্য আহরণ কেন্দ্র ভোলার তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতে চলছে জাটকা নিধনের মহোৎসব। ইলিশের ভরা মৌসুমে স্থানীয় অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে জোট বেঁধে চাঁদপুর থেকে আসা ভিন্ন ধাচের ইঞ্জিন চালিত নৌকার সাহায্যে চলছে ভবিষ্যতের রুপালী ইলিশ ধ্বংসের মহাযজ্ঞ। আর এ কাজে হরহামেশা ব্যাবহৃত হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। তজুমদ্দিনের মেঘনা উপকুলের সুইজ গেট, চৌমুহনী, বাত্তির খাল, কাটাখালী ও মহিষখালির মাছের আড়ৎগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বড় ইলিশের পাশাপাশি পণ হিসেবে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ। আর একটু লক্ষ্য করলেই চোখে পড়ে বাজ পাখি আঁকা অপেক্ষাকৃত ছোট ছোট নৌকায় বসে জেলেদের কারেন্ট জাল মেরামতের অতি পরিচিত দৃশ্য। প্রতিটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা সুনির্দিষ্ট পতাকা ও প্রতীক নিয়ে পরম নিশ্চিন্তে কারেন্ট জাল দিয়ে মত্ত জাটকা ইলিশ শিকারে। আর এ সবই চলছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। তজুমদ্দিন উপজেলা সদর হতে মাত্র ২০০ মিটার পূর্বে অবস্থিত সুইজ গেট উপকুলে বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান প্রতি ইলিশ মৌসুমে উপজেলা মৎস্য অফিসের সাথে কয়েক লক্ষ টাকার অবৈধ চুক্তির মাধ্যমে গভীর ঘুমে অচেতন রাখা হয় অফিসের কর্তাদের। আর এ টাকা উত্তোলনের জন্য একজন বিশেষ ব্যক্তি প্রতিটি আড়তের দাদন প্রদানকৃত নৌকা থেকে মাছ উত্তোলন করে নিয়মিত উৎকোচ প্রদান করে যাচ্ছে। আর এভাবেই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন অবৈধ কারেন্ট জালের মাধ্যমে জাটকা ধরার কুশীলবরা। প্রশাসনের তরফে মাঝে মধ্যে খুচরা মাছের বাজারে দু’ একটি লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও থামেনি সচেতন মহলের উদ্বেগ। একটি জাটকা ইলিশের ওজন সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম এটি পূর্ণ হলে এক থেকে দেড় কেজি হতো। এ অবস্থায় ১০০০ টন জাটকা ইলিশ বড় হতে দিলে তা থেকে দশ থেকে পনেরো হাজার টন ইলিশ পাওয়া যেত। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় দূর্নীতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অফিসের অসৎ কর্মকর্তারা বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক হলেও এই জাটকার জালে আটকে যাচ্ছে প্রান্তিক জেলেদের দুবেলা দু’মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন। নদীভাঙ্গন, মহাজনের দাদন আর দারিদ্র্যে নিষ্পেষিত জেলেদের ঠিকানা হয় বেড়িবাঁধের উপর। একদিকে উপজেলা মৎস্য অফিসের দূর্নীতি অন্যদিকে কোস্টগার্ড ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় এমনি করেই হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ভাতে বাঙালির পূর্ণ রুপালী ইলিশ সেই সাথে দেশ হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
স্থানীয়দের জোর দাবি, দূর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে এই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট অফিসের অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হউক তবেই রক্ষা পাবে দেশের সম্পদ পূর্ণ রুপালী ইলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তজুমদ্দিন মৎস্য কর্মকর্তা জানান, আমাদের একার পক্ষে এসব অনিয়ম প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যবহার প্রতিরোধে আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মৎস্য অফিসের কেউ যদি এসব অনিয়মের সাথে জড়িত থাকে আমরা প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।